muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

দেশের খবর

রাজশাহী নগরীতে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা

পাপন সরকার শুভ্র, রাজশাহী :

রাজশাহী মহানগরীর সাধুর মোড় এলাকায় যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টার ঘটনায় শাশুড়িসহ ৬জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

আজ বুধবার দুপুরে ভুক্তভোগী গৃহবধূ তামান্না ইয়াসমিন তমা বোয়ালিয়া মডেল থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি  ১০ ফেব্রুয়ারী গৃহবধূ তমার সাথে নগরীর সাধুর মোড় এলাকার মর্ত্তুজা আলীর ছেলে শহীদুল হাসান শাহীর সাথে তার বিয়ে হয়। বিবাহের কিছুদিন পর থেকেই তার শাশুড়ি হাফিজা বেগম, চাচা শশুড় ইউসুফ আলীসহ ভাসুর ও দেবররা তার নিকট থেকে এক লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। তার গরীব পিতার পক্ষে এতো টাকা দেয়া সম্ভব নয় বলে জানালে, তারা গৃহবধূকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন শুরু করে।

তার স্বামী এ ঘটনার প্রতিবাদ জানালে, তার পরিবারের লোকজন তাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়ে চুপ থাকতে বলে।

এ ঘটনার জের ধরে গত সোমবার ৩১ জুলাই দিবাগত রাত আড়াইটায় তার স্বামীর অনুপস্থিতে গৃহবধূর ঘরে শাশুড়িসহ সকল বিবাদীরা প্রবেশ করে। এসময় গৃহবধূ তমা ঘুমিয়ে ছিলেন। পরে তাকে পুড়িয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে বিছানাসহ তার গায়ে কেরোসিন ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরে আগুনের ছেঁকায় গৃহবধূর ঘুম ভাঙ্গলে, সে তার পরনের সালোয়ার কামিজের আগুন নিভিয়ে বাড়ি থেকে পালানোর চেষ্টা করে। এসময় চাচা শশুড়, ভাসুর ও দেবররা মিলে তাকে পুনরায় আগুনে ফেলার জন্য টানা হেচড়া করলে তার পরনের কাপড় ছিড়ে তাকে শ্লীলতাহানী করে। পরে সে বাড়ি থেকে পালিয়ে সাধুর মোড় এলাকায় পৌঁছালে একজন পথচারী গৃহবধূকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে। পরে তার কাছে থেকে স্বামীর মোবাইলে ফোন করলে, স্বামী সাধুর মোড় এলাকায় পৌঁছে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে।

পরে আজ বুধবার দুপুরে গৃহবধূ তমা বোয়ালিয়া মডেল থানায় এসে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

এ ব্যাপারে গৃহবধূর স্বামী শাহী জানান, বিগত কয়েক বছর ধরে তার পরিবারের অন্যান্য সদস্য ছাড়াও চাচাদের সাথে তার ঘর থেকে টাকা চুরির ঘটনায় দ্বন্দ চলে আসছিলো। গত ৫ মাস আগে তার পিতার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পরে তার পৈত্রিক সম্পত্তির ভাগ চাওয়াকে কেন্দ্র করে তার চাচা ও অন্যান্য ভাইদের সাথে আবারো বিরোধ শুরু হয়। বিষয়টি নিয়ে সে নগরীর একটি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। পরে তিনি এ ব্যাপারে পুলিশ কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছিলেন। অভিযোগটি মতিহার থানায় তৎকালীন অফিসার ইনচার্জ তদন্ত করে দু’পক্ষকে হাজির করে মিমাংসার চেষ্টা করলেও, তার চাচা ও ভায়েরা মিমাংসা না করেই থানা থেকে চলে যায়। এসব ঘটনার জের ও যৌতুকের দাবিতে তার স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। বর্তমানে তিনি তার স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে এক স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তার মা, চাচা ও ভায়েরা বিভিন্ন প্রভাবশালী মহল দিয়ে তদবীর চালাচ্ছেন বলেও তিনি খবর পেয়েছেন।

এ ব্যাপারে বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমান উল্লাহ জানান, ভুক্তভোগীদের অভিযোগ আমলে নিয়ে তিনি একজন অফিসার নিয়োগ করে তদন্ত করাবেন। তদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার পরেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি আশ্বাস প্রদান করেন।

মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডটকম/০২-আগস্ট২০১৭ইং/নোমান

Tags: