মোঃ আশরাফ আলী, স্টাফ রিপোর্টারঃ
কিশোরগঞ্জ এর কুলিয়ারচর উপজেলার গোবরিয়া আবদুল্লাহপুর ইউনিয়নকে বাল্যবিবাহ মুক্ত ইউনিয়ন হিসেবে ঘোষণা দিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তরফদার মোঃ আক্তার জামীল। আজ ৭ আগস্ট ২০১৬ তারিখ রবিবার তিনি লক্ষ্মীপুর দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিশাল এক জনসভায় গোবরিয়া আবদুল্লাহপুর ইউনিয়নকে বাল্যবিবাহ মুক্ত ইউনিয়ন হিসেবে ঘোষণা দেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, মানব উন্নয়নসহ বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশের অর্জন ঈর্ষণীয়। ধান উৎপাদনে আমরা বিশ্বে তৃতীয়, মৎস্যে চতুর্থ, পাট উৎপাদনে দ্বিতীয়, আলু ও আম উৎপাদনে সপ্তম, তৈরি পোষাক শিল্পে দ্বিতীয়। এছাড়া দেশে তৈরি ঔষধ ১৬০ টির বেশী দেশে রপ্তানী হচ্ছে। শান্তি রক্ষা মিশনে আমরা নেতৃত্ব দিচ্ছি। পরিবেশ ও দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। শিক্ষার উন্নয়নের জন্য নেয়া হয়েছে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। এ জন্য বিশ্বে আমরা সমাদৃত হয়েছি। নানা পুরস্কারে অভিষিক্ত হয়েছেন আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু দু:খজনক হলেও সত্য বাল্যবিবাহ এর ক্ষেত্রে আমরা এখনও পিছিয়ে রয়েছি। সেখানে আমাদের অবস্থান চতুর্থ।
আমাদের আগে আছে নাইজার, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র ও চাঁদ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আগামী ২০২১ সালের মধ্যে ১৫ বছরের নীচে বাল্য বিবাহ শূণ্যের কোটায় এবং ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে বাল্যবিবাহ মুক্ত ঘোষণা করার যে স্বপ্ন দেখেছেন সেলক্ষ্যে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সার্বিক নির্দেশনায় আমরা কাজ করে চলেছি। ইনশাল্লাহ প্রস্তাবিত সময়সীমার মধ্যে আমরা কিশোরগঞ্জ জেলা সে লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হবো। ইতোমধ্যে কুলিয়ারচরের ২টি ইউনিয়ন জেলা প্রশাসক মহোদয় বাল্যবিবাহমুক্ত ঘোষণা করেছেন। শীঘ্রই অন্য ইউনিয়নও বাল্যবিবাহমুক্ত করা হবে। এজন্য তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কুলিয়ারচর উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ড. উর্মি বিনতে সালাম। সভায় বক্তব্য রাখেন কুলিয়ারচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিল্লাত, গোবরিয়া আবদুল্লাহপুর ইউনিয়ন এর চেয়ারম্যান আব্বাস উদ্দিন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক, বিশিষ্ট সমাজ সেবক মেজর (অব:) নুরুল ইসলাম ও শফিকুল ইসলাম, কুলিয়ারচর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ইউনিট এর ডেপুটি কমান্ডার, লক্ষ্মীপুর দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক, বেসরকারী সংস্থা পপি এর উপজেলা সমন্বয়কারী সহ উপস্থিত সুধীবৃন্দ। এছাড়া, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গ, বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা রেড কার্ড প্রদর্শন করেন। তাদের হাতে রেড কার্ড তুলে দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ড. উর্মি বিনতে সালাম। বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে উপস্থিত সকলকে শপথ পাঠ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তরফদার মোঃ আক্তার জামীল।
অনুষ্ঠান শেষে শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় বাল্যবিবাহ বিরোধী এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডটকম/০৭-০৮-২০১৬ইং/ অর্থ