পাপন সরকার শুভ্র, রাজশাহী প্রতিনিধি।। গাছে গাছে ফুটেছে শিমুল, পলাশ। উকি দিচ্ছে আমের মুকুলও। চারপাশে মৌ মৌ গন্ধ। এমন মিষ্টি গন্ধেই যেন মাতোয়ারা রাজশাহীর তরুণ-তরুণীরা। বাসন্তি রাঙা শাড়ি পরে আর খোপায় ফুল গুঁজে তারা নেমেছেন বসন্ত বরণে। বিনোদন কেন্দ্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও চলছে বসন্ত বরণের উৎসব।
বসন্তের প্রথম দিন মঙ্গলবার সকাল থেকেই রাজশাহীর তরুণ-তরুণীদের মধ্যে বেশ উচ্ছ্বাস দেখা যাচ্ছে। ছেলেরা পাঞ্জাবি আর মেয়েরা শাড়ি পরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন মন যেখানে চাইছে। কাল ভালোবাসা দিবসের উৎসবও যেন আজ থেকেই শুরু হয়েছে। তাই বসন্তের হাওয়া লেগেছে ফুলের বাজারেও। দোকানগুলোতে চলছে জমজমাট বেচাকেনা।
সকালে সাহেববাজারের ফুলের দোকানগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, ফুল কিনতে তরুণ-তরুণীদের উপচেপড়া ভিড়। চুলে ফুলের বেনী আর মাথার রিং বানাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন দোকানীরাও। তরুণীরা পোশাকের রঙের সাথে মিল রেখে সাজিয়ে তুলছেন নিজেকে। বাঙালীর এই অপরুপ সাজ যেন প্রকৃতির সৌন্দর্যকে আরো এক ধাপ বাড়িয়ে তুলেছে।
ফুলের দোকানীরা জানিয়েছেন, দুই দিনের চাহিদা মেটাতে এবারও জেলার বাইরে থেকে ফুল আমদানি করতে হয়েছে। অন্য সময়ের চেয়ে ফুলের তোড়ার দাম বেড়েছে ১০০ থেকে ২০০ টাকা। গোলাপের দাম বেড়েছে প্রতি পিস ২০ থেকে ৩০ টাকা। তারপরেও বেচাকেনায় তেমন প্রভাব পড়েনি। পহেলা ফাল্গুনে আজ গাঁদা ফুলের চাহিদা বেশি। ১০০ পিস গাঁদা বিক্রি হচ্ছে দেড় থেকে ২০০ টাকায়। অথচ আগে তা ৬০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রয় হত। এছাড়া রজনীগন্ধা প্রতিটি ৭ থেকে ১০ টাকা, গোলাপ ফুল ৪০ থেকে ৬০ টাকা, গ্ল্যাডিওলাস ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া তাম বেড়েছে পাহাড়ি ব্যান, গজরা, ফুলের ডালা ও তোড়াগুলোরও।
নিউ ফেন্ডস ফুল ভান্ডারের মালিক এমরান আলী বলেন, চাহিদা মেটাতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ফুল আমদানি করতে হয়েছে। বসন্ত বরণ ও ভালোবাসা দিবসকে সামনে রেখে চাষিরা দাম বাড়িয়েছে। পাশাপাশি যোগ হয়েছে পরিবহন খরচ। তাই বাড়ানো হয়েছে ফুলের দাম। তারপরেও ক্রেতার কোনো কমতি নেই।
এদিকে বসন্তকে বরণ করতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে নানা অনুষ্ঠান। বর্ণাঢ্য র্যালি করেছে চারুকলা বিভাগ। বিকালে রয়েছে সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান। তরুণ-তরুণীদের পদচারণায় মুখোরিত হয়ে উঠেছে পদ্মাপাড়, শহীদ এএইচএম কামারজ্জিামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা, জিয়া পার্কসহ নগরীর বিনোদন কেন্দ্রগুলো। বাসন্তি রাঙা তাদের সাজ রঙিন করে তুলেছে রাজশাহীকে।