muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

দেশের খবর

বিআইআইটি কর্তৃক আরবি নববর্ষ উদযাপন

প্রেস বিজ্ঞপ্তি ।। আরবি নববর্ষ উপলক্ষ্যে অদ্য ১৫ই সেপ্টেম্বর ২০১৮ শনিবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক থ্যট (বিআইআইটি), উত্তরাস্থ নিজস্ব মিলনায়তনে “হিজরী নববর্ষ ১৪৪০: এর তাৎপর্য ও প্রভাব” শীর্ষক একটি সেমিনারের আয়োজন করে। সেমিনারে সভাপত্তিত্ব করেন বিআইআইটি-এর নির্বাহী পরিচালক ড. এম আব্দুল আজিজ।

উক্ত সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রফেসর মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। শিক্ষা বিভাগ, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আল্লামা ফয়জুল্লাহ আমান মুফতি, ইকরা বাংলাদেশ ও ড. শামসুদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক মেকানিকেল এ- মেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং (এম.সি.ই) ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি (আই.ইউ.টি) ও আই. সি।

প্রফেসর মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম তাঁর মূল প্রবন্ধে বলেন- হিজরী নববর্ষ মুসলিম উম্মাহর জীবনে ও ইসলামের ইতিহাসে একক কোনো ঘটনা হিসেবে দেখলে চলবে না বরং ইসলামের ইতিহাসে হিজরত ও হিজরী সনের একটি সমন্বিত রূপ অনুধাবন করতে হবে। মুসলিম সমাজ ও সভ্যতায় হিজরতের একটি ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। হিজরী সনের গণনা শুরু হয় ১৭ হিজরীতে হযরত উমর (রা)-এর সাসন আমল থেকে এবং বর্তমান বিশ্বে Lunar Calendar হিসেবে পরিচিত। Calendar শুধু Calendar ই নয় এটা সামগ্রিক সভ্যতাকে ধারন করে। যার ফলে এটা ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাষ্ট্রিয় জীবনকে প্রভাবিত করে। পরিশেষে Solar Calendar এবং Lunar Calendar পদ্ধতির সুবিধা, অসুবিধা ও গণনার বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যাখ্যা করেন।

ইকরা বাংলাদেশ-এর মুফতি আল্লামা ফয়জুল্লাহ আমান মূল প্রবন্ধের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন- হিজরত সম্পর্কে মুসলমানদের মধ্যে বিভিন্নতা রয়েছে এবং বিভিন্ন ইসলামি চিন্তাবিদ বিভিন্ন মতদেন। তবে সমসাময়িক চিন্তাবিদগণ Lunar Calendar সম্পর্কে অনেক চিন্তাভাবনা করছেন এবং বর্তমান বিশ্বে এর সঠিক ও ব্যাপক প্রয়োগের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। যার ফলে অচিরেই Lunar Calendar বর্তমান বিশ্বে অবশ্যই জনপ্রিয়তা অর্জন করবে।

ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলোজির অধ্যাপক জনাব ড. শামসুদ্দিন আহমেদ রোমান, চাইনিজ, ঈসায়, জুলিয়ান, গ্রেগরীয় ও Lunar Calendar এর উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ এবং এই সকল পদ্ধতির সুবিধা ও অসুবিধা আলোচনা করেন। সম্মানিত আলোচক সর্বোপরি Lunar Calendar কেই সবচেয়ে সহজ এবং আধুনিক পদ্ধতি হিসেবে ব্যাখ্যা করেন এবং বলেন Lunar Calendar এর ব্যপক ও বহুল প্রয়োগের মাধ্যমেই মুসলিম সমাজের অনেক সমস্যার সমাধান হবে। সুতরাং আমাদের সকলকেই Lunar Calendar কেই আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রে ব্যপক প্রয়োগের চেষ্টা করতে হবে এং এর সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে আমাদের ব্যাপক প্রচার চালাতে হবে।

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে বিআইআইটি-এর উর্ধ্বতন সহকারী পরিচালক জনাব মাহফুজার রহমান বলেন- নববর্ষ হলো নব জীবনের প্রতীক। অতীতের শোক-তাপ, ভুল-ভ্রান্তি আর ব্যর্থতার গ্লানি ভুলে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নতুন করে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় প্রতিবছর সাড়ম্বরে, উৎসব আমেজে ইংরেজি ও বাংলা নববর্ষ উদযাপিত হলেও হিজরি নববর্ষ মুসলিম প্রধান এ বাংলাদেশে প্রায় অবহেলিত, উপেক্ষিত এবং এ হিজরি নববর্ষ কোন মাস থেকে শুরু হয় তাও আমাদের কাছে প্রায় অজানা। অথচ এ হিজরি সাল ইসলাম ও মুসলমানদের ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত নিজস্ব সাল। ইসলামের ইতিহাসে প্রিয়নবির দেশ ত্যাগের ঘটনার ঐতিহাসিক স্মৃতিবহন করছে হিজরি সন।

ইসলামের বিধিবিধান, মুসলিম উম্মাহর ইবাদত-বন্দেগি তথা রমজানের রোজা, ঈদ, হজ, কুরবানিসহ নানা যে বিষয় নির্ধারিত হয়; বিশ্বব্যাপী শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে প্রথম লিখিত যে সংবিধান ‘মদিনার সনদ’ এ সবই হিজরতের ফলাফল। মুসলিম উম্মাহর ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও সভ্যতায় হিজরি সনের গুরুত্ব অপরিসীম। আমরা মনে না রাখলেও যুগ পরিক্রমায় মুসলিম উম্মাহ অতিক্রম করেছে ১৪৩৯টি হিজরি বছর। গত ১২ ই সেপ্টেম্বর ২০১৮ রোজ: বুধবার ছিল হিজর ১৪৪০ বর্ষের প্রথম দিন।

সেমিনারটি পরিচালনা করেন বিআইআইটি-এর সহকারী পরিচালক মু. ইকবাল হোসেন এবং উপস্থিত ও আমন্ত্রিত সদস্যবৃন্দের ধন্যবাদ জ্ঞাপন ও সেমিনারের সমাপ্তি ঘোষণা করেন বিআইআইটির সহকারী পরিচালক মো. রকিবুল ইসলাম।

সভাপতির বক্তব্যে বিআইআইটি-এর সম্মানিত নির্বাহী পরিচালক ড. এম আব্দুল আজিজ বলেন- হিজরত বা হিজরী নববর্ষ ইসলামের ইতিহাসে ও মুসলমানদের জীবনে অনেক গুরুত্ব বহন করে। হিজরতের মাধ্যমে ইসলাম ব্যাক্তিগত (Individual Practice) পর্যায় থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে (State Practice) পদার্পন করেছে এবং হিজরত মানে কেবল দেশত্যাগ করাকেই বুঝায় না বরং একটি অবস্থা থেকে আরেকটি অবস্থায় সরিয়ে নেওয়া বুঝায়। যেমন- কুফর থেকে তাওহীদ নাস্তিকতা থেকে আস্তিকতা এবং খারাপ থেকে ভালো।

Tags: