muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

দেশের খবর

মাগুরায় নবম শ্রেণীর ছাত্রী ৬ মাসের অন্তসত্তা

শাহিনুর রহমান, যশোর ।।  মাসের অন্তস্বত্বা হয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে মাগুরার সদর উপজেলার রাঘোবদাইড় ইউনিয়নের সাংধা লক্ষীপুর গ্রামের এক হতদরিদ্র পরিবারের মাদরাসা পড়ুয়া ছাত্রী সে স্থানীয় দোহাকলা দাখিল মাদরাসার নবম শ্রেণির ছাত্রী বলে জানাগেছে। এব্যাপারে মেয়েটির মা আন্না বেগম বাদী হয়ে মাগুরা আদালতে ২০০০ সালের নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনের () ৩০ ধারা অনুযায়ী একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলার আসামী করা হয়েছে মৃত ছামেদ মোল্যার পুত্র মোঃ তফসের মোল্যা(৬০), পাতা মোল্যার কন্যা রিভা খাতুন পাতা মোল্যার স্ত্রী কমলা খাতুনকে।

জানা যায় কয়েক শতক জমির উপর ছোট একটি টিনের সাবড়া ঘর করে প্রতিবন্ধী নানার বাড়ীতে বসবাস করে আসছে অসহায় মেয়েটি। প্রতিবন্ধী নানা দীর্ঘ দিন যাবত কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। কিন্তু পার্শবর্তী ঝিনেদাহ উপজেলার দিঘীরপাড় গ্রামের তফসির মোল্যা(৬০) নামের এক ব্যক্তি নবম শ্রেণির অসহায় মেয়েটিকে ডেকে নিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কয়েক বার জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এতে সে প্রায় মাসের অন্তসত্তা হয়ে পড়লে মেয়েটির মা তার প্রতিবন্ধী নানা তফসের মোল্যার বাড়ীতে গিয়ে সব কিছু খুলে বলেন। পরে উভয় পরিবারের সম্মানের দিকে তাকিয়ে মেয়েকে বিবাহের প্রস্তাবও দেয় তারা। কিন্তু তিনি ঘটনাটি সম্পূর্ন অস্বীকার করে বিবাহের প্রস্তাব নাখোশ করে দিয়ে মেয়েটির পরিবারের লোক জনদেরকে খুন জখম সহ বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখায়। এরপর গ্রামের মাতুব্বরদের কাছে কয়েকবার সালিশ বিচারের দাবী জানালে তারা কেউ সালিশে হাজির হয়নি বলে মেয়েটির মা আন্না বেগম জানান।

এব্যাপারে অসহায় মেয়েটির সাথে কথা বললে সে সাংবাদিকদের জানান, একই গ্রামের পাতা মোল্যার কন্যা রিভা খাতুন আমাকে তাদের বাড়ীতে ডেকে নিয়ে যায় এবং বলে যে একটি বই তোমাকে দেখানো দরকার। এই বলে তাদের বসবাসের পশ্চিম পোতার ঘরের মধ্যে নিয়ে গিয়ে খাটের উপর বসতে দিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে ছিটকানী লাগিয়ে দেয়। তখন লম্পট তফসির মোল্যা ঘরের মধ্যে আগে থেকেই লুকিয়ে ছিলো। হঠাৎ করে সে আমাকে ঝাপটে ধরে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে পরনের কাপড় খুলে জোর করে ধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে সে আমাকে বলে যদি কোন লোকজনকে এই কথা বলিশ তাহলে তোকে সহ তোর পরিবারের লোকজনদেরকে জীবনে শেষ করে ফেলবো। আমি লজ্জায় ভয়ে এই কথা কাউকে বলতে পারিনি। ঘটনার কয়েক দিন পর আমার মাদরাসা বন্ধ থাকায় আমি বাড়ীতে ছিলাম। আমার প্রতিবন্ধী নানা নানী বাড়ীতে ছিলোনা। হঠাৎ করে তফসের মোল্যা আমাদের বাড়ীতে আসে। এরপর আমার শোয়ার ঘরে ঢুকে পূনরায় আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। আমি তার হাতে পায়ে ধরেছিলাম আমার ইজ্জত বাঁচানোর জন্য। কিন্তু সে আমাকে আবারও নানা ভয়ভীতি দেখায়। এরপর আসতে আসতে আমি গর্ভবর্তী হয়ে পড়ি। এখন আমি মাসের গর্ভবর্তী আমি এই কলংকিত জীবন নিয়ে কোথায় যাবো ভেবে পাচ্ছিনা। পরে আমার নানা নানিকে ঘটনাটি খুলে বলি। আমার মা আন্না বেগম ঢাকায় ছিলেন তাকে বাড়ীতে আসতে বলি। এরপর সব ঘটনা আমার মাকেও খুলে বলি। ঘটনার বিস্তারিত শুনে আমার মা নানা তফসের মোল্যার বাড়ীতে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যায়। কিন্তু তিনি আমার মা নানা নানিকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ সহ নানা ধরনের অপমান অপদস্ত করে তাড়িয়ে দেয়। এরপর বিষয়টি নিয়ে আমার পরিবার গ্রামের মাতুব্বরদের কাছে বিচারের দাবী জানালে তারা কোন প্রকার বিচার করছেনা। এমনকি কয়েকবার গ্রাম্য সালিশ ডাকলেও সালিশে মাতুব্বরা হাজির হয়নি। এমনকি তফসের মোল্যাও সালিশে আসেনি। পরে দিশেহারা হয়ে আমার মা বাদী হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। এখন মামলা করার পরও তফসের মোল্যা সহ ঘটনার সাথে জড়িতরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এমনকি এখন পর্যন্ত আদালত থেকে কোন ওয়ারেন্ট আসেনি আসামীদের বিরুদ্ধে। আমি এখন কি করবো বুঝতে পারছিনা। ্একদিকে পেটের সন্তানের স্বীকৃতি পাচ্ছিনা। অন্যাদিকে আইনের কাছে বিচার চেয়ে ঠিকমত বিচার পাচ্ছিনা।

মেয়েটির মা আন্না বেগম কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে বলেনআমার কন্যার পিতা নেই। আমি থাকি প্রতিবন্ধী পিতার বাড়ীতে। আমার এই মেয়ে নিয়ে আমি কোথায় যাবো। কি করবো। আমার মেয়ের যে এতো বড় সর্বনাশ করেছে তার কঠিন শাস্তির দাবী জানাচ্ছি। আল্লাহ তুমি তার বিচার করো।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামের একাধিক ব্যক্তি জানান, তফসের মোল্যার ৬০থেকে ৬৫ বছর বয়স। সে এই বয়সে এমনটি করবেন আমরা ভাবতে পারিনি। তবে ঘটনাটি ১০০% সত্য। আমরা তার কঠিন শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।

তবে এব্যাপারে অভিযুক্ত তফসের মোল্যার বক্তব্য নিতে তার বাড়ীতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি ঘরের দরজায় তালা দেখে প্রতিবেশিদের কাছে জানতে চাইলে তারা সাংবাদিকদের বলেন’ পাশের গ্রামের একটি মেয়েলি সমস্যা নিয়ে তফসের মোল্যা এলাকা থেকে গা ঢাকা দিয়েছে ৷

Tags: