নাসিম বিন রিয়াদ, উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) থেকে:
প্রায় অর্ধশত বছর পেরিয়ে গেলেও সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ফুলজোড় শাখা নদীর উপর একটি পাকা সেতু নির্মাণ হয়নি। উপজেলার সড়াতৈল-অলিপুর আঞ্চলিক সড়কে সড়াতৈল গ্রামের মধ্যদিয়ে যাওয়া এই নদীর উপর পাকিস্তান আমল থেকেই একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন এলাকাবাসী। কিন্তু আজ পর্যন্ত তাদের এ দাবি পূরণ হয়নি। অবসান হয়নি ২০ গ্রামের ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষের দুর্ভোগ।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিবছর এই নদীতে জুন থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত পানি থাকায় লোকজনকে এ পথে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। গ্রামবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ফুলজোড় শাখা নদীতে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেন। এই সাঁকোর উপর দিয়ে প্রতিদিন পশ্চিম পাশের সড়াতৈল মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়, সড়াতৈল প্রাথমিক বিদ্যালয়, সড়াতৈল দাখিল মাদরাসা ও কেজি স্কুলের ২ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী যাতায়াত করেন। এছাড়া অলিপুর, আমডাঙ্গা, বাগদা, বড়হর, বাহাদুল্লাপুর ও পাঁচলিয়াসহ ২০টি গ্রামের ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষকে এই সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হয়ে সড়াতৈল বাজার, পাঁচিলিয়া বাজার ও উল্লাপাড়া উপজেলা সদরে তাদের যাতায়াত করতে হয়।
স্থানীয় সড়াতৈল মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান ও স্থানীয় বাসিন্দা মাহমুদুল হাসান বাবলা জানান, ১শ ফুট দীর্ঘ একটি সেতু নির্মাণের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর ও উল্লাপাড়া উপজেলা পরিষদের কাছে বহুবার আবেদন জানানো হয়েছে। আবেদন জানানো হয়েছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। প্রতিদিন আমাদের সন্তানেরা ঝুঁকি নিয়ে সাকো পার হচ্ছে অথচ সংশ্লিষ্ট বিভাগ এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপই নিচ্ছেন না।
এ বিষয়ে বড়হর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহুরুল হাসান নান্নু জানান, অতি সম্প্রতি আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। আগের ইউপি চেয়ারম্যান এই নদীর উপর ১শ ফুট লম্বা একটি সেতু নির্মাণের জন্য প্রকল্প তৈরি করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরে জমা দিয়েছেন। বর্তমানে আমিও এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য তাগাদা দিয়েছি। আশা করছি খুব শিগগিরই বাস্তবায়ন হবে। মানুষের দুর্ভোগের অবসান হবে।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) উল্লাপাড়া উপজেলা অফিসের প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম জানান, বড়হর ইউপি চেয়ারম্যানের দেওয়া সেতু নির্মাণ প্রকল্পটি বিশ্বব্যাংকের প্রকল্পের অন্তর্ভূক্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। একনেকের সভায় প্রকল্পটি পাস হলে দ্রুত ফুলজোড় শাখা নদীর উপর পাকা সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডটকম/০৪-আগস্ট–২০১৭ইং/নোমান
Tags: