muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

কিশোরগঞ্জের খবর

আগামীকাল জননেতা ও প্রখ্যাত সমাজ সেবক খান সাহেবএ.এফ. মোহাম্মদ নুরুল্লাহ’র ৩২ তম মৃত্যু বার্ষিকী

মুহাম্মদ কাইসার হামিদ, ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি :

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার কৃতি সন্তার জননেতা ও প্রখ্যাত সমাজ সেবক খান  সাহেব এ.এফ. মোহাম্মদ নুরুল্লাহ’র ৩২ তম মৃত্যু বার্ষিকী আগামীকাল বৃহস্পতিবার ।

এ উপলক্ষে আগামী শুক্রবার বাদ জুম্মা মরহুমের গ্রামের বাড়ীতে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। খান  সাহেব এ.এফ. মোহাম্মদ নুরুল্লাহ ১৯০০ সন , বাংলা ৮ ভাদ্র ১৩০৭ সালে উপজেলার খড়কমারা গ্রামে  এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। তার পিতার নাম মরহুম মৌলবী আব্দুস ছবোর ।

তিনি ৮৪ বছর জীবিত কালে অর্ধ-শতাব্দী কালযাবৎ জনগনের সেবায় নিজেকে আত্ম নিয়োগের মাধ্যমে জনগনের সাথে নিবিড়ভাবে মাঠ পর্যায়ে কাজ করে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছিলেন। সমাজ সেবার স্বীকৃতি স্বরূপ  ১৯৪৫ সনে  “খান সাহেব” উপাধিতে ভুষিত হন তিনি। ১৯৮৪ সনের ২৭ এপ্রিল,বাংলা ১৩৯১ সালের ১৪ বৈশাখ এ প্রখ্যাত সমাজ সেবক এ পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন।

চির নিদ্রায় শায়িত মরহুমের স্মৃতির স্বরণে ২০০২ সনের ১০ এপ্রিল কুলিয়ারচর উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে কান্দিগ্রাম – দ্বাড়িয়াকান্দি হইতে কুলিয়ারচর বাজার পর্যন্ত রাস্তা “ খান  সাহেব মৌলভী এ.এফ. মোহাম্মদ নূরুল্লাহ সড়ক” নাম করন করা হয়। নাম ফলক উম্মোচন করেন তৎকালিন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহ্ফুজুর রহমান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। খান  সাহেব মৌলভী এ.এফ. মোহাম্মদ নূরুল্লাহ স্থানীয় পাঠশালায় শিক্ষা জীবন শুরু করে ঢাকা মাদ্রাসা হইতে জামাতে উলা, নিউ স্কীম মাদ্রাসা পাঠ্যক্রমে বিশেষ প্রবেশিকা পরীক্ষায় ১৯২২ সনে প্রথম বিভাগে উর্ত্তীণ হয়। ঢাকা ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ হইতে ১৯২৪ সনে প্রথম বিভাগে আই.এ পাশ করেন। ১৯২৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হইতে ইসলামিক ষ্ট্যাডিস বিভাগে অনার্স , উচ্চতর দ্বিতীয় শ্রেণীর ডিগ্রী নেন।

সরকারী চাকুরীর মোহ ত্যাগ করে সমাজ সেবার ব্রত নিয়ে তিনি গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করে ১৯২৮ সনে স্থানীয় তাতারকান্দি এম.ই স্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।  ১৯৩৭ সনে স্কুলটিকে হাই স্কুলে রূপান্তর করে ১৯৪৫ সন পর্যন্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন। এছাড়া তিনি ১৯৭১সন পর্যন্ত উক্ত প্রতিষ্ঠানের সেক্রেটারির দ্বায়িত্ব পালন করেন।  ১৯৬০ সনে তাঁহার উদ্যোগে বিদ্যালয়টি কুলিয়ারচর হাই স্কুল নাম করন করা হয়। কুলিয়ারচর বোর্ড কাউন্সিলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৯২৯ সন হইতে ১৯৭১ সন পর্যন্ত একটানা ৪২ বছর প্রেসিডেন্ট ও চেয়ারম্যানের দ্বায়িত্বে ছিলেন তিনি। ১৯৩০ সন হইতে বিলুপ্তি পর্যন্ত কিশোরগঞ্জ লোকাল বোর্ডের সদস্য ও ভাইস চেয়ারম্যান  হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৩২ সন হইতে ১৯৪৫ সন পর্যন্ত ২২ বছর ময়মনসিংহ জেলা বোর্ডের মনোনীত সদস্য ছিলেন। ১৯৪৫ সন হইতে ১৯৫৪ সন পর্যন্ত ময়মনসিংহ জেলা বোর্ডের নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। ১৯৫১ সন হইতে ১৯৬২ সন পর্যন্ত পদাধিকার বলে কুলিয়ারচরের প্রথম সাব রেজিষ্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি । ১৯৩৭ সন হইতে বিলুপ্তি পর্যন্ত তিনি কুলিয়ারচর ঋণ সালিসী বোর্ডের চেয়ারম্যান ও বাজিতপুর বিশেষ ঋণ সালিসী বোর্ডে সদস্য ছিলেন। ১৯৪০ সনে তিনি কুলিয়ারচর নূরুল উলুম মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও সেক্রেটারি এবং কুলিয়ারচর ১০ গম্বুজ জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি ছিলেন।১৯৩৭ সন হইতে ১৯৫৪ সন পর্যন্ত ময়মনসিংহ জেলা স্কুল বোর্ডের সদস্য ছিলেন। কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল কলেজের গভর্নিং বোর্ডের সদস্য ছিলেন। ১৯৫১ সন হইতে ১৯৫৪ সন পর্যন্ত পাকিস্থান কেন্দ্রিয় পাট কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৭৯ সন হইতে ১৯৮১ সন পর্যন্ত ময়মনসিংহ জেলা আইন শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির সদস্য ছিলেন।

এছাড়া কুলিয়ারচর পনির কারখানা,বাদাম মিল,যান্ত্রিক চাষাবাদের কার্যালয় স্থাপন ও ছয়সূতীতে রেলওয়ে ষ্টেশন স্থাপনের উদ্দ্যোগ গ্রহন ও বাস্তবায়ন করেন তিনি। ত্রিশ দশকের গোড়া হইতে এতদ অ লে শরীয়ত ও ইসলাম বিরোধী কার্যকলাপে জিহাদী ভূমিকায় অবতীর্ণ হন এবং জনগনের সমর্থন নিয়ে  এইসব গর্হিত কাজ হইতে সমাজকে বিরত রাখার সংগ্রামে জয়ী হন তিনি। ১৯৩৪ সনে তিনি কুলিয়ারচর বাজার হইতে পতিতালয় উচ্ছেদ করেন। এই জননেতার ৬ষ্ঠ ছেলে কুলিয়ারচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নূরুল মিল্লাত জানান , আগামী শুক্রবার বাদ জুম্মা গ্রামের বাড়ীতে মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।

 

 

মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডটকম/২৬-এপ্রিল-২০১৭ইং/নোমান

Tags: