মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ ।। কিশোরগঞ্জে পাইপ চুরির দায়ে এক শিশুকে বেধড়ক মারপিটের অভিযোগ উঠেছে। জেলা শহরের পূর্বতারাপাশা এলাকার একটি আইসক্রিম ফ্যাক্টরিতে ইদু (১০) নামে এক শিশুকে নির্যাতন করে ওই ফ্যাক্টরির মালিক বকুল মিয়া। নির্যাতনের শিকার ওই শিশুটি বর্তমানে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে।
আহত ইদু কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন তারাপাশা বন্দের বাড়ি এলাকার সোহরাব মিয়ার ছেলে। চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে ইদু সবার ছোট। বড় ভাই সুজন মিয়া শহরের মোরগমহাল এলাকায় ভাঙাড়ির ব্যবসা করায় সেখানেই কাজ করে ইদু।
নির্যাতিত ইদুর পরিবার সূত্র জানায়, ১৬ ফেব্রুয়ারি রাতে মোরগমহালের ভাইয়ের দোকান থেকে বাড়ি ফিরছিল ইদু। এসময় রেলস্টেশন সংলগ্ন বটতলা এলাকায় আইসক্রিম ফ্যাক্টরির মালিকের ছেলে বকুল তাকে ধরে চড়-থাপ্পড় দিয়ে পাশের জিআরপি থানায় নিয়ে যায়। পরে রাতে ইদুকে রেলওয়ে থানা থেকে নিজেদের আইসক্রিম ফ্যাক্টরিতে নিয়ে যায় বকুল। এরপর সেখানে নিয়ে বকুল ফ্যাক্টরির প্লাস্টিকের পাইপ দিয়ে বেধড়ক পেটায় ইদুকে। এক পর্যায়ে প্লাস্টিকের পাইপটি ভেঙে গেলে লোহার পাইপ দিয়ে পেটায়। নির্যাতনের পর সারারাত ফ্যাক্টরিতে আটকে রাখা হয় তাকে। পরদিন শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে তাকে ছেড়ে দেওয়ার পর অসুস্থ শরীর নিয়ে বাড়ি ফেরে সে। পরে শরীরে ব্যথা অসহ্য পর্যায়ে চলে গেলে পরিবারের পক্ষ থেকে শনিবার রাতে তাকে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পরিবারটি আরও জানায়, পুনরায় নির্যাতন-মারপিটের হুমকির কারণে তারা থানায় গিয়ে অভিযোগ দিতে পর্যন্ত সাহস পাচ্ছেন না। রেলওয়ে থানা হেফাজতে শিশুটি নিরাপদে থাকবে ভেবে ওই রাতে তারা বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখান থেকে নিয়ে গিয়ে এমন বর্বর নির্যাতন করা হবে, তা তারা কল্পনাও করতে পারেননি।
এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল ইসলাম মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠকে জানান, ওইদিন তিনি স্টেশনে ছিলেন না। তবে রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) স্টেশনে এসে বিষয়টি জেনেছেন যে, শিশুটিকে থানায় আনা হলেও পরিবারের হেফাজতে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুশামা মো. ইকবাল হায়াত মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠকে বলেন, এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।