muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

দেশের খবর

দুদক আইনে সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে- সিলেটে রাগিব আলী, ছেলে, ভাতিজাও সাবেক জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে মামলা

আরিফুর রহমান মানিক, ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি : ছাতক প্রেসকাবের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি গিয়াস উদ্দিন তালুকদার সিলেট মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে দূর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪এর দন্ডবিধির ১২০বি/ ১৬৬/২১৭/৪২০/৪০৯/১০৯ ও দূর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন।

দৈনিক সিলেটের ডাক পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক দাবিদার আব্দুল হান্নান, সিলেটের সদ্য সাবেক জেলা প্রশাসক জয়নাল আবেদীন, অধুনালুপ্ত দৈনিক সিলেটের ডাক পত্রিকার সম্পাদক আব্দুল হাই, প্রকাশক ও মুদ্রক রাগিব আলীর বিরুদ্ধে স্পেশাল মামলা (নং ০৯/২০১৭ইং) দায়ের করলে আদালত দূর্নীতি দমন কমিশন সিলেটে তদন্তের জন্যে প্রেরণ করেন। গত ২৪আগষ্ট দায়েরকৃত মামলায় অভিযোগ করা হয়, আইনানূগ স্বীকৃতি ছাড়া সাবেক জেলা প্রশাসক জয়নাল আবেদীনের সাথে যোগসাজস করে জনৈক আব্দুল হান্নান নিজেকে স্বঘোষিত ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ঘোষণা করে ২০১৬সালের ১১সেপ্টেম্বর হতে ২০১৭সালের ১৮জুন পর্যন্ত দৈনিক সিলেটের ডাক অননুমোদিতভাবে প্রকাশ করে সরকারি, আধা সরকারি ও প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান সমূহের বিজ্ঞাপন প্রচার ও প্রকাশ করে কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন। আইনত পলাতক, হাজত ও কারাভোগরত অবস্থায় কোন সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রক কর্তৃক সংবাদপত্র প্রকাশ করা বেআইনী।

পলাতক থেকে প্রতারণার আশ্রয়ে ২০১৬সালের ১০আগষ্ট হতে আব্দুল হাইয়ের সম্পাদনায় এবং রাগিব আলী দ্বারা মুদ্রিত ও প্রকাশিত বলে মিথ্যাভাবে জানান দিয়ে দৈনিক সিলেটের ডাক প্রকাশিত হতে থাকলে নালিশকারি গিয়াস উদ্দিন তালুকদার জনস্বার্থে দন্ডবিধির ৪১৭ধারায় কোতোয়ালী সিআর ১১০/২০১৬ইং মামলা করেন। মামলা করার দু’দিন পর ২০১৬সালের ১১সেপ্টেম্বর রাগিব আলীর ভাতিজা আব্দুল হান্নান নিজেকে ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রক ঘোষণা দিয়ে পত্রিকা প্রকাশ করতে শুরু করেন। পাঠক সমাজ আব্দুল হান্নানকে বৈধ সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর ধরে নেন। মো. রাহাত আনোয়ার সিলেটের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট হিসেবে যোগদানের পর স্মারক নং ০৫.৪৬.৯১০০.০১০.৩৪.২৩৫ ভিত্তিতে গত ১৫জুন দৈনিক সিলেটের ডাক পত্রিকার ডিকারেশন বাতিল করে দেন।

এ বাতিল আদেশের অনুলিপি দেয়া হয় সম্পাদক হিসেবে আব্দুল হাইকে, প্রকাশক ও মুদ্রক হিসেবে রাগিব আলীকে। রাগিব আলীর ভাতিজা আব্দুল হান্নানকে অনুলিপি দেয়া হলেও ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক উল্লেখ না করায় প্রমাণ হয় কোন অফিসিয়্যাল স্বীকৃতি ছাড়াই আব্দুল হান্নান পত্রিকার ডিকারেশন বাতিলের পূর্ব পর্যন্ত দৈনিক সিলেটের ডাক প্রকাশ করে প্রতারণার মাধ্যমে অন্যায় লাভে লাভবান হন। নিজেকে ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে দাবি করে আব্দুল হান্নান পত্রিকার যতগুলো সংখ্যা প্রকাশ করেছেন প্রিন্টিং প্রেস এন্ড পাবলিকেশন্স এ্যাক্ট অনুযায়ি প্রত্যেকটি সংখ্যা হয়েছে অননুমোদিত সংবাদপত্র। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অননুমোদিত সংখ্যা ও পত্রিকার প্রেস জব্দ করে বাজেয়াপ্ত করা ছিল জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট জয়নাল আবেদীনের অফিসিয়্যাল দায়িত্ব। কিন্তু আব্দুল হান্নানের সাথে আতাঁত থাকায় জয়নাল আবেদীন ক্ষমতার অপব্যবহার করে অননুমোদিত সিলেটের ডাক প্রকাশের সূযোগ দিয়েছেন।

মামলায় আরো অভিযোগ করা হয়, ২০১৬সালের ১১সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৭সালের ১৮জুন পর্যন্ত দৈনিক সিলেটের ডাক প্রকাশনায় যারা নির্বাহী সম্পাদক, ব্যবস্থাপনা সম্পদক, বার্তা সম্পাদক, প্রধান প্রতিবেদক, হিসাব রক্ষক ও বিজ্ঞাপন শাখার দায়িত্ব পালন করেন তদন্তের মাধ্যমে যেন তাদেরকেও আসামি করা হয়।

এছাড়া জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট কার্যালয়ের সাধারণ শাখায় কর্মরত শাখা প্রধান ও তথ্য গোপনকারিদের আসামিভূক্ত করার দাবি করা হয়। নালিশকারির পক্ষে মামলাটি উপস্থাপন করেন সিনিয়র আইনজীবি এড. শহীদুজ্জামান চৌধুরী। তাকে সহযোগিতা করেন, এড. আবুল হাসান, এড. সফিকুল ইসলাম, এড. সজল কুমার রায়, এড. সৈয়দ মুজিবুল হক জাবেদ, এড. সাইফুল ইসলাম, এড. সিরাজুল ইসলাম প্রমূখ।

মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মফিজুর রহমান ভূঁইয়া ২৪আগষ্ট আদালতে মামলাটি গ্রহণ করে ১১সেপ্টেম্বর মামলার শুনানী নিয়ে গিয়াস উদ্দিন তালুকদারের হলফান জবানবন্দী রেকর্ড করে দূর্নীতি দমন কমিশন সিলেটকে তদন্ত প্রতিবেদন প্রদানের নির্দেশ দেন। সম্প্রতি রাগিব আলী ও তার পুত্র আব্দুল হাই কারাগারে থাকাবস্থায় দৈনিক সিলেটের ডাকের ডিকারেশন ফেরত পাবার একটি রীট আবেদন করলে হাইকোর্ট বিভাগে তা- খারিজ হয়েছে বলে জানা যায়!

 

Tags: