শনিবার সকালে এই জামায়াত নেতার স্বজনদের বিকালে সাক্ষাতের সময় দিয়েছিল কারা কর্তৃপক্ষ।
বিকাল ৪টার দিকে দুটি মাইক্রোবাসে করে এই জামায়াত নেতার স্ত্রী-সন্তানসহ স্বজনরা কারাফটকে পৌঁছায়। মোট ২৩ জন এলেও কারাগারে ঢুকতে দেওয়া হয় ২০ জনকে।
বিকাল ৫টায় কামারুজ্জামানের স্বজনরা কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন।
কারাগারের বাইরে তোড়জোড় এই রাতেই এই যুদ্ধাপরাধীর দণ্ড কার্যকরের ইঙ্গিত দিচ্ছে। তা হলে এটাই ছিল কামারুজ্জামানের সঙ্গে তার স্বজনদের শেষ সাক্ষাৎ।
মৃত্যুদণ্ডের রায় পুনর্বিবেচনায় কামারুজ্জামানের করা আবেদন আপিল বিভাগে খারিজ হওয়ার পাঁচ দিনের মাথায় শুক্রবার তার দণ্ড কার্যকরের প্রস্তুতি নিতে দেখা গেলেও পরে তা হয়নি।
রিভিউ আবেদন খারিজের পর সোমবার বিকালে কামারুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করে এসেছিলেন তার স্বজনরা। সেদিন দেখা করে বেরিয়ে তার ছেলে হাসান ইকবাল সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তা শেষ সাক্ষাৎ বলে তাদের মনে হয়নি।
সেদিন কামারুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন স্ত্রী নুরুন্নাহার; ছেলে ইকবাল হাসান, হাসান ইমাম ও আহমেদ হাসান; মেয়ে আতিয়া নূর; ভাই কামরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী আফিয়া নূর; ভাতিজা আরমান, ভাতিজি আরিফা ও মলি; শ্যালক রুম্মান; ভাগ্নি রোকসানা জেবিন, জিতু, মুন ও মনি এবং বিউটি নামে এক আত্মীয়া।
তাদের সঙ্গে শনিবার আরও সাতজন যুক্ত হয়েছেন।
মৃত্যুদণ্ডের রায় পুনর্বিবেচনায় (রিভিউ) কামারুজ্জামানের আবেদন সর্বোচ্চ আদালতে খারিজ হওয়ার পর তার কাছে শুধু রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার সুযোগই ছিল।
বৃহস্পতিবার আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলার পর কামারুজ্জামান সময় নিয়ে তার সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে জানিয়েছিলেন। এরপর শুক্রবার তার সিদ্ধান্ত জানতে দুজন ম্যাজিস্ট্রেট যান কারাগারে।
শনিবার বিকালে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সাংবাদিকদের বলেন, রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা না চাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কামারুজ্জামান।
একাত্তরে হত্যা, গণহত্যা ও নির্যাতনের দায়ে ২০১৩ সালের ৯ মে ময়মনসিংহের আলবদর কমান্ডার কামারুজ্জামানকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে সেখানেও তার সর্বোচ্চ শাস্তি বহাল থাকে।
সর্বোচ্চ আদালতের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) জন্য কামারুজ্জামানের আবেদন গত সোমবার খারিজ করে দেয় প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ।
এরপর বুধবার দুপুরে রায়ে বিচারপতিদের সইয়ের পর তা কারাগারে পাঠানো হয়। কারা কর্তৃপক্ষ ওই রায় পড়ে শোনায় ফাঁসির আসামি কামারুজ্জামানকে। শুরু হয় দণ্ড কার্যকরের আগে আসামির প্রাণভিক্ষার আনুষ্ঠানিকতা।
এর আগে যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা কাদের মোল্লা প্রাণভিক্ষার সুযোগ না নেওয়ায় ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর রিভিউ খারিজের দিনই ফাঁসি কার্যকর করা হয়।