muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

কুলিয়ারচর

কুলিয়ারচরে প্রধান শিক্ষক কর্তৃক নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালে এক ছাত্র

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে প্রধান শিক্ষক কর্তৃক নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে ফয়সাল (১৪) নামে এক স্কুল ছাত্র গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালের বেডে যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে। ওই ছাত্র উপজেলার পৌর এলাকার কুলিয়ারচর বাজার ব্যাপারীপাড়া মহল্লার মোঃ মনু মিয়ার ছেলে। সে কুলিয়ারচর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র। বৃহস্পতিবার (২০সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিদ্যালয়ে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয় ওই ছাত্র।

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, ছাত্র ফয়সাল প্রতিদিনের ন্যায় বৃহস্পতিবার সকালে স্কুলে যায়। দুপুর ১২ টার দিকে ফয়সাল স্কুল ফাকি দিয়ে বাড়ি চলে যাইতে দেখে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহ্‌ মোঃ ফজলুল হক ওই ছাত্রকে বিদ্যালয়ের গেইট থেকে ধরে নির্মম ভাবে বেত্রাঘাত করতে করতে অফিসে নিয়ে দরজা বন্ধ করে বেত্রাঘাত করে ফ্লোরে ফেলে ছাত্রের বুকে একাধিক লাথি মারে। নির্মম আঘাতের ফলে ওই ছাত্র জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তার সহ পার্টিরা গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করে। চিকিৎসারত অবস্থায় কিছুটা সুস্থ্য হলে হাপাতালে ওই ছাত্র উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাউসার আজিজ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মুর্শিদ উদ্দিন আহমেদ ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মোঃ জিল্লুর রহমানের নিকট শরীরের আঘাতের চিহ্ন দেখিয়ে অভিযোগ করে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার দাবি করে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে কথা হয় ওই ছাত্রের সাথে। তখন যন্ত্রনায় কাতরাতে কাতরাতে সে বলে, আউট ড্রেস পড়ে বিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম এ জন্য স্যার আমাকে মারবে ভয়ে বিদ্যালয় থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় প্রধান শিক্ষক স্যার আমাকে জালি বেত দিয়ে নির্মম ভাবে মারতে মারতে অফিসে নিয়ে দরজা বন্ধ করে বেত দিয়ে মারে এবং আমার বুকে কয়েকটি লাথি মারে। আমি আঘাতের যন্ত্রনায় কাদতে কাদতে স্যারের পায়ে জড়িয়ে ধরে অনেক আকুতি মিনতি করে বলেছিলাম স্যার আমি আর পালিয়ে যাবোনা আমাকে মাফ করে দেন। স্যার আমার কথার কোন কর্ণপাত না করে আমাকে নির্মম ভাবে মেরেছে। এ ব্যাপারে আমি ইউএনও স্যার সহ অনেকের নিকট বিচার দিয়েছি।

হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত ডাঃ মোঃ মামুনুর রশিদ বলেন, ওই ছাত্রকে অতিরিক্ত মারধরের কারনে ভয়ে ও মনষিক চাপে ছাত্রের শ্বাস কষ্ট দেখা দিয়েছে।

হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ওই ছাত্রের বুকে ও শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং চিহ্ন গুলো খুবই মারাত্বক।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহ্‌ মোঃ ফজলুল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ওই ছাত্রকে মারার কথা স্বীকার করে বলেন, ফয়সাল স্কুল ফাকি দিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিল। তার বাবার কথায় তাকে মেরেছি।

স্কুল ছাত্রের বাবার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ছাত্রের মা নাজমা বেগমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ফয়সালের বাবা বলেছিল দুষ্টামী করলে শ্বাসন করার জন্য কিন্তু এভাবে মারার জন্য নয়। ছেলের বাবা যদি বলে ছেলেকে মেরে ফেলার জন্য তাহলে কি ওই শিক্ষক আমাদের ছেলেকে মেরে ফেলবে?

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাউসার আজিজ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ফয়সালের মৌখিক অভিযোগ পেয়ে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে আমার অফিসে ডেকে এনে জিজ্ঞাসা করলে তিনি ওই ছাত্রকে মারার কথা স্বীকার করে আমার নিকট ক্ষমা চেয়েছে। আমি ওই শিক্ষককে বলেছি ওই ছাত্রের পিতা মাতার নিকট ভুল স্বীকার করার জন্য নতুবা আমি আইনগত ব্যাবস্থা নিবো।

Tags: