muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

সাহিত্য ও সংস্কৃতি

না ভেবে কাজ এমনই হয়!

মাওলানা এসএম আরিফুল কাদের।। আলাল ও দুলাল দুই ভাই। বড়ভাই মৃত্যুর পর কষ্টের জীবন শুরু হল স্ত্রী রেহেনা, মেয়ে সাবিনা এবং ছেলে সুমনের। সাবিনা স্নাতক ও সুমন ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী হওয়ায় সাবিনাকে নিতে হল শ্বাসকষ্টে রোগী মায়ের চিকিৎসা ও ভাই সুমনের লেখাপড়ার খরচ। অপরদিকে চাচা দুলাল সরকারী চাকুরী থাকা সত্ত্বেও বড় ভাইয়ের সংসারে নজর না দিয়ে বিভিন্নভাবে কষ্টে ফেলে দিল সে! বিশ্বাসঘাতক দুলাল; বড়ভাইয়ের উপকার ভুলে গিয়ে স্ত্রী, কন্যা ও পুত্রকে ঘাঁড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিল রাস্তায়। দিশেহারা সাবিনা অসুস্থ মা ও ছোটভাইয়ের অন্ন, বস্ত্র ও বাসস্থানের তাগিদে কর্ম সন্ধ্যানে বেড়িয়ে গেল। সামান্য বেতনে কর্মক্ষেত্রে যোগ দিয়েও দুশ্চরিত্র জিএমের ব্যবহারে কিছুদিন না যেতেই কর্মহারা হয়ে বাসায় ফিরে সাবিনা। অসুস্থ মায়ের আকুতি, ছোটভাইয়ের লেখাপড়ার মনযোগ দেখে বসে থাকতে না পেরে আবার বেড়িয়ে গেল কর্মসন্ধানে। এক ফাঁকে মা রেহেনার শ্বাসকষ্ট তীব্র বেড়ে যাওয়ায় পড়শীগণ ভাই সুমনকে ডাক্তারের খোঁজে পাঠালে পথিমধ্যে সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যায়। এ সংবাদ পেয়ে মা রেহেনাও চলে গেলেন বাবা আলালের দেশে। সর্বহারা সাবিনা পথে পথে ঘুড়ে কর্মক্ষেত্র খোঁজতে লাগল জীবন বাঁচাতে। ব্যর্থ হয়ে বাসায় ফিরার পথে সড়ক দূর্ঘটনায় আফজাল হোছেন সাহেব নামক এক শিল্পপতিকে আহতাবস্থায় দেখে হাসপাতালে নিয়ে গেল সাবিনা। চিকিৎসকগণ আহতব্যক্তির পরিবারকে খোঁজতে চাইলে এই হতভাগার কেউ নেই বলে জানা যায়।“ও নিগেটিভ” রক্তের প্রয়োজন হলে সাবিনা নিজ “ও নিগেটিভ” রক্তদান করে। শিল্পপতি আফজাল সাহেব সুস্থ হয়ে সাবিনার অশ্রুঝড়া পরিচয় জানতে পেরে মেয়ে হিসাবে তুলে নেন আপন পরিবারে। বিশাল সম্পত্তি ও কোম্পানীর দায়িত্ব বুঝিয়ে দিলেন সর্বহারা সাবিনাকে। পিএমের দায়িত্ব পালনে কোম্পানীর উত্তরোত্তর উন্নতি দেখে বড় করার সিদ্ধান্ত নিলেন আফজাল সাহেব। তাই সাবিনাকে লোক নিয়োগ করতে বলা হলে, সাবিনা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করায় ১০০জনের মত প্রার্থীর আবেদন জমা হল। প্রার্থীগণের সাক্ষাৎকার সাবিনা নিতে পরামর্শ দিলেন আফজাল সাহেব। ভাগ্যের কি পরিহাস! ১০নম্বর ব্যক্তির সাক্ষাৎকার নিতে গেলে সাবিনা তার পিছনের সব ঘটনা স্বরণ হল। অর্থাৎ চাচা দুলাল নিঃস্ব হয়ে ছেলে-মেয়েদের অত্যাচারে বৃদ্ধাবস্থায় বাড়ি হতে বের হয়ে কর্মসন্ধানের সাক্ষাৎকারে আসলেন পিএম সাবিনার কোম্পানীতে।

পরিশেষে সাবিনা নিজ চাচার অত্যাচার, অবিচার ও ঘর থেকে বের করে দেয়ার কথা ভুলে গিয়ে ক্ষমা ছাড়া আর কি করতে পারে? সবকিছু হারিয়ে নিজ সন্তানকে ছেড়ে আশ্রয় পেল সর্বহারা বর্তমান ‘ক’ কোম্পানীর পিএম সাবিনার কুলে।

তাইত কবি বলেন- “নদীর এপাড় ভাঙ্গে ওপাড় ঘরে, এইত নদীর খেলা।

সকাল বেলার ধনীরে তুই,

 ফকির সন্ধ্যা বেলা”।

Tags: