muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

কিশোরগঞ্জের খবর

উদ্বোধনের আগেই দ্বিতীয় ভৈরব রেলওয়ে সেতুতে ফাটল!

মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ।। কিশোরগঞ্জের ভৈরব ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের মেঘনা নদীতে ৫৬৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা দ্বিতীয় রেলওয়ে সেতুর কয়েকটি বেইজ পিলারে ভাঙ্গন ও ফাটল দেখা দিয়েছে। আগামী মাসেই উদ্বোধনের কথা থাকা এ ব্যয়বহুল ও গুরুত্বপূর্ণ সেতুতে কীভাবে ফাটল দেখা দিল তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানান প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।


সেতুর ৮,৯ ও ১০ নম্বর পিলারের এক পাশ ভেঙ্গে গেছে। এর মধ্যে ৯ নম্বর পিলারে ফাটলের পরিমাণ অনেক বেশি। এ বিষয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলীসহ কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীরা কিছু বলতে রাজি হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্হানীয় এক প্রকৌশলী জানান, কার্গো বা জাহাজের ধাক্কায় পিলারের সাইড ভেঙ্গে গেলেও নিম্নমানের কাজের কারণে সেতুর পিলারে ফাটল সৃষ্টি হতে পারে। ঘটনাটি ভালভাবে তদন্ত করলেই আসল তথ্য বেরিয়ে আনা সম্ভব বলে তিনি জানান।

জানা যায়, ভারতীয় ইরকন এন্ড এফকনস কোম্পানী সেতুটি নির্মাণ কাজ করছে। ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে ৯শ ৮৪ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ৭ মিটার প্রস্হের সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। যার প্রকল্প ব্যয় ধরা হয় ৫শ ৬৭ কোটি টাকা। নির্মিত সেতুতে ব্রডগেজ লাইন করা হয়েছে। ৩ বছরের প্রকল্পে সেতুর নির্মান কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও পরে প্রকল্পের মেয়াদ একাধিকবার বাড়িয়ে ৪ বছর করা হয়। বর্তমানে সেতুটির ১০০% কাজ শেষ হয়েছে। ইতিমধ্যেই সেতু দিয়ে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানো হয়েছে। আগামী মাসেই বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নবনির্মিত সেতুটি উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।

এদিকে নবনির্মিত দ্বিতীয় ভৈরব রেলওয়ে সেতুর পিলারে ফাটলের সংবাদ বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশের পর ২৬ অক্টোবর (আজ) বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে সেতুর প্রকল্প পরিচালক (পিডি) মো. আব্দুল হাই এর নেতৃত্বে কনসালটেন্টগণ ৮, ৯ এবং ১০ নম্বর পিলার পরির্দশন করেন। এসময় ৯ নম্বর পিলার বেইজ এর পশ্চিম পাশে বেইজের ১ ফুট ভিতরে উত্তর-দক্ষিণ বরাবর লম্বা আকৃতির সামান্য পরিমান ফাটল থাকলেও বিষয়টিকে গুরুতর সমস্যা বলে মনে করছেনা পরিদর্শনে আসা কনসালটেন্টগণ।
সেতুর প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুল হাইসহ কনসালটেন্টদের টিম লিডার নায়ায়ণ জা ও কনসালটেন্ট ধ্রুব ভট্টাচায্য জানান, সেতুর মূল পিলারে কোন সমস্যা নেই। ৯ নম্বর পিলারে বেইজে যে সামন্য ফাটল রয়েছে সেটা পলেস্তারের ফাটল।

এসময় টিম লিডার নারায়ণ জা সাংবাদিকদের জানান, সেতুর ৯ নম্বর মূল পিলারের বেইজে পলেস্তারের উপর সামান্য যে ফাটল রয়েছে সেটা কোন ঝুঁকিপূর্ণ নয়। আমি লিখিতভাবে সেটা জানিয়ে দিয়েছি। একশ কিলোমিটার স্পীডে সেতুর উপর ট্রেন চলাচল করতে পারবে নির্দিধায়।

সেতুর প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুল হাই জানান, যে ফাটলের কথা বলা হয়েছে কনসালটেন্টগণ সেটা দেখেছে। তারা সেটা পরিদর্শন করেছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জানানো হবে। যদিও এটা কোন সমস্যা না তারপরও প্রয়োজনে বুয়েটের কনসালটেনের মাধ্যমে পরীক্ষা নিরিক্ষার কথা জানান তিনি।

তিনি বলেন, সেতুর কাজ শেষ হয়েছে। নদীতে চলাচলকারী নৌযান ৮ ও ৯ নম্বর পিলারের বেইজমেন্টে ধাক্কা দিয়ে কিছুটা ক্ষতিসাধান করেছে বিষয়টি নদী বিভাগকে অবগত করা হবে এবং রাত্রিকালীন সময়ে নৌযান চলাচলের ক্ষেত্রে পিলারে যেন ধাক্কা না লাগে সেই জন্য সংকেতবাতির ব্যবস্থা করা হবে।

মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডটকম/২৬-অক্টোবর২০১৭ইং/নোমান

Tags: