muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

জাতীয়

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের নীতিমালা পরিবর্তন

ডেস্ক রিপোর্ট : পাঁচ শর্তে বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দেওয়ার জন্য বিভিন্ন দেশ থেকে পাঠানো ত্রাণসামগ্রীর ওপর অগ্রিম আয়কর (এআইটি) ছাড়া আরোপযোগ্য শুল্ক-করাদি কেস-টু-কেস ভিত্তিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্তৃক মওকুফ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

তবে সম্প্রতি এ পাঁচ শর্তের একটি শর্ত পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের মতামত চাওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

অর্থমন্ত্রীর জন্য তৈরি সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, অতি সম্প্রতি প্রতিবেশী রাষ্ট্র থেকে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে প্রবেশ করছে। তাদের অধিকাংশই সহায়-সম্বলহীন অবস্থায় বাংলাদেশে আসছে। ওই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দুরবস্থা নিরসনে বিভিন্ন দেশ থেকে সহযোগিতার আশ্বাস পাওয়া গেছে এবং ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে ত্রাণবাহী এয়ারক্রাফট চট্টগ্রাম ও ঢাকা বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে। এ বিষয়ে এর আগে চলতি মাসের ১৩ তারিখ অর্থমন্ত্রী কর্তৃক একটি সারসংক্ষেপ অনুমোদন করা হয়।

সূত্র জানায়,  রেহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণসামগ্রী যাতে নির্বিঘেœ দেশে আসতে পারে এবং সেগুলো শরণার্থীদের হাতে সুষ্ঠুভাবে পৌঁছানো যায় সেজন্য একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। এতে পাঁচটি শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছিল।

ক. অনুদান হিসেবে প্রেরিত খাদ্য এবং জরুরি ত্রাণসামগ্রী বাংলাদেশের সাম্প্রতিক আশ্রয় গ্রহণকারী রোহিঙ্গা মুসলমানদের মধ্যে মানবিক সহায়তা হিসেবে বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে এবং এগুলো কোনোক্রমেই বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার বা বিক্রয়/হস্তান্তর/স্থানান্তর করা যাবে না;

খ. আনীত পণ্য শুল্ক মূল্যায়ন (আমদানি পণ্যের মূল্য নির্ধারণ) বিধিমালা, ২০০০-এর আলোকে যথাযথ মূল্যে ও এইচএস কোডে শুল্কায়ন করতে হবে;

গ. শুল্কায়নের আগে পণ্যের ঘোষণা সঠিক কিনা, সে সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে;

ঘ. আনীত খাদ্য এবং জরুরি ত্রাণসামগ্রীর সদ্ব্যবহার বিষয়ে একটি প্রতিবেদন জেলা প্রশাসক, চট্টগ্রাম/কক্সবাজারের মাধ্যমে একটি প্রতিবেদন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনআরবি) দাখিল করতে হবে।

ঙ. সংশ্লিষ্ট শুল্ক ভবনের কমিশনারের কাছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিবের নিম্নে নয় এমন কর্মকর্তা কর্তৃক নিজ নামীয় সিল ও স্বাক্ষর সহযোগে ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে এই মর্মে অঙ্গীকারনামা দাখিল করতে হবে যে, আনীত খাদ্য এবং জরুরি ত্রাণসামগ্রী কোনোপ্রকার হস্তান্তর, বিক্রয়, অন্যবিধ ব্যবহার, চুরি বা খোয়া গেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ঢাকা প্রযোজ্য শুল্ক-করাদি পরিশোধে বাধ্য থাকবে।

সূত্র জানায়, এই নীতিমালা অনুসরণ করে শরণার্থীদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ কাজ চলছিল। তবে গত ১৯ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে রোহিঙ্গাবিষয়ক অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে  আলোচনা হয়। এসময় (ঙ) চিহ্নিত শর্তটি অব্যাহতভাবে ত্রাণকার্য পরিচালনায় অসুবিধা সৃষ্টি করছে বলে আলোচকরা মন্তব্য করেন। বিশেষ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ওই শর্তটি প্রতিস্থাপনের অনুরোধ জানানো হয় এবং তা পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন আলোচকরা।

নতুন করে প্রতিস্থাপিত শর্তটি অর্থমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রতিস্থাপিত (ঙ) শর্তটি হবে, ‘উক্তরূপে আমদানিকৃত পণ্য চালান ছাড়করণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব সরকারি/বেসরকারি প্রতিষ্ঠান/সংস্থা এরূপে নিশ্চিত করবেন যাতে আনীত খাদ্য জরুরি ত্রাণসামগ্রী যে উদ্দেশ্যে আনীত হয়েছে তা থেকে ভিন্নরূপে হস্তান্তর, বিক্রয়, অন্যবিধ ব্যবহার না হয় এবং চুরি বা খোয়া না  যায়।’

Tags: