ভারতের স্বাধীনতাকামী বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার শীর্ষ নেতা মেজর রঞ্জন চৌধুরী ও তার এ দেশীয় সহযোগী প্রদীপ মারাককে যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তাদের ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদ- দেয়া হয়। গতকাল বুধবার সকাল সোয়া এগারোটার দিকে কিশোরগঞ্জের স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মুহম্মদ মাহবুব-উল ইসলাম এ রায় দেন।
উলফা নেতা মেজর রঞ্জন চৌধুরী ও প্রদীপ মারাককে আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরকসহ জেলার ভৈরব থেকে আটক করা হয়েছিল। রায় ঘোষনার সময় দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে একই আদালতে আরও দু’টি মামলা বিচারাধীন আছে।
সন্ত্রাস বিরোধী আইনে দু’জনকেই যাবজ্জীবন করাদ- ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারদ- দেয়া হয়। এ ছাড়া অস্ত্র আইনে মেজর রঞ্জন চৌধুরীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ- দেয়া হলেও এ মামলায় প্রদীপ মারাককে খালাস দেয়া হয়।
উল্লেখ, ২০১০ সালের ১৭ জুলাই ভোরে কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলার লীপুর এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক থেকে মেজর রঞ্জন ও তার সহযোগী প্রদীপ মারাককে গ্রেফতার করে র্যাব-৯ এর একটি দল। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে ২টি পিস্তল, ৪ রাউন্ড গুলি, হাত বোমা তৈরীর উপকরণসহ ৪টি বোমা ও অন্যান্য বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় র্যাব-৯ ভৈরব ক্যাম্পের উপ-সহকারী পরিচালক (ডিএডি) মো. করিমুল্লাহ বাদী হয়ে ভৈরব থানায় অস্ত্র, বিস্ফোরক, অবৈধ অনুপ্রবেশ ও সন্ত্রাস দমন আইনে পৃথক ৪টি মামলা দায়ের করেন।
ভারতের আসাম রাজ্যের ধুবড়া জেলার গৌরিপুর থানার মধু শোলমারি গ্রামের মৃত মধুসুধন রায়ের ছেলে উলফা নেতা পরেশ বড়ুয়ার সহযোগী রঞ্জন চৌধুরী ওরফে মেজর রঞ্জন ওরফে প্রদীপ রায় (৪৭) শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার গজনির বাসিন্দা মনিন্দ্র হাগিদ এর মেয়ে রাবিত্র ভ্রমকে বিয়ে করে গোপনে বাংলাদেশে অবস্থান করছিলেন। প্রদীপ মারাক (৫৭) শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতি থানার বাকাকুড়া গ্রামের আরত সাংমার ছেলে।
এ দিকে রায় ঘোষনার পর সাংবাদিকদের কাছে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান. উলফা নেতা মেজর রঞ্জন। তিনি চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘মিথ্যার উপর নির্ভর করে আমাকে সাজা দেয়া হয়েছে। আমার প্রতি অন্যায় করা হয়েছে। এটা কোন অবস্থাতেই সঠিক বিচার হতে পারেনা।’
তবে রায়ে সন্তুষ্ট জানিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর এড. শাহ আজিজুল হক বলেন, উলফা নেতা মেজর রঞ্জন বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাচ্ছিল। এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট।