muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

অপরাধ

তাসফিয়ার মৃত্যুর কারণ আত্মহত্যা : চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল

স্কুলছাত্রী আলোচিত রহস্যাবৃত তাসফিয়ার মৃত্যুর কারণ আত্মহত্যার। পুলিশের তদন্ত, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট, ভিসেরা রিপোর্ট এবং সাক্ষীদের দেওয়া তথ্যমতে আত্মহত্যা হিসেবেই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন নগর ডিবির তদন্তকারী কর্মকর্তা।

চূড়ান্ত রিপোর্ট থেকে জানা যায়, ৭জন প্রত্যেক্ষদর্শী সাক্ষীর ভিত্তিতে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্ত রিপোর্টের উপর নির্ভর করেই আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হচ্ছে।

গত ২ মে (বুধবার) সকালে তাসফিয়ার মরদেহ নগরীর পতেঙ্গা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। আগের দিন মঙ্গলবার রাতে তাকে পতেঙ্গা সৈকতের ১৮ নম্বর ঘাটে দেখে স্থানীয়রা। তাসফিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় প্রেমিক আদনান মির্জাসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো পাঁচ-ছয়জনের বিরুদ্ধে পতেঙ্গা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন তাসফিয়ার বাবা ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আমিন।

তাসফিয়ার ধর্ষণ এবং বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে কিনা তা জানতে ভিসেরা রিপোর্ট ও ময়নাতদন্ত তদন্ত রিপোর্টও গোয়েন্দা পুলিশের হাতে রয়েছে। ময়নাতদন্তে তাসফিয়ার মৃত্যু পানিতে ডুবে হয়েছে এমনটি ধারণা করা হচ্ছে। কারণ তাসফিয়ার পেটের মধ্যে প্রচুর পানি পাওয়া গেছে। শ্বাসনালীতে রয়েছে কাদাময়লা।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক স্বপন সরকার বলেন, ভিসেরা রিপোর্টে তাসফিয়ার শরীরে বিষক্রিয়ার কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি, ধর্ষণের কোন প্রমাণও নেই। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পানিতে ডুবে মৃত্যু হওয়ার দিকেই। এছাড়াও এ মামলার সব আসামি গ্রেফতার আছে। তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সব তথ্য রিপোর্টে বুঝা যাচ্ছে এটি আত্মহত্যা।

চূড়ান্ত প্রতিবেদনে ওই দিন সৈকতে ঘুরতে যাওয়া মো. খুদরুত ই ইলাহী, আশিকুর ইসলাম, এম এ খান আন্না, আবু তাহের, নুরুল আবছার, নুর হোসেন, এবং বোট মাঝি লোকমান হোসেন, তৈল ব্যবসায়ী হারুণ, কৃষক মো.হোসেন, চা দোকানদার মো.মুনছরকে সাক্ষী হিসেবে অন্তভুর্ক্ত করেছেন।  এ সাক্ষীর তালিকায় মোট ১৬ জন রয়েছেন।

এ ব্যাপারে নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার (বন্দর) মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ বলেন, তাসফিয়ার মৃত্যুর কারণ হলো আত্মহত্যা।

এ মামলায় আদনান মির্জা ও আসিফ মিজান, ফিরোজ গ্রেফতার রয়েছে পুলিশের হাতে।  শুরুতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন পতেঙ্গা থানার উপপরিদর্শক আনোয়ার হোসেন।  এছাড়াও এটি একটি আলোচিত ঘটনা হওয়ায় ছায়া তদন্তকারী হিসেবে কাজ করছে র‌্যাব, সিআইডি ও পিবিআই।

তাসফিয়ার মৃত্যুর কারণ নির্ণয় না হওয়ায় অন্ধকারে ঘোরপাক খাচ্ছিলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।  ফলে সর্বশেষ মামলাটি তদন্ত করার জন্য গোয়েন্দা পুলিশকে দেওয়া হয়।

গত ২৯ জুলাই তাসফিয়ার প্রেমিক আদনানকে আদালত প্রাঙ্গণে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।  আদালতে আদনানের রিমান্ড শুনানির পর আদালত প্রাঙ্গণে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয় নারী ও শিশু আদালতের (পঞ্চম) বিচারক জান্নাতুল ফেরদৌস।

এতে আদনানের কাছ থেকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জানতে চান-তাসফিয়ার দ্বিতীয় প্রেমিক আছে কিনা ? তাসফিয়ার পারিবারিক অশান্তি কি ?

নগরীর গোলপাগাড় মোড়স্থ চায়না গ্রীল রেস্টোরেন্ট থেকে জিইসিমোড়স্থ জাকির হোসেন রোডের বাসায় ফেরার পথে নিখোঁজ হন তাসফিয়া।  ফলে চায়না গ্রীলে উঠার সময় প্রায় ১১ মিনিট সময়  আদনান কোথায় ছিল? এসব প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক স্বপন সরকার।  সব তদন্ত শেষ করেই রোববার ১৬ সেপ্টেম্বর এ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন আদালতে।

Tags: