muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

কটিয়াদী

কটিয়াদীতে অদম্য রুবেলের স্বপ্ন অধরা!

বার বার সামনে দাঁড়িয়েছে দারিদ্র্য আর হতাশা। তবুও থেমে নেই পথচলা। যেন অধরা স্বপ্নকে ধরতে হবে, আর সেই স্বপ্নের পেছনে ছুটে চলা এমনই এক অধম্য মেধাবী শিক্ষার্থী কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার আচমিতা ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন রুবেল মিয়া। আচমিতা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া একমাত্র বৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থী চৌদ্দ বছরের কিশোর রুবেল মিয়া। ৩ ভাই আর ৪ বোনের মধ্যে রুবেল মিয়া সবার ছোট। বোনদের বিয়ে হয়ে গেছে। ভাই ২ জন আগেই বিয়ে করে আলাদা থাকেন। আর রুবেল তার মা’কে নিয়ে একসাথে থাকেন।

বাবা আলতু মিয়া মারা গেছেন ছোট বেলায়। মাত্র ১বছর বয়সে বাবাকে হারিয়েছে রুবেল। তারপর থেকেই তার ভাগ্যে একেরপর এক দারিদ্র্য। তবুই থেমে নেই এই শিক্ষার্থী। একদিকে পড়াশোনা অন্য দিকে সংসারের পুরো দায়িত্ব মাথায় নিয়ে অধম্য মেধাবী রুবেলের এভাবে এগিয়ে যাওয়া অনেকটা কষ্টদায়ক হলেও প্রতিশ্রুতি ছাড়া কিছুই পায়নি রুবেলের পরিবার। রাজমিস্ত্রীর যোগালি দিয়ে সংসার চালাচ্ছেন এই অধম্য শিক্ষার্থী ।

সপ্তাহে কয়েকদিন এলাকায় কখনো ২০০ টাকা আবার কখনো ২৩০ টাকা মজুরিতে রাজমিস্ত্রীর যোগালি হিসেবে কাজ করে রুবেল। সেই টাকা দিয়েই চলে ভাঙ্গা ঘরে অসুস্থ বৃদ্ধ মায়ের ভরণ-পোষণ আর অসুস্থ মায়ের চিকিৎসা, সংসার এবং লেখাপড়ার যাবতীয় খরচ।

মা ফিরোজা বেগম মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডটকমের এই প্রতিদবেদক বলেন, শিশু বয়স থেকেই পড়াশোনার প্রতি তুমুল আগ্রহ রুবেলের। আচমিতা স্কুল থেকে সে জিপিএ-৫ পাওয়া একমাত্র বৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থী। এরপর সে মেধা তালিকায় মেধার স্বাক্ষর রেখেছে।

ফিরোজা বেগম কান্নাস্বরে আরো বলেন,‘ঘরের চালে বড় বড় ছিদ্র। একটু বৃষ্টি হলেই বিছানা আর ওর বইপত্র ভিজে একাকার হয়ে যায়। সেদিনের বৃষ্টিতেও বইগুলো ভিজে গেছে,রৌদ্রে শুকিয়ে তা ঘরে রাখছি’।

জিপিএ-৫ পাওয়া অধম্য মেধাবী রুবেল মিয়া জানান, মা’র আগ্রহ আর শিক্ষকদের সহযোগিতার কারণে ভালো ফলাফল করতে পেরেছি। অভাবের সংসারে ভরণ-পোষণের পর লেখাপড়ার খরচ জোগানো অনেক কঠিন। তাই লেখাপড়া নিয়ে প্রতি মূহুর্তে শঙ্কায় রয়েছেন বলে জানান রুবেল মিয়া।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আচমিতা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.সোহরাব উদ্দিন বলেন, ‘রুবেল অত্যান্ত মেধাবী ছাত্র। তার কাছে কোন বেতন নেয়া হয়না। আমরা চেষ্টা করি তাকে সহযোগীতা করতে। তবে সে যদি শিক্ষার সুযোগ সুবিধা ভাল পেত তবে সে আরও ভাল করত।’

তিনি আরো বলেন, আমার বিশ্বাস রুবেল মিয়ার সাহায্যে সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে তার পথচলা সুগম হবে। কটিয়াদী উপজেলা আওয়ামী সেচ্ছাসেবকলীগের সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক মো.নুরুল হক বলেন,পড়াশোনায় আগ্রহী শিক্ষার্থীদের পাশে থাকতে সমাজের বিত্তমানদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

 

Tags: