muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

দেশের খবর

শনির হাওর : তাহিরপুরে কৃষকের কান্না

মবিনুর মিয়া, তাহিরপুর(সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি :

সুনামগঞ্জ জেলার দ্বিতীয়  বৃহত্তমহাওর তাহিরপুর উপজেলার শনির হাওর প্রবল ভারি বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বাঁধ ভেঙ্গে শনির হাওর  একে বারে তলিয়ে গেছে। সেখানকার অধিকাংশ কৃষাণ-কৃষাণীরা সারা বছরের কর্ষ্টাজিত ফসল হারিয়ে কান্নায় আর চরম মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েছে । সরেজমিন হাওড় ঘুড়ে দেখা গেছে ফসল তলিয়ে যাওয়ার দৃশ্য।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মূতুজা মিয়া , সতীশ দে সহ কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে আর্কষিক এ পানিতে তাদের ক্ষয়-ক্ষতির নানা কথা। অনেকেরই নিজের জমি নেই। পরের কাছ থেকে১ বৎসরের জন্য কেউ (বর্গা) আবার কেউ কেউ নগদ টাকা দিয়ে জমি (জমা) নিয়েছেন ধান চাষ করার জন্য ,প্রতি এক একর জমি বছরে ৭/৮ হাজার টাকা দিতে হয়। আবার জমিতে মোটা অংকের টাকা খরচ হয়েছে, ধান চাষের জন্য জমি প্রস্তুত থেকে চারা রোপন করা পর্যন্ত। সে অর্থ আবার অধিকাংশ কৃষক নিয়েছেন ব্যাংক, এন জিও কাছ থেকে সুদে এবং আবার অনেকে গ্রাম্য সুধি মহাজনদের কাছ থেকে চরা সুদে নিয়েছেন টাকা। আর এই টাকা নিয়ে তারা জমি চাষ করেছিলেন।কিন্তু পানিতে হাওর ফসল তলিয়ে গেলেও তাদের ঋণের বোঝা রয়েই গেল ।

কৃষক হাফিজ মিয়া বলেন, আমরা এখন আছি মহাবিপদে এই হাওরের উপরেই আমাদের জীবন চলে। এখন এমন অবস্থা কাঁদতে পানি না আবার সইতেও পারিতাছিনা। হাওর জুড়ে হাহাকার বিরাজ করছে। এমন অসহায়ত্বের কথা উপজেলার হাজার হাজার কৃষক পরিবারের মাঝে সবার একটাই কথা বাঁধ নির্মানে দূনীর্তি বাজদের শাস্তি আর  সরকারী সহযোগীতা প্রয়োজন।

উপজেলার আওয়ামীলীগ যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বলেন,হাওর পাড়ের চারদিকে কৃষকের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে বাতাস । সব হাওর ডুবে যাওয়ায় শনির হাওরটিই ছিল শেষ সম্ভল।

স্থানীয় কৃষকগন জানান, উপজেলার প্রতিটি বাঁধের যখন খারাপ অবস্থা খবর পেয়েছেন তখনেই বাঁধ রক্ষায় ফাঠল ও ডেবেযাওয়া অংশে সংস্কারের কাজ করেছে হাওর পাড়ে কৃষকগন, দিন-রাত সেচ্চা শ্রমে। এই ফসল ফলাতে আমরা এনজিও,ব্যাংক ও মহাজনের কাছ থেকে ছড়া সুদে নেওয়া ঋন নেওয়ায় পরিশোধ ও ছেলে মেয়েদের পড়া শুনা ও জীবন কিভাবে বাঁচাব এ নিয়ে হতাশায় মধ্যে আছি।

গত ২৮শে ফেব্রুয়ারীর মধ্যে হাওরের বেরী বাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ করার সরকারি নির্দেশ থাকলেও ৪০ভাগ কাজও শেষ করেনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদার ও পিআইসিরা। অনেক হাওর পাড়ে বাঁধ নির্মান না করে পানি বাড়ার সাথে সাথে তড়িগড়ি করে নামমাত্র মাটি দেয় কর্মকর্তা কর্মচারী, ঠিকাদার ও পিআইসির প্রতিনিধিরা।তাহিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস ছালাম জানান-এ উপজেলার এবার বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সর্বশেষ শনির হাওরটি ডুবে যাওয়ায় এই এলাকার মানুষ এক বারেই নিঃশ্ব হয়ে গেল। সাধারন কৃষকরা এখন বড় বিপদে আছে তাদের জীবন জীবিকা নিয়ে।

 

 

 

মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডটকম/২৬-এপ্রিল-২০১৭ইং/নোমান

Tags: