muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

জাতীয়

স্মার্ট কার্ড জাতীয় পরিচয়পত্রে যুক্ত হচ্ছে ডিজিটাল স্বাক্ষর

মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডটকমঃ রাষ্ট্রের হাতে সংরক্ষিত নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্রে যুক্ত হচ্ছে ডিজিটাল স্বাক্ষর। তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে এ ব্যবস্থা নিচ্ছে নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ।

এ বিষয়টি নিশ্চিত করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীন কন্ট্রোলার অব সার্টিফাইং অথরিটিজ (সিসিএ) এর উপ নিয়ন্ত্রক আবুল খায়ের মো. আক্কাস আলী জানান, স্মার্ট কার্ডে ডিজিটাল স্বাক্ষর যুক্ত করার গুরুত্ব তুলে ধরে তারা বুধবার ইসি সচিবালয়ে একটি চিঠি দিয়েছেন। শিগগিরই এ বিষয়ে চুক্তি হবে বলে তারা আশা করছেন।

আবুল খায়ের বলেন, ডিজিটাল স্বাক্ষর প্রচলিত কোনো স্বাক্ষর নয়। নাগরিকের এনআইডির সব তথ্যের সঙ্গে একটি আইকন যুক্ত করা হবে, যা নির্ধারিত সফটওয়্যারে ডিজিটাল সিগনেচার হিসেবে কাজ করবে। তিনি আরো বলেন, এতে ‘পাবলিক কী’ ও ‘প্রাইভেট কী’ নামের দুটি অংশ থাকবে। ফলে জাতীয় পরিচয়পত্রধারী ব্যক্তি ছাড়া কেউ কোনো তথ্য পরিবর্তন করতে পারবে না। আবার কোনো প্রতিষ্ঠান নিয়ম মেনে সেসব তথ্যের একটি অংশ ব্যবহার করার সুযোগ পাবে। অনলাইন সেবায় তথ্যের নিরাপত্তার জন্য এই ডিজিটাল সিগনেচার খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমরা মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব পেয়েছি। স্মার্ট কার্ডে ডিজিটাল স্বাক্ষর চালু করতে অসুবিধা হবে না। আমরা এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।

তিনি জানান, বিদ্যমান এনআইডিতে নাগরিকদের আঙ্গুলের ছাপ, স্বাক্ষরসহ নানা ধরনের তথ্য রয়েছে, যা বিভিন্ন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের মিলিয়ে দেখার প্রয়োজন হয়। ডিজিটাল স্বাক্ষর চালু হলেও তারা এসব তথ্য ব্যবহার করতে পারবে। তবে কার্ডধারী নাগরিক ছাড়া আর কেউ তা পরিবর্তন করতে পারবেন না। যেসব স্মার্টকার্ড ইতোমধ্যে তৈরি হয়ে গেছে, সেগুলোতে ডিজিটাল স্বাক্ষর যুক্ত করতে সমস্যা হবে না বলেও জানান তিনি।

ইসি সচিব বলেন, ডিজিটাল স্বাক্ষর একটি কারিগরি বিষয়। এর মাধ্যমে তথ্যের সঠিকতা যেমন নিশ্চিত হবে, তেমনি তথ্যের গোপনীয়তাও রক্ষা করা যাবে। আমরা শিগগিরই স্মার্টকার্ডে তা যুক্ত করতে উদ্যোগ নেব। অবশ্য কবে নাগাদ নাগরিকরা এই স্মার্ট কার্ড হাতে পাবেন তা জানাতে পারেননি তিনি।

নির্বাচন কমিশনে পাঠানো তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের চিঠিতে বলা হয়, ইলেকট্রনিক স্বাক্ষর সার্টিফিকেট প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রক (সিসিএ) স্মার্টকার্ডে ‘ডিজিটাল সিগনেচার’ অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে।

“ভবিষ্যতে নতুন করে স্মার্টকার্ডে ডিজিটাল স্বাক্ষর সার্টিফিকেট অন্তর্ভুক্ত করতে গেলে শুধু রাষ্ট্রের খরচই বাড়বে না, অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে জনগণকে বিভিন্ন ধরনের হয়রানির মুখে পড়তে হতে পারে। ডিজিটাল স্বাক্ষরবিহীন স্মার্টকার্ড ব্যবহারের ফলে অতি গোপনীয় ও স্পর্শকাতর রাষ্ট্রীয় বা ব্যক্তিগত তথ্য চুরি হয়ে যেতে পারে।”

২০০৬ সালের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে ইলেকট্রনিক স্বাক্ষর ও ইলেকট্রনিক স্বাক্ষর সার্টিফিকেট বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। প্রতিষ্ঠা করা হয় কন্ট্রোলার অব সার্টিফাইং অথরিটিজ (সিসিএ) এর কার্যালয়। ডিজিটাল স্বাক্ষরের বিষয়ে আবেদন করা হলে তারাই তা তৈরি করে দেবে।

প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ভোটার তালিকাভুক্ত প্রায় ১০ কোটি নাগরিকের তথ্য রয়েছে এনআইডি উইংয়ের ডেটাবেইজে। এদের মধ্যে ৯ কোটি ভোটারের হাতে লেমিনেটেড জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে। আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহেন্সিং অ্যাকসেস টু সার্ভিসেস (আইডিইএ) প্রকল্পের আওতায় সরকার সব নাগরিকের হাতে স্মার্টকার্ড তুলে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।

Tags: