জেলার বিরামপুরে ভৈরব রাজা প্রতিষ্ঠিত ৩শ ১০ বছরের পুরনো ঐতিহাসিক চৈত্র সংক্রান্তির মেলাটি এখনও টিকে আছে। প্রতিবছর বিভিন্ন জেলার ক্রেতা বিক্রেতা ও ভক্ত দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে এ প্রাচীন মেলা। এবারও চৈত্র সংক্রান্তিকে উপলক্ষ্য করে মেলা কমিটি সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন।
বিরামপুর এলাকার তৎকালীন রাজা ভৈরব চন্দ্র বাংলা ১১১১ সালে মেলাটি চালু করেন। বর্তমান বিরামপুর শহরের ২ কি. মি. দক্ষিণে বিরামপুর-গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়কের নিকটবর্তী মির্জাপুর এলাকায় রাজা ভৈরব চন্দ্রের জামলেশ্বর কাচারী ছিল। সেই কাচারীতে এলাকার প্রজাদের খাজনা আদায় করা হতো। রাজা তার প্রজাদের সুখ শান্তির লক্ষ্যে কাচারীর ৫০ ফুট উঁচু টিলার উপর ১১১১ বাংলা সনে শিবমন্দির নির্মাণ করেন। সেখানে ৫ ফুট দীর্ঘ শিবলিঙ্গ প্রতিস্থাপন করে বাংলা বছরের শেষ দিন অর্থাৎ চৈত্র সংক্রান্তির দিনে পূজার প্রচলন করেন। প্রজাদের আগমনে পূজার দিনটি মেলায় রূপান্তর ঘটে এবং কালক্রমে এক দিনের মেলাটির স্থায়িত্ব হয় সপ্তাহব্যাপী।
সেই থেকে প্রতি বছর চৈত্র সংক্রান্তির দিনে হিন্দু ও সাঁওতাল সম্প্রদায়ের লোকজনের পূজা অর্চনার পাশাপাশি এখানে বিশাল মেলা বসে। মেলাটি কাঠের আসবাবপত্র, কৃষি ও গৃহস্থালী দ্রব্যাদি, মিষ্টি আলু, তুলা, হলুদ, রকমারী মিষ্টি ও মৌসুমী ফলের জন্য খ্যাতি লাভ করে। মেলাটিতে বিভিন্ন জেলার ক্রেতা বিক্রেতা ও পূজারীদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে।
মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক শিবেশ চন্দ্র কুণ্ডু জানান, মেলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিরামপুর থানা পুলিশ, আনসার ভিডিপি ও মেলা কমিটির স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতা ও দর্শনার্থীদের পূর্ণ নিরাপত্তা দেয়ার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে মেলাটি সম্পন্ন করা হয়।
তিনি আরও জানান, মন্দিরের নামে অনেক জমি থাকলেও প্রভাবশালীরা বেশ কিছু জমি জবর দখল করে নিয়েছে। মন্দিরটির অবস্থান মনোরম পরিবেশে হওয়ায় এর সীমানা প্রাচীর ও সার্বক্ষণিক পাহারার ব্যবস্থা করা হলে এটি একটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে জনপ্রিয়তা পাবে। আর এই কেন্দ্র চালু হলে এলাকার মানুষ নতুন করে ব্যবসা বাণিজ্যের সুযোগ পাবে এবং তাদের জীবন মানের সমৃদ্ধি ঘটবে। তিনি এ ব্যাপারে সরকারের দৃষ্টি কামনা করেছেন।