muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

জাতীয়

বিনাশুল্কে নিয়ে আসা গরু, চুনাপাথর ও পাহাড়িছড়ার পাথর বাণিজ্যের আড়ালে বিজিবি-পুলিশের নামে চাঁনপুর সীমান্তে চলছে বেপরোয়া চাঁদাবাজি

মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ রিপোর্ট ।। 

সীমান্তের পাহাড়ি ছড়ায় উক্তোলিত পাথর ও ভারত থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে বিনাশুল্কে নিয়ে আসা চুনাপাথর বাণিজ্যের আড়ালে বিজিবি-পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তে প্রতিনিয়ত চলছে লাখ টাকার বেপরোয়া চাঁদাবাজি।

উপজেলার বড়দল উওর ইউনিয়নের চাঁনপুর সীমান্তে বেশ ক’জন সংঘবদ্ধ হয়ে সীমান্তের চোরাচালানী,পাথর শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে প্রতিদিন প্রায় লাখ টাকা চাঁদা আদায় করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সীমান্তে নির্ব্রিগ্নে প্রতিনিয়ত চোরাচালান ও চাঁদাবাজি হয়ে আসলেও উল্টো ফেঁসে যাওয়া এমনকি মামলা-হামলার ভয়ে প্রকাশ্যে এ বিষয়ে সীমান্তে বসবাসকারী লোকজন কোন রকম মুখ খুলতে নারাজ।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধু পাথরই নয় চাঁনপুর সীমান্তের অপর দু’টি পয়েন্ট দিয়ে বিনাশুল্কে চোরাচালানের মাধ্যমে নিয়ে আসা হচ্ছে শত শত ভারতীয় গরু। ওইসব গরুর বৈধতা দিতে চাঁনপুর বিজিবি ক্যাম্পের নামে গরু প্রতি ১৫০০ টাকা ও থানা পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে নির্ব্রিগ্নে প্রতি গরুর জন্য ৫০০’শ টাকা আদায় করা হচ্ছে প্রকাশ্যে। ওই সব অবৈধ গরুর চালানকে বৈধতা দেয়ার নামে বাদাঘাট বাজারের কথিত ইজারা রশীদের বিপরীতে আদায় করা হচ্ছে ২০০ শ টাকা করে। নেপথ্যে রয়েছে এক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও তার লোকজন বড়দল উওর ইউনিয়নের বর্তমান এক ইউপি সদস্য। এভাবে গরুর চালান থেকেই প্রতিদিন এক থেকে দেড় লাখ টাকা চাঁদা আদায় করে আসছে। এসব চাঁদাবাজি ও চোরাচালান বাণিজ্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেও কালে ভদ্রে সরজমিনে তদন্ত করতে বিজিবি ও পুলিশের দায়িত্বশীলরা কিছুটা তৎপরতা দেখালোও এলাকার প্রভাবশালী মহল, চোরাচালানীদের দাপট ও অতি সখ্যতায় স্থানীয় বিজিবি -পুলিশের কিছু অসৎ সদস্যের পরোক্ষ অসহযোগীতার কারণে আইনের জাল ফসকে বার বার বেড়িয়ে যায় চোরাচালানী চক্রের সদস্যরা ও বিজিবির কথিত সোর্স চাঁদা আদায়কারী ও তাদের সহযোগীরা।

সম্প্রতি চাঁনপুর সীমান্তের বারেক টিলা দিয়ে বিজিবির মদদে নিয়ে আসা ্একটি ভারতীয় গরুর চালানের ১৫টি গরু আটক করে বালিয়াঘাট বিওপির বিজিবির টহল দল। এক বিওপি এলাকা দিয়ে চোরাই গরুর চালান আসে আর আরেক বিওপির টহল দল গরুর চালান আটক করলেও এর সাথে জড়িতদের গ্রফতার না করায় অনেকটা চোরাচালানী বিজিবির মধ্যে সাপ লুডু খেলাই চলছে বলে ধারণা পোষণ করছেন সীমান্তবাসী।

সম্প্রতি সরজমিনে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার চাঁনপুর সীমান্তের নয়াছড়া থেকে সীমান্তের হতদরিদ্র কয়েকশতাধিক পরিবারের পুরুষ ও মহিলা শ্রমিকরা পাথর উক্তোলনের নামে মুলত ওপার থেকে চুনাপাথর নিয়ে আসছে। প্রতিদিন সীমান্তের এই ছড়া থেকে ১’শ থেকে ২’শ হ্যান্ডট্রলি বোঝাই চুনাপাথর প্রকাশ্যে নিয়ে আসা হচ্ছে বারেকটিলার জাদুকাটার নদীর পাড়ে। অবৈধ চুনাপাথর দেশের বিভিন্ন স্থানে নৌ-পরিবহনের মাধ্যমে সরবরাহের জন্য সুনামগঞ্জ -২৮ বর্ডারগার্ড ব্যাটালিয়নের চাঁনপুর বিওপির বিজিবি ক্যাম্পের কিছু অসৎ সদস্য জড়িত রয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক পাথর শ্রমিকরা মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠকে জানান, সীমান্তছড়া থেকে নামে মরা পাথর হলেও মুলত ওপার থেকে চুনাপাথর উক্তোলন করে নিয়ে আসার পর বিজিবি, পুলিশ ও জনপ্রতিনিধি এমনকী সাংবাদিকদের নামেও কথিত সোর্সরা চাঁদা নিচ্ছে।’

অপরদিকে নয়াছড়া গ্রামের পেছনে ভারতের মেঘালয় পাহাড় থেকে ও বিজিবির মদদে ৩০টি চোরাচালানী চক্র রাত দিন প্রায় দেড় থেকে দু’শ শ্রমিককে ওপারে চুনাপাথর ভাঙ্গার কাজে লাগিয়ে অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করে কয়েকশত টন চুনাপাথর চোরাই পথে নিয়ে আসছে। এসব চুনাপাথর হ্যান্ডট্রলি বোঝাই করে প্রকাশ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জাদুকাটা নদীর নদীর তীরে ডাম্পিং করে নৌ-পথে সরবারাহের জন্য। এরপর চুনাপাথর বোঝাই প্রতিটি হ্যান্ডট্রলি থেকে আদায়কৃত চাঁদার টাকার একটি অংশ স্থানীয় কিছু অসৎ বিজিবি-পুলিশের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে দিয়ে সিংহভাগ টাকাই সোর্স ও স্থানীয় এক ইউপি সদস্য হজম করছেন। আর এসব চাঁদাবাজি ও চোরাচালান বাণিজ্যের বিপরীতে ভাবমুর্তি ক্ষুণ্য হচ্ছে বিজিবি ও পুলিশের।’

সুনামগঞ্জ-২৮ বর্ডারগার্ড ব্যাটালিয়নের তাহিরপুরের চাঁনপুর বিওপির বিজিবির ক্যাম্প কমান্ডার হাবিলদার আসাদ বললেন, এগুলো মিথ্যা কথা।

মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডটকম/০৫-০৬-২০১৭ইং/ অর্থ 

Tags: