muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

কিশোরগঞ্জ সদর

ঘুষ না দেওয়ায় একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা’কে থানা কমান্ডার কতৃক রাজাকার বানানোর অপচেষ্টা.

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

মোঃ রফিক মিয়া, পিতা – মৃত আব্দুর রহমান, মাতা – মৃত আছিয়া আক্তার। মুক্তিবার্তা নং – ০১১৭০১০৯৬। তিনি ০৩ মে ১৯৪৬ তারিখে ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার মাটিকাটা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরুতেই যুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ১১ নং সেক্টরে সেক্টর কমান্ডার কর্নেল তাহের এর অধীনে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

মে মাসের ১৫ তারিখে তিনি ২১ দিন মহেশখালীতে ট্রেনিং শেষে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ৯ মাসের যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ডিসেম্বরের শেষ দিকে তিনি নান্দাইল ফিরে আসেন। তিনি ১৯৯৬ সন থেকে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পেয়ে আসছেন। ২ মেয়ে ৬ ছেলের জনক মোঃ রফিক মিয়া মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে তিনি কৃষিকাজ করতেন। যুদ্ধ শেষে দেশে ফেরার পর তিনি কৃষিকাজে মনোনিবেশ করেন। বর্তমানে কিশোরগঞ্জ জেলার রশিদাবাদ গ্রামে অবস্থানকারী মোঃ রফিক মিয়া মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডটকমকে বলেন দেশের জন্য যুদ্ধ করলেও তিনি তার প্রাপ্য সম্মানী পাচ্ছেন না। বিশেষ করে ১৯৯৬ সালের পূর্বে ভাতা পাওয়ার আগে তিনি সরকারী বা বেসরকারী পর্যায়ে কোনরূপ আর্থিক সাহায্য পাননি।

৮ ছেলেমেয়ের মধ্যে ১ ছেলে স্বর্ণকারের দোকানে কাজ করে, ২ ছেলে রাজমিস্ত্রি হিসেবে কাজ করছে অন্যরা সবাই বিভিন্ন স্কুলে পড়ছে। বিবাহযোগ্য একটি মেয়ে থাকা সত্ত্বেও টাকার অভাবে তিনি তাকে পাত্রস্থ করতে পারছেন না। একসময়ের সাহসী যোদ্ধা, দেশের জন্য জীবন উৎসর্গকারী একজন ব্যক্তি যদি এমন দুরবস্থার কবলে পতিত হন তবে জাতি হিসেবে আমরা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে কি জবাব দেব ?

একজন সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধার এহেন করুন অবস্থা কাম্য হতে পারে না।

অবশেষে তিনি গ্রামের মানুষের কাছে ধার-দেনা করে মেয়ের বিয়ে সম্পন্ন করেন। কিন্তু পরবর্তীতে এই ঋণ শোধের জন্য মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সোনালী ব্যাংক কিশোরগঞ্জ শাখায় ২ লক্ষ টাকা ঋণের জন্য আবেদন করলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাকে থানা কমান্ডার এবং জেলা কমান্ডারের লিখিত পরিচয় পত্র নিয়ে আসতে বলেন।

জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার জনাব আসাদুল্লাহ প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা মোঃ রফিক মিয়া কে সনদপত্র দিলেও সদর থানা কমান্ডার জনাব মতিউর রহমান শুধুমাত্র একটি পরিচয় পত্রের জন্য তার সহকারী কে দিয়ে ২০০০০ টাকা ঘুষ দাবি করেন।

কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা মোঃ রফিক মিয়া ঘুষ দিতে আপত্তি জানালে সদর থানা কমান্ডার তারই সূত্র ধরে মাসিক সভায় প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা মোঃ রফিক মিয়া কে রাজাকার বলে লিখিত ভাবে অভিযোগ করেন এবং তার সম্মানী ভাতা বন্ধের সুপারিশ করেন।

dsc01035

মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠের নিজস্ব প্রতিবেদক মোঃ রফিক মিয়ার গ্রামের বাড়ি মাটিকাটায় সত্যতা যাচাইয়ের জন্য গেলে, এলাকাবাসীর কাছে জানা যায়, মাটিকাটা সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন মোঃ রফিক মিয়া। আরও জানা যায়, এই গ্রামে শুধু ২ জন মুক্তিযোদ্ধা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহন করেন এর মধ্যে একজন মোঃ রফিক মিয়া এবং অপরজন গিয়াসউদ্দিন।

dsc01018

এই ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার জনাব আসাদুল্লাহ ‘মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ’কে বলেন, আমার জানা মতে মোঃ রফিক মিয়া আমার পূর্বে থেকেই মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদস্য এবং প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তিনি ১৯৯৬ সাল থেকে নিয়মিত ভাতা পাচ্ছেন। মাসিক সভার রিপোর্ট আমার কাছে আসলে আমি মোঃ রফিক মিয়ার সমস্ত কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে দেখি তার উপর আনিত সকল অভিযোগ বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন। স্বাধীনতার ৪৩ বছর পর এসকল কাজে কারা মদত দিচ্ছে তাদের খুজে বের করে আইনের আওতায় আনা দরকার।

উল্লেখ্য, গত ২৯-০৫-২০১৬ইং তারিখে মুক্তিযোদ্ধা মোঃ রফিক মিয়ার যুদ্ধদিনের গল্প নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি পড়তে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ

http://muktijoddharkantho.com/2016/05/29/%E0%A6%AC%E0%A7%80%E0%A6%B0-%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A7%8B%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A7%E0%A6%BE-%E0%A6%9C%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%AC-%E0%A6%AE%E0%A7%8B/

মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডটকম/০৩-১১-২০১৬ইং/ অর্থ 

Tags: