মন্তোষ চক্রবর্তী, (অষ্টগ্রাম) কিশোরগঞ্জ ।। মেঘনা নদীতে ভয়াবহ ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে এবং এ ভাঙ্গনের ফলে দালানপাকা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, জমি জমা নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে ও হাওর অঞ্চলের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ সড়ক উন্নয়ন বাংগালপাড়া, ব্রাহ্মনবাড়িয়ার সড়ক পথের কাজ মারাত্নক ভাবে ভাবে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে।
ব্রাহ্মনবাড়িয়ার-১ আসনের সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম ও কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহমদ তৌফিক এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও ক্ষতিগ্রস্থ লোকজনের সাথে আলাপ করে জানা যায় ভৈরব বাজার থেকে প্রবাতি এই মেঘনা নদী হবিগঞ্জের কাকাইল চেও পর্যন্ত বিভিন্ন নাম ধারন করেছে। ভৌগিলিক কারণে নদীর তীরে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন গ্রামে পাড়া মহল্লা, সর্বোপরি হাটবাজার ও ছোটখানো নদী বন্দর। এই নদী থেকে বেশ কটি শাখা নদীও প্রবাহিত হয়েছে। নৌ-পথে যোগাযোগের ক্ষেত্রেও র্দীঘদিন যাবৎ অবদান রাখছে। সম্প্রত্তি ইটনা, মিঠামইন সংযোগ সড়কে কাজ প্রায় শেষ হয়ে গেছে। তা থেকে বাংগালপাড়া, চাতলপাড় ও ব্রাহ্মনবাড়িয়ার বিশ্ব রোডের কাজ চলছে। অন্যদিকে আজমিরীঞ্জ কাকাইল চেও সহ ভৈরব বাজার পর্যন্ত নৌপথে প্রতিদিন শত শত মানুষ যাতায়াত করছে। ট্রলার কারর্গো দিয়ে হাটবাজার ও নদী বন্দরগুলোর আমদানি রপ্তানি হচ্ছে। কিন্তু নদীতে বাঁশ কাটায় মাছের অভয় আশ্রয় সৃষ্টি উত্তর দিক থেকে প্রতিনিয়ত চলে আসা বালি ও পলিতে নদীর বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য চর সৃষ্টি হয়েছে। কোন কোন শাখা নদীর প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে এ অবস্থায় উত্তরের পানি দক্ষিনে, স্বাভাবিক প্রবাহ ও নৌ যোগাযোগে তরিত গতির জন্য ইছাপুরের কাছ থেকে গাজীহাটি ও কলমার কাছাকাছি একটি লুপকাটিং এর কাজ করা হয়েছে। বর্ষার পূর্বমুর্হুতে কালনী ও বরাকের পানি উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হওয়ায় এই লুপকাটিং এ মারাত্নক স্রোতের সৃষ্টি হয়েছে। নদীগুলোতে জেগে উঠা চর ও পানি নিষ্কাশনের স্বাভাবিক অবস্থা না থাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ড্রেজারে নদী সংস্কার করছে। পানির স্বাভাবিক প্রবাহ সঠিক হচ্ছে না এবং সংস্কারের গতি অত্যন্ত ধীর গতি। ফলে উত্তরে আসা পানির স্রোত বিভিন্ন স্থানে বাধাগ্রস্থ হয়ে ভয়াবহ ভাঙ্গনের সৃষ্টি করছে। ভাংগছে বাড়ি-ঘর জমিজমা। সম্প্রতি ভাংগন সৃষ্টি হয়েছে বাহ্মনবাড়িয়ার চাতলপাড় চক বাজারে। বাজারের দালান, দোকানপাট নদীতে তলিয়ে যাওয়ার পর আরও ভাংগছে। পাশ্ববর্তী ৩টি গ্রামের মানুষ তাদের বাড়ি ঘর জমি জমা নিয়ে চরম আতংক উকন্ঠায় দিনাতিপাত করছেন। ভাংগতে শুরু করেছে অষ্টগ্রাম, বাংগালপাড়া, নাসিরনগর ও ব্রাহ্মনবাড়িয়া বিশ্বরোড যোগাযোগের প্রকল্পের কাজ।
গত বুধবার ব্রাহ্মনবাড়িয়া-১ আসনের সংসদ সদস্য বিএম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ব্রাহ্মনবাড়িয়া নির্বাহী প্রকৌশরী শানিনুজ্জামান, নাসিরনগরের ইউএনও মোঃ মাসুদ পারভেজ মজুমদার সহ অনেকেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং বৃহস্পতিবার কিশোরগঞ্জের-৪ আসনের সাংসদ রেজওয়ান আহমেদ তৌফিক, অষ্টগ্রাম ইউএনও মোঃ সালাহ উদ্দিন সহ গন্য মান্য ব্যক্তিবর্গ এই স্থানটি পরিদর্শন করেছেন।
চক বাজারের পাশে ডেবে যাওয়া দালানের মালিক গনেশ রায় জানান বহু কষ্টে ৫ বছর আগে এই দালানটি তৈরী করে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছিলাম। এখন আমি বৃত্তহীন হয়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় গ্রহণ করেছি। বহু মানুষ আতংক উকণ্টায় দিন কাটাচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ব্রাহ্মনবাড়িয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী শাহিনুজ্জামান জানান আমাদের কাছে জরুরী কাজ করার মত কোন বরাদ্দ নেই। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগিত করেছি। বরাদ্ধ পেলেই কাজ শুরু করা হবে।
অপরদিকে এলজিইডি অষ্টগ্রামের উপজেলা প্রকৌশলী মাহাবুব মোর্শেদ জানান আমি এবং বাংগালপাড়া ব্রাহ্মনবাড়িয়া সংযোগ সড়কের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান প্রায়ই তিন মাস আগেই এ সড়ক পথ হুমকীর সম্মুখীন বলে জানিয়েছি। কিন্তু কোন প্রতিকার হয়নি। সংসদ সদস্য বৃন্দ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন বলে জানান।