muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

দেশের খবর

চাকরির বয়স বাড়াতে তৃতীয় দিনের মতো বাসাছাপের কর্মসূচি অব্যাহত

চাকরির বয়স বৃদ্ধির জন্য তৃতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে উচ্চশিক্ষিত বেকার ছাত্র-ছাত্রীরা। বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ (বাসাছাপ) নামের সংগঠনের ব্যানারে এই কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

গত ১০ জানুয়ারি থেকে তারা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান করছে। ইতিমধ্যে অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী সেখানে উপস্থিত হয়েছে। আগামী দুই-একদিনের মধ্যে দাবি মানা না হলে, তারা আমরণ অনশনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

সংগঠনের সভাপতি মো. ইমতিয়াজ হোসেন জানান, অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ, পেজের মাধ্যমে সারা দেশের চাকরির বয়স ৩৫ প্রত্যাশী ছাত্র-ছাত্রীকে পোস্ট করে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।

তিনি জানান, দেশের প্রতিটি জেলা থেকে তরুণ-তরুণীরা ঢাকায় আসতে শুরু করেছে। ১২ জানুয়ারি বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষা থাকায় অনেকের আসতে একটু দেরি হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের এই দাবি নিয়ে দীর্ঘ ৬ বছর ধরে আমরা আন্দোলন করে আসছি। আমরা এখনো আশানুরূপ ফল পাইনি। দুই একদিনের মধ্যে আমাদের দাবি না মানলে কাপনের কাপড় মাথায় বেঁধে আমার আমরণ অনশনে যাবো।

‘হয় দাবি আদায় করে ঘরে ফিরবো, না হয় এখানেই মরবো। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই কর্মসূচি চলবে’-বলেন মো. ইমতিয়াজ হোসেন। তিনি এ ব্যাপারে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।

অবস্থান কর্মসূচিতে বসে প্রচণ্ড ঠান্ডায় ইতিমধ্যে তিন জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৯ ফেব্রয়ারি জাতীয় সংসদের অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিম সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবি তোলেন। এর আগে ১ ফ্রেব্রুয়ারি একই দাবি জানান ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা। এই দাবির পক্ষে তারা যুক্তিও উপস্থাপন করেন। তারা বলেছিলেন সেশনজট, রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ নানা কারণে অনেক চাকরি প্রার্থীর বয়স ৩০ পেরিয়ে যায়।

এছাড়া ৪ ফেব্রুয়ারি দশম জাতীয় সংসদের নবম অধিবেশনে চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধির জন্য একটি বেসরকারি বিল উত্থাপন করেন যশোর-৪ আসনের এমপি মনিরুল ইসলাম।

এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বিশেষ ক্ষেত্রে সরকারি প্রবেশের বয়সসীমা ৪০ রয়েছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ৪০ বছর, শ্রীলঙ্কায় ৪৫ বছর, ইন্দোনেশিয়ায় ৪৫ বছর, ইতালিতে ৩৫ বছর, ফ্রান্সে ৪০ বছর, যুক্তরাষ্ট্রে ৫৯ বছর, কানাডা ও সুইডেনে ৪৭ বছর, কাতার ও নরওয়েতে ৩৫ বছর, এঙ্গোলায় ৪৫ বছর এবং তাইওয়ানে ৩৫ বছর।

বাংলাদেশেও ডাক্তারদের আবেদনের বয়স ৩২ বছর ও নার্সদের ৩৬ বছর। এই চিত্র তুলে ধরে হাজী মো. সেলিম বলেছিলেন, সংবিধানে সকল নাগরিকের সমান অধিকারের কথা বলা হয়েছে।

এদিকে, ২০১৭ সালের ২০ নভেম্বর জাতীয় সংসদে স্বতন্ত্র সদস্য মো. রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক জানিয়েছেন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়িয়ে ৩৫ বছর করার কোনো পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই।

আন্দোলনকারীরা বলছেন, পৃথিবীর অনেক দেশেই সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা অনেক বেশি হলেও, আমাদের দেশে কম।

Tags: