muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

আন্তর্জাতিক

সন্ত্রাস ও উগ্রবাদের বিরুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বে নতুন সামরিক জোটে বাংলাদেশ

Saudi+security+force-=tank

সন্ত্রাস ও উগ্রবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সৌদি আরবের নেতৃত্বে ৩৪ মুসলিম দেশের নতুন একটি সামরিক জোটে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুলআজিজ এই জোট গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন এবং প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে তাতে যোগ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর কাছে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাঠিয়েছেন সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদেল বিন আহমেদ আল-জুবাইর।

“সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস উগ্রবাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির আলোকে অন্যান্য মুসলিম দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশ এই জোটে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে,” বলা হয়েছে বিবৃতিতে।

সৌদি প্রেস এজেন্সিতে প্রকাশিত এক যৌথ বিবৃতিতে এই জোটকে বলা হয়েছে ‘ইসলামিক মিলিটারি অ্যালায়েন্স টু ফাইট টেরোরিজম’, যার ‘যৌথ অপারেশন সেন্টার’ হবে রিয়াদে।

বিবৃতিতে বলা হয়, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা, প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ এবং কৌশল প্রণয়নের কাজ ওই অপারেশন সেন্টার থেকেই হবে। জাতিসংঘ সনদ, ওআইসি সনদ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সনদ ও চুক্তি অনুসরণ করেই পরিচালিত হবে এর কার্যক্রম।

“নিরপরাধ মানুষকে সন্ত্রস্ত করার এবং বিশ্বে মৃত্যু ও দুর্নীতির রাজত্ব কায়েম করার চেষ্টা যারাই করবে, তাদের নাম বা মতবাদ যাই হোক না কেন, সেই অশুভ সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বা সংগঠনের বিরুদ্ধে লড়াই করে দেশ রক্ষায় নিয়োজিত থাকবে এই জোট।”

সৌদি আরব ও বাংলাদেশ ছাড়াও বাহরাইন, বেনিন, শাদ, কোমোরোস, আইভরি কোস্ট, জিবুতি, মিশর, গ্যাবন, গায়না, জর্ডান, কুয়েত, লেবানন, লিবিয়া, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, মালি, মরক্কো, মৌরিতানিয়া, নাইজার, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, ফিলিস্তিন, কাতার, সেনেগাল, সিয়েরা লিওন, সোমালিয়া, সুদান, টোগো, তিউনিসিয়া, তুরস্ক, আরব আমিরাত ও ইয়েমেন থাকছে এই জোটে।

ইন্দোনেশিয়াসহ আরও দশটির বেশি মুসলিম দেশ এই জোটকে সমর্থন জানিয়েছে বলেও সৌদি প্রেস এজেন্সি জানিয়েছে। তবে ওই তালিকায় আফগানিস্তান, ইরাক, ইরান বা সিরিয়ার মতো মুসলিম দেশ নেই।

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এই জোট গঠনের বিষয়ে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন সৌদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ক্রাউন প্রিন্স মোহম্মদ বিন সালমান।

তিনি বলেন, তার দেশের নেতৃত্বে নতুন এই সামরিক জোট ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া, মিশর ও আফগানিস্তানে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ‘সমন্বিত’ উদ্যোগ নেবে।

নতুন এই জোট আইএসের বিরুদ্ধেই সক্রিয় হবে কিনা জানতে চাইলে মোহম্মদ বিন সালমান বলেন, যে সন্ত্রাসী সংগঠনই হুমকি সৃষ্টি করবে, তাদের বিরুদ্ধেই এ জোট পদক্ষেপ নেবে।

সৌদি আরব ও প্রতিবেশী কয়েকটি আরব দেশ উপসাগরীয় অঞ্চলের আরেক প্রতিবেশী ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের সঙ্গে নয়মাস ধরে যুদ্ধে জড়িয়ে আছে। ইরাক ও সিরিয়াভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানে আরও সহায়তা দেওয়ার জন্যও উপসাগরীয় আরব দেশগুলোকে চাপ দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।

বাংলাদেশ সরকার সন্ত্রাসবাদ নিয়ে ‘জিরো টলারেন্সের’ কথা বরাবরই বলে আসছে। সেই সঙ্গে এটাও বলছে, বাংলাদেশের মাটি কোনও দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত হতে দেবে না।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন আইএসবিরোধী সামরিক অভিযানে বাংলাদেশ যোগ দেবে কি না- এমন প্রশ্নে গতবছর ‘না’ বলেছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী।

তিনি বলেছিলেন, ওই অঞ্চলে মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে জাতিসংঘের নেতৃত্বে কোনও কর্মসূচি গ্রহণ করা হলে তাতে অংশ নিতে বাংলাদেশের আপত্তি নেই।

Tags: