muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

দেশের খবর

বেশি দামে চামড়া কিনে বিপাকে রাজশাহীর ব্যবসায়ীরা

ক্ষতির আশঙ্কা মাথায় রেখেই এবার সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে চামড়া কিনে বিপাকে পড়েছেন রাজশাহীর ব্যবসায়ীরা। দিনব্যাপী ফড়িয়া ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে তারাও এ পথে পা বাড়িয়েছেন। ফলে এবার চামড়া নিয়ে লাভের চেয়ে লোকসানের পাল্লাই ভারী হবে বলে দুর্ভাবনা ভর করেছে ব্যবসায়ীদের মনে।

এ বছর সরকার ঢাকায় লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম ফুট প্রতি ৪৫ থেকে ৫০, ঢাকার বাইরে ৩৫ থেকে ৪০, খাসি ১৮ থেকে ২০ এবং বকরির চামড়ার দাম ১৩ থেকে ১৫ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছিল। কিন্তু বর্গফুট নয় আকারের ওপর নির্ভর করে নির্ধারিত দামের চেয়ে গড়ে চামড়া প্রতি ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকা বেশি দিয়ে বুধবার বৃহস্পতিবার
দিনব্যাপী রাজশাহী নগরীর পাড়া-মহল্লা ঘুরে চামড়া কিনেছেন ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা।

মহানগরীর শিরোইল কলোনি এলাকার ফড়িয়া চামড়া ব্যবসায়ী আবদুল মজিদ জানান, পাড়া-মহল্লা থেকে গড়ে দুই হাজার থেকে ২৩শ’ টাকা দামে কাঁচা চামড়া কিনেছেন। তাদের কাছে বর্গফুটের কোনো হিসাব নেই। আড়তদাররাও এবার তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চামড়া কিনেছেন বলে জানান তিনি। ফলে লাভ হলে উভয়েরই হবে, না হলে ক্ষতি। দু’পক্ষেরই ঝুঁকি রয়েছে বলে জানান মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ী আবদুল মজিদ।

রাজশাহী চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের সভাপতি আসাদুজ্জামান মাসুদ জানান, অদৃশ্য সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পাড়া-মহল্লা থেকে ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা ঈদের প্রথম দিনে প্রায় ৮০ ভাগ চামড়াই কিনে নিয়েছেন। ওই চামড়ার একটি বড় অংশ এখনও তাদের হাতে রয়েছে। বেশি দাম চাওয়ায় লোকসানের ভয়ে তাদের কাছ থেকে চামড়া কিনছে না আড়তগুলো। ফলে তারা চামড়া নিয়ে এখনই বেকায়দায় পড়েছেন।

মাসুদ জানান, ফড়িয়া ব্যবসায়ীদের ঠেকাতে গিয়ে আকারের ওপর ভিত্তি করে প্রকৃত ব্যবসায়ীরাও ২শ’ থেকে ৩শ’ টাকা বেশিতে চামড়া কিনেছেন। ফলে এবার তারাও কোরবানীর চামড়া নিয়ে দুর্ভাবনায় পড়েছেন। এরপরও তারা ব্যবসার খাতিরে বেশি দামে চামড়া কিনছেন।

রাজশাহী চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রউফ বলেন, সাধারণত প্রতি বছর ঈদে ৮০ থেকে ৯০ হাজার গরু-মহিষ ও প্রায় দেড় লাখ খাসি-ভেড়া কোরবানি হয় জেলায়। বিপুল পরিমাণ এই চামড়া তারা কিনে
লবণ দিয়ে কয়েকদিন সংরক্ষণের পর নাটোরের আড়তগুলোতে নিয়ে যান। ঢাকার ট্যানারি মালিকরা সেখান থেকে চামড়া কিনে নিয়ে যান। তিনি জানান, একটি বড় গরুর চামড়া স্বাভাবিকভাবে ২৮ ফুট হয়। সরকারি
হিসাবে সেই চামড়ার দাম আসে এক হাজার ১২০ টাকা।

আব্দুর রউফ আরো বলেন, চামড়ার দামের চেয়ে প্রসেসিং ও রক্ষনাবেক্ষন খরচ বেশি। এতে করে ব্যবসায়ীদের লোকসানের আশংকা রয়েছে। এবারো মৌসুমি ব্যবসায়ীদের কারণে অনেকটাই বেশি দামে চামড়া কিনতে হয়েছে। এবার চামড়া ব্যবসায়ে শেষ পর্যন্ত কি দশা হবে সেটা নিয়েও অজানা আশঙ্কা রয়েছে।

তিনি বলেন, মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে চামড়া কিনেছেন। কিন্তু তাদের হাতে চামড়া গেলে অনেক সময় কোনো খোঁজ থাকে না। অনেকেই আছেন যারা ক্ষতি সামলিয়ে চামড়া বিক্রি করবেন না। ফলে দাম না পেলে শেষ পর্যন্ত তারা সীমান্ত দিয়ে চামড়া পাচারের চেষ্টা করবেন বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন এই ব্যবসায়ী নেতা।

Tags: