নতুন এক গবেষণায় বলা হয়েছে, যাদের বাবা অথবা মা তার সঙ্গী-সঙ্গিনীর সঙ্গে প্রতারণা করেছেন, সম্পর্কের ক্ষেত্রে সেই সন্তানদের মাঝেও প্রতারণার প্রবণতা কাজ করে। শুধু তাই না, বাবা-মায়ের জীবনে এমন ঘটনা ঘটে থাকলে, সন্তানের মাঝেও প্রতারক হয়ে ওঠার সম্ভাবনা দ্বিগুণ হয়।

প্রধান গবেষক ড. ডানা ওয়েইসার জানান,

সম্পর্কের ক্ষেত্রে অবিশ্বস্ত বাবা-মায়ের প্রভাব সন্তানের ওপর দ্বিগুণ আকারে ভর করে। তাই সন্তানও তার প্রেমিক-প্রেমিকার সঙ্গে প্রতারণার করতে পারেন।

তাহলে প্রশ্ন হলো, প্রেমিক বা প্রেমিকার বাবা-মা যদি প্রতারণা করেই থাকেন, তার মানে কি ওই প্রেমিক বা প্রেমিকাও প্রতারক হবে?

গবেষক জানান, প্রাথমিক অবস্থায় বিষয়টিকে অর্থহীন বলেই মনে হবে। কিন্তু কয়েক দফা গবেষণার পর প্রতারণার ক্ষেত্রে পারিবারিক কারণকে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। বাবা অথবা মা তার জীবনে কারো সঙ্গে প্রতারণা করে থাকলে, তার সন্তানের মধ্যেও সঙ্গী কিংবা সঙ্গিনীর সাথে প্রতারণা করার সম্ভাবনা দ্বিগুণ দেখা গেছে।

তবে সান্ত্বনাও দিয়েছেন গবেষক। প্রেমিক-প্রেমিকার বাবা-মা প্রতারণা করেছেন মানেই যে তাদের সন্তানও প্রতারণা করবেন, তা মোটেও নয়। কারণ এর মধ্যে সম্পর্কে তুষ্টি, প্রতিশ্রুতি, নিয়ন্ত্রণ এবং ব্যক্তিত্বের মিল বা সংঘাত ইত্যাদি বিষয় জড়িত।

সন্তানের মধ্যে প্রতারণার প্রবণতা কিভাবে আসতে পারে? ড. ডানা জানান, আসলে সন্তানের দৃষ্টিতে মনে হয়, সম্পর্কের বিষয়ে বাবা-মায়ের দৃষ্টিভঙ্গি এটাই ছিল। বাবা-মায়ের সঠিক সিদ্ধান্ত হিসাবে তা ধরা দিতে পারে সন্তানের কাছে। আর তা সন্তানের কাছে শিক্ষণীয় বলে মনে হতে পারে। তাই সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাবা-মা যে পথে এগিয়েছেন, সন্তানের সে পথ বেছে নেওয়াটাই তার কাছে স্বাভাবিক এবং সঠিক বলে মনে হতে পারে।

তাহলে বাবা-মায়ের জীবনে এমন ঘটনা থাকলে কি আপনিও প্রতারণার পথ বেছে নেবেন? এ প্রশ্নের জবাবে গবেষক জানান, বাবা-মা হয়তো অতীতে তার সঙ্গী-সঙ্গিনীর প্রতি প্রতিশ্রুতির বরখেলাপ করেছিলেন। আপনি নিজের সম্পর্কের সঙ্গে হয়তো তাদের পরিস্থিতির তুলনা নাও করতে পারেন। টানাপড়েন যাই হোক, দুটো ঘটনাকে একই রকম বলে মনে হতে পারে। তাই পিতা-মাতাকে অনুসরণ করার বিষয়টি সন্তানের দৃষ্টিভঙ্গির ওপর নির্ভর করে। এমন বহু সন্তান আছেন যারা নিজের সম্পর্কের প্রতি দারুণভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু তার বাবা-মায়ের প্রতারণার ইতিহাস রয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পেতে সম্পর্কবিষয়ক বিশেষজ্ঞের সঙ্গে আলাপ করে নেওয়ার বিকল্প নেই।

কাজেই আপনার প্রেমিক বা প্রেমিকার বাবা-মায়ের প্রতারণার ঘটনা যদি জেনে থাকেন এবং আপনার মনেও সংশয় সৃষ্টি হয়, সে ক্ষেত্রে সঙ্গী-সঙ্গিনীর সাথে খোলামেলা কথা বলুন। অভিভাবকদের যন্ত্রণাদায়ক অতীত নিয়ে সহজবোধ্য আলোচনা হতে পারে। এতে নিজের এবং প্রেমিক বা প্রেমিকার দৃষ্টিভঙ্গি পরিষ্কার হয়ে উঠবে। মনে কোনো সন্দেহ থাকলে তা তুলে ধরুন। একমাত্র আলোচনাই সমাধান দিতে পারে।
সূত্র : ফক্স নিউজ