বগুড়া জেলা প্রতিবেদক : বগুড়ায় হাতুরে ডাক্তারের ব্লেড-চাকু দিয়ে বাড়িতেই অপারেশনে হাফেজ রেজাউল (৩৫) নামের এক মসজিদের ইমাম নিহতের ঘটনায় জনতার বিক্ষোভ উত্তালের পর ৯০ হাজার টাকায় দফারফার খবর পাওয়া গেছে। নিহত হাফেজ রেজাউল করিম (৩৫) বগুড়ার গাবতলীর বাগবাাড়ি উত্তরপাড়ার মনসের আলী আকন্দর ছেলে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় উত্তেজিত জনতা বাগবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ি ঘেরাও করে মৃত্যুর জন্য দায়ী ডাক্তারের শাস্তি দাবি করেছেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গাবতলী মডেল থানার পরিদর্শক(তদন্ত) নুরুজ্জামান জানান- নিহত হাফেজের ডায়াবেটিস, টিবি ও জন্ডিস রোগ ছিল, হয়তো সেকারণেও তার মৃত্যু হতে পারে। নিহত হাফেজের শরীরের ফোঁড়া বাড়িতেই বিভিন্নভাবে গালানোর চেষ্টা করে পরিবারের লোকজন। এতে তারা ব্যর্থ হয়ে পারিবারিক পল্লী চিকিৎসক আব্দুল লতিফকে ডেকে পাঠালে চিকিৎসক বাড়িতে গিয়েই ফোঁড়া অপারেশন করলে শরীরে বড় ক্ষত হয়। অপারেশনে হাফেজ রেজাউলের অবস্থার অবনতি হলে শনিবার সকাল ১০টায় শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে তিনি মারা যান।
গাবতলী মডেল থানার পরিদর্শক(তদন্ত) নুরুজ্জামান আরও জানান- মসজিদের ইমাম হাফেজ রেজাউল মারা যাওয়ার খবর পেয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী বাগবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ি ঘেরাও করে দায়ী ডাক্তারের শাস্তি দাবি করেন। এঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়েরের পর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সমন্বয়ে ৯০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিষয়টি মিমাংসা করায় হাফেজ রেজাউলের মরদেহ দাফনের অনুমতি দিয়েছে পুলিশ।
প্রাপ্ততথ্যে ও অভিযোগ সূত্রে জান গেছে- বাগবাড়ি বাজারের মেসার্স রিমা ফার্মেসি সত্ত্বাধিকারী ডাঃ আব্দুল লতিফ গত ২৯ আগস্ট জয়সিং কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম হাফেজ রেজাউল করিমের ফোঁড়া ব্লেড ও চাকু দিয়ে বাড়িতেই অপারেশন করে এবং ইনজেকশন দেয়। এরপর তার অবস্থার আরো অবনতি হলে বগুড়ার শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে তিনি মারা যান। এ্যম্বুলেন্সে রেজাউলের লাশ নিয়ে এলে হৃদয় বিদারক দৃশ্য দেখে কেঁদে ফেলেন অনেকে। তার বৃদ্ধ বাবা বারবার অজ্ঞান হয়ে পড়ছিলেন সন্তানের শোকে।
এঘটনায় থানায় অভিযোগের পরপরই ডাঃ আব্দুল লতিফ সাইনবোর্ড খুলে এলাকা ছেড়ে সটকে পড়ে। ইমাম রেজাউল মারা যাওয়ার খবর পেয়ে এলাকাবাসী বাগবাড়ি ফাঁড়ি ঘেরাও করে দায়ী ডাক্তারের শাস্তি দাবি করে। গত ৪ সেপ্টেম্বের দুপুরে বিষয়টি নিয়ে ডাক্তার আব্দুল লতিফের কাছে জানতে চাইলে মৃতের ভাই জহুরুল ইসলামকে কাঠের বাটাম দিয়ে মারপিট করে এবং হাত ভেঙ্গে দেয়।
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জোবাইদুর রহমান গামা বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত হৃদয় বিদারক। রেজাউল করিমের ছোট দুই মেয়ে রাছিমা ও রহিমার মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছে না। হাতুড়ে ডাক্তারের পক্ষ নিয়ে একজন নিরীহ মানুষের পরিবারের উপর বর্তমান চেয়ারম্যানের নির্যাতন মেনে নেয়া যায় না। আমরা হাতুড়ে ডাক্তারসহ এর সঙ্গে নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করছি প্রশাসনের কাছে।
মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডটকম/১০-০৯-২০১৭ইং/ অর্থ