muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

আন্তর্জাতিক

উত্তর প্রদেশে কোরবানির সেলফি নিষিদ্ধ

ঈদের কোরবানি দিয়ে সেলফি তোলার ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশের রাজ্য সরকার। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবর থেকে এ কথা জানা গেছে। মঙ্গলবার সেখানে ঈদুল আজহায় প্রকাশ্যে কোরবানি ও ড্রেনের মধ্যে রক্ত ফেলা নিষিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছিল।

বুধবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি অনলাইনের বাংলা ভার্সনে বলা হয়, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ রাজ্যের সব জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারিন্টেডেন্টদের নিয়ে এক ভিডিও কনফারেন্স করে জানিয়েছেন যে পশু কোরবানি দিয়ে কেউ যেন সেলফি তুলে সামাজিক মাধ্যমে তা পোস্ট না করেন। সে দিকে প্রশাসনকে কড়া নজর রাখতে বলা হয়েছে। উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক বছর গুলোতে অনেকেই কোরবানির ছবি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে থাকেন, যেটা শুধু মুসলমানরা নয়, অনেক কম বয়স্ক বা অন্য ধর্মের মানুষজনেরও নজরে পড়ে। এ নিয়ে ফেসবুকে বিতর্কও চোখে পড়ছে গত কয়েক বছর ধরেই।

মঙ্গলবার টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়, শনিবার (১৮ আগস্ট) এক ভিডিও কনফারেন্সে যোগী আদিত্যনাথ প্রকাশ্যে কোরবানি না দিতে নির্দেশনা জারি করেন। তিনি বলেন, অন্যান্য সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে যেন আঘাত না লাগে সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। একই সঙ্গে যোগী সংরক্ষিত প্রাণী যাতে কোরবানি না দেওয়া হয় তা নিশ্চিত করতেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। খবরে বলা হয়, তার নির্দেশনায় আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ, পানি ও বিদ্যুত সরবরাহ নির্বিঘ্ন ও নিরবচ্ছিন্ন করার কথাও বলা হয়েছে।

প্রকাশ্যে কোরবানি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তে উত্তরপ্রদেশের মুসলমানদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। এটাওয়ার একজন হোটেল মালিক খুর্শিদ আহমেদ সংবাদ এজেন্সিকে জানিয়েছেন যে কোরবানি তো নিয়ম অনুযায়ী ঢাকা জায়গাতেই করার কথা। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে সেটাই হয়। আর কোরবানির সেলফি তোলা তো একেবারে হালের ফ্যাশান। এর সঙ্গে ধর্মের কোনও যোগ নেই। অল ইন্ডিয়া মুসলিম উইমেন্স পার্সোনাল ল বোর্ডের প্রধান শাইস্তা অম্বর লক্ষ্ণৌতে একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেছেন নারীদের জন্য। তিনি বলছেন, “খোলা জায়গায় কোরবানি দেওয়া অথবা সেখানে যে রক্ত পড়ে থাকে, সেটা বেশ অস্বাস্থ্যকর। অনেকেই ওসব দেখে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাই এটা না করাই উচিত। তবে মুখ্যমন্ত্রীর উচিত ছিল এইসব নিষেধাজ্ঞা জারি করার আগে সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে নেওয়া।”

মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের শহর বলে পরিচিত গোরখপুরে যেখানে তার মন্দির, তার পিছনেই থাকেন মুহম্মদ ইসলাম।তিনি বলছেন, “ঘেরা জায়গাতেই কোরবানি দেওয়া হয়ে থাকে প্রায় সব ক্ষেত্রেই। জায়গাটা পরিষ্কারও রাখা হয়, জল ঢালা হয় মাঝে মাঝেই। তবে কোরবানি দিলে কিছু রক্ত তো গড়িয়ে নালা-নর্দমায় যাবেই! কিন্তু তার জন্য এতরকমের নিষেধাজ্ঞা জারি করার কি আদৌ দরকার ছিল?”গোরখপুরে কোরবানির পর রাস্তা পরিষ্কার রাখায় কড়া নজরদারি চালাচ্ছে প্রশাসন

গোরখপুরেরই আরেক বাসিন্দা পারভেজ পারওয়াজ মনে করেন যে মুসলমানরা আগে থেকেই যেসব নিয়ম কানুন মেনে কোরবানি দেন, সেগুলোর ওপরেই আবার করে নিষেধাজ্ঞা জারি করার কোনও প্রয়োজন ছিল না। এটা মুসলমানদের প্রতি একটা বার্তা দেওয়া হচ্ছে বলেই তার মত। তবে যোগী আদিত্যনাথের এমন নির্দেশনার প্রতিক্রিয়ায় সমাজবাদী পার্টির মুখপাত্র জুহি সিং ইন্ডিয়া টুডে’কে বলেছেন, ‘ কোনও ঈদেই সংরক্ষিত প্রাণী কোরবানি করা হয় না। এই ধরনের নির্দেশনা মুখমন্ত্রীর অসহিষ্ণুতার বহিঃপ্রকাশ। তিনি অপ্রয়োজনীয় বিতর্ক সৃষ্টির চেষ্টা করছেন।’

 

 

Tags: