muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

লাইফ স্টাইল

বাংলাদেশে টাইডাই শিল্পকে একধাপ এগিয়ে নিতে চায় “আরিফ’স কালেকশন”

লাইফস্টাইল রিপোর্ট ।। টাই-ডাই হল এক প্রকার রঙের খেলা। যেখানে কাপড়কে দড়ি বা সুতা দিয়ে বেঁধে ভিজিয়ে দেওয়া হয় এক বা একাধিক রঙ এ। তারপর বাঁধন খুললে যেন বেরিয়ে আসে এক নানা রঙের নানা টেকচারে রঙিন বর্ণছটা। এই টাই বাংলাদেশের একটি অন্যতম ঐতিহ্য। বর্তমানে রয়েছে অনেক চাহিদা। সকল পেশার মানুষজনই টাইডাইকে সাদরে গ্রহন করেন। সেই চাহিদার দিক থেকেই বাংলাদেশের নামিদামী সকল দেশী ব্রান্ড গুলোতেই টাই ডাই করা পোষাকের রকমফের লক্ষ্য করা যায়।

অন্যদিকে হ্যান্ডপেইন্ট। কাপড়ে ছবি আঁকা যাকে বলে। শিল্পীর তুলির আচরে ক্যানভাসে পরিনত হয় পোষাক। আর এই হ্যান্ডপেইন্ট বিশ্বের এক বহু প্রাচীন ঐতিহ্য। এটি শুধু বাংলাদেশের না বরং অনেকে দেশেই বিভিন্ন ভাবে পোষাকে হ্যান্ডপেইন্ট করার রীতি চলে আসছে বহুকাল ধরে। তবে হ্যান্ডপেইন্ট করা পোশাকের মাঝে বাংলাদেশে শাড়ি, কামিজ, কুড়তি, ওড়না, পাঞ্জাবী,গাউন প্রভৃতি উল্লেখ্যযোগ্য। তবে দুঃখের বিষয় এই যে বাংলাদেশের বড় বড় ব্রান্ডগুলোয় এখনো হ্যান্ডপেইন্ট এর উপর জোর দিতে লক্ষ্য করা যায়না। তবে অনলাইন ভিত্তিক অনেক প্রতিষ্ঠানেই টাই ডাই এবং হ্যান্ডপেইন্ট এর উপর জোর লক্ষ্য করা যায়। যাতে বুঝা যায় বাংলাদেশে টাইডাই বা হ্যান্ডপেইন্ট এর ভবিষ্যত অনেকটাই ভাল।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর চারুকলা অনুষদ। শিল্পী তৈরির কারখানা যাকে বলে। সেই প্রতিষ্ঠান এর একজন প্রাক্তন ছাত্র আরিফুল ইসলাম আরিফ নামে সুপরিচিত। তিনি চারুকলা থেকে বি.এফ. এ এবং এম.এফ.এ কমপ্লিট করেছেন কারুশিল্প বিভাগ থেকে। এই নিয়ে তিনি ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে বর্তমান প্রফেশনাল জীবন পর্যন্ত মোট ১৭ টি কর্মশালা করেছেন বিভিন্ন সময়। টাইডাই, বাটিক, ব্লক, মেটালওয়ার্ক, ক্রাফট, হ্যান্ডপেইন্ট প্রভৃতির উপর। এই নিয়ে ১৮ নম্বর কর্মশালা করাতে যাচ্ছেন টাই ডাই এবং হ্যান্ডপেইন্টের উপর। নিজ বিভাগের বন্ধু শামা তার কাজের বিভিন্ন সময়ে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করেছে। চারুকলায় ভর্তির পূর্বেই তিনি টাইডাই এর উপর দক্ষতা অর্জন করেন আর সেই দক্ষতার জায়গা থেকেই কর্মশালা করানো শুরু করেন এবং বেশ সাড়াও পান। তার এ কর্মশালায় সাহায্যকারী হিসেবে রয়েছেন চারুকলা অনুষদের আর একজন ছাত্র যিনি বর্তমানে অংকন ও চিত্রায়ন বিভাগের চতুর্থ বর্ষে অধ্যয়নরত আছেন,নাম অনিক কুণ্ডু। তিনি প্রথম বর্ষে থাকা অবস্থায় আরিফুল ইসলামের কর্মশালা হতে টাইডাই বাটিক ব্লক এবং হ্যান্ডপেইন্ট এর কৌশন আয়ত্ত করেন।

তার মতে তিনি নিজে যতটুকু জানেন তা সবাইকে জানাতে চান। সাধারণত শিল্পের গূঢ় রহস্য মানুষ কাউকে খুব একটা জানাতে পছন্দ করেননা। কিন্তু তিনি মোটেও সেরকম ভাবেননা। তার মতে জ্ঞান বিতরনে বাড়ে। এটাই ভেবে চলেছেন ডিজাইনার আরিফুল ইসলাম। এই ভাবনা থেকেই তিনি আরিফ’স কালেকশন নামে একটি ব্র‌্যান্ড প্রতিষ্ঠা করেছেন।

কর্মশালা করানোর প্রসঙে আরিফুল ইসলাম বলেন, “আমার এই কর্মশালা করানোর মূল উদ্দেশ্যই সৃজনশীলতাকে কিভাবে বস্ত্রশিল্পে কাজে লাগানো যায়। সেই সাথে নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি। আমি নিজেও কয়েকটি ব্রাণ্ডে ডিজাইনার হিসেবে কাজ করেছি আবার আমার অনেক ছাত্রছাত্রী বর্তমানে বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজে কর্মরত অবস্থায় আছে ডিজাইনার হিসেবে এবং অনেকে অনলাইনে ব্যবসাও করছে। আমার আরেকটা উদ্দেশ্য হল একটা বড় গ্রুপ বানানো। কর্মশালার মাধ্যমে কিছু শুভাকাঙ্ক্ষী পাওয়া যায়। সবাই মিলে ভবিষ্যতে কাজ করলে অনকে বড় কিছু করা সম্ভব বলে আমি বিশ্বাস করি। আর ইচ্ছা ভবিষ্যতে বাংলাদেশে একটি ডাই প্রশিক্ষন কেন্দ্র স্থাপন করা।”

একই বিষয়ে অনিক কুন্ডু বলেন, “আমি নিজেও এ কর্মশালা করেছি চার বছর আগে ২০১৪ সালে। আর যার ফলাফল আমি এখনো পাচ্ছি। এই প্রথমবারের মত আমি কর্মশালার প্রশিক্ষক হিসেবে থাকছি আরিফ ভাইয়ের সাথে। ছবি আঁকার পাশাপাশি টুকটাক কারুশিল্পের প্রতি আগ্রহ ছিল ছোটবেলা থেকেই আর সেই থেকেই কাজ করার শুরু যা আরো বেগমান হয় চারুকলায় ভর্তির পর। আমি নিজেও পড়াশুনার পাশাপাশি অনলাইনে ছোটখাট একটা পেইজ দাঁড় করিয়েছি। এবং বেশ সাড়াও পেয়েছি। তবে একা কাজ করার ক্ষেত্রে কিছু বাধার সম্মুখীন হতে হয়। তবে আশা করি ভবিষ্যতে একটা ভাল গ্রুপ পাবো এই কর্মশালা গুলোর মাধ্যমে এবং আরো ভাল কিছু করতে পারব।”

 উল্লেখ্য, কর্মশালা প্রতিবছর চারুকলা প্রাঙনে হলেও এবার হবে ধানমন্ডি সেন্ট্রাল রোডে আরিফুল ইসলামের স্টুডিও তে। কর্মশালা শুরু হবে ১১ মে ২০১৮ থেকে। মোট ৮ টি ক্লাস এবং দুটি রিকভারি ক্লাস থাকবে। হ্যান্ডপেইন্ট এবং টাইডাই শেখানো হবে একাধিক কৌশলে। ফেইসবুক ইভেন্ট লিংক: https://www.facebook.com/events/167031483986539/?ti=cl

যোগাযোগ: ০১৫২১২৫১২৫৭ (অনিক কুন্ডু), ০১৬৭২২৭৭৭৮০ (আরিফুল ইসলাম)।

Tags: