বিমানবন্দরের গিয়ে আরো দেখা যায়, ভিতরে এপিবিএন’র সদস্যরা কাজ করছেন। কোনো যান সন্দেহজনক মনে হলেই তল্লাশি চালানো হচ্ছে। ভিতরে দর্শনার্থীদের প্রবেশ সংরক্ষিত করা হয়েছে। শুধুমান কোনো ব্যক্তি দেশে ফিরলে অথবা দেশের বাইরে গেলে তাদের আত্নীয় স্বজনদের প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বিমানবন্দরের অপেক্ষাগারে প্রবেশের জন্য যে টিকেট দেওয়া হতো তাও দেওয়া বন্ধ রয়েছে।
বিমানবন্দরে প্রবেশ পথে দায়িত্ব পালন করছিলেন পুলিশ সার্জেন্ট নজরুল ইসলাম। তিনি পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ১ জুলাই থেকেই বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। বাড়তি নিরাপত্তা এখানো অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া ঈদে ছুটির কারণে পুলিশ সদস্যদের সংখ্যা কম থাকলেও ছুটির পর অনেকে্ কাজে যোগদান করেছেন। এ জন্য ঈদের সময়ের চেয়ে এখন বেশি পুলিশ সদস্য কাজ করছেন।
বিমানবন্দরে দর্শনার্থীদের প্রবেশ সংরক্ষিত এবং নিরাপত্তা কতদিন অব্যাহত থাকবে? এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, উপরের নির্দেশ না আসা পর্যন্ত আমাদের সব ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
বিমানবন্দরের প্রবেশ পথ দিয়ে সামনে গিয়ে দেখা যায় নিরাপত্তার জন্য কাজ করছেন আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্য মো. খলিলুল রহমানসহ আরো দুইজন নারী সদস্য।
খলিলুল বলেন, নিরাপত্তার বিষয়ে আমরা সর্বদা সজাগ রয়েছি। গুলশানে জঙ্গি হামলার পর থেকে আমাদের উপরে যথেষ্ট চাপ রয়েছে। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা যেন নিশ্চিত করা যায় সে লক্ষেই আমরা কাজ করছি।
এপিবিএন’র ওই সদস্যের সঙ্গে কথা বলার পর যাওয়া হয় বিমানবন্দরের টার্মিনাল-২ এর সামনে। সেখানে কথা হয় নাহিদুল ইসলামের সঙ্গে।তারা টাঙ্গাইল থেকে বিমানবন্দরে এসেছেন। নাহিদের বাবা সৌদিআরব থাকেন। মা আমেনা বেগম ও ছোট ভাই শিহাবুল ইসলামকে সঙ্গে তারা বাবাকে বিদায় জানতে এসেছেন।
তারা জানায়, বিমানবন্দরে প্রবেশের সময় তাদের ব্যাগ তল্লাশি করা হয়েছে। এছাড়া অপক্ষোগারে প্রবেশের জন্য কোনো টিকেট দেওয়া হচ্ছে না। এজন্য তারা বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন। বাবার ফ্লাইট বিকেল ৫টায় বলেও জানায় নাহিদ।
নাহিদের মায়ের অভিযোগ, ভেতরে না ঢুকতে দেওয়ায় দুই ছেলেকে নিয়ে বড় বিপাকে পড়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, পুলিশের কাজই হচ্ছে মানুষকে হয়রানি করা। তারা চোর ধরতে পারে না। ভালো মানুষকে চোর বানায়।
একই টার্মিনালে কথা হয়, ওমর সানি ও মাসুদ রানার সঙ্গে। নিরাপত্তার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতেই তারা বলেন, বিমানবন্দরের প্রবেশ পথে তাদের সঙ্গে থাকা ব্যাগ তল্লাশি করা হয়েছে।এছাড়া কোথায় যাবেন, কেন যাবেন ইত্যাদি প্রশ্নও জিজ্ঞাসা করা হয়েছে।
তারা বলেন, দেশের অবস্থা ভালো না। এ সময় এ ধরনের নিরাপত্তা থাকাটাই স্বাভাবিক। তল্লাশির সময় বিরক্ত মনে হলেও পরে মনে হলো ভালোর জন্যই তো করা হচ্ছে।
এদিকে মঙ্গলবার বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বিষয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সঙ্গে বৈঠকের পর বেবিচক সদর দপ্তরে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন নিরাপত্তার বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছেন। সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের সব বিমানবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে তিনি বৈঠকে অবগত করেন।
রাশেদ খান মেনন বলেন, নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। তবে এটা রেড অ্যালার্ট নয়।
গত ১ জুলাই গুলশানে জঙ্গি হামলায় মোট ২০ জন নিহত হন। যাদের মধ্যে ১৭ জন বিদেশি নাগরিক।
মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডটকম/ ১২- ০৭-২০১৬ ইং/মো:হাছিব