muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

রাজনীতি

রাসিকের দায়িত্ব নিলেন মেয়র লিটন

স্মরণকালের জাকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব নিলেন মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। বিপুল সংখ্যক নগরবাসী ও বিশিষ্ট নাগরিকদের উপস্থিতিতে শুক্রবার বিকেলে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তিনি। এসময় সিটি করপোরেশনের ৪০ জন কাউন্সিলরও সবার হাতে হাত রেখে উন্নয়নে নগরীকে এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যায় ব্যক্ত করেন।

রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার নূর-উর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত দায়িত্ব গ্রহণ অনুষ্ঠানে রাসিকের প্যানেল মেয়র আনোয়ারুল আজিম আজবের কাজ থেকে দায়িত্ব গ্রহণ করেন মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।

অনুষ্ঠানে রাজশাহী সদর আসনের এমপি ফজলে হোসেন বাদশা, রাজশাহী-১ আসনের এমপি ওমর ফারুক চৌধূরী এমপি, রাজশাহী-৩ আসনের এমপি আয়েন উদ্দিন এমপি, রাজশাহী-৪ আসনের সাংসদ প্রকৌশলী এনামুল হক এমপি, রাজশাহী-৫ আসনের সাংসদ আবদুল ওয়াদুদ দারা এমপি, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ আক্তার জাহান এমপি ছাড়াও নগরীর শিক্ষাবিদ, বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ ও সুশিল সমাজের প্রতিনিধি ও রাসিকের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা উপস্থিত ছিলেন।

গত ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিএনপির মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে বিশাল ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে দ্বিতীয় দফায় মেয়র নির্বাচিত হন নগর আওয়ামী লীগ সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। এর আগে ২০০৮ সালে প্রথমবার নগরপিতা নির্বাচিত হন তিনি।

মেয়র হয়ে রাজশাহীকে গ্রিন, ক্লিন ও এডুকেশন সিটিতে পরিণত করেছিলেন মেয়র লিটন। ওই মেয়াদে রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, পদ্মাপারের সৌন্দর্য বৃদ্ধিসহ নানা ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করে রাজশাহীকে তিনি মডেল নগরীতে পরিণত করেন। কিন্তু ২০১৩ সালের নির্বাচনে বিএনপি নেতা বুলবুলের কাছে তিনি পরাজিত হন। ফলে স্থবির হয়ে পড়ে রাজশাহীর উন্নয়ন। এবারও লিটনের সামনে রয়েছে বড় চ্যালেঞ্জ। যার মধ্যে অন্যতম হল দেনার দায়ে প্রায় দেউলিয়া রাসিকের আর্থিক গতি ফিরিয়ে আনা। বর্তমানে রাসিকে দেনা রয়েছে ১০১ কোটি টাকা। গত পাঁচ বছরে এই বিশাল দেনায় দেউলিয়া করা হয় রাসিককে। তবে অতীতে মেয়র হিসেবে লিটন যে সফলতা ও দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন, এ মেয়াদেও সেই সফলতা ও দক্ষতার পরিচয় দেবেন বলে মনে করছেন নগরবাসী।

প্রশাসনিকভাবে অভিজ্ঞ ও ডাইনামিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনের কাছে নগরবাসীর প্রত্যাশা গগণচুম্বী। মেয়র লিটন নির্বাচনের আগে গ্যাস সংযোগের মাধ্যমে গার্মেন্ট শিল্প স্থাপন, অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠা এবং বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এছাড়া রেশম কারখানা ও টেক্সটাইল মিল পুরোদমে চালু, রাজশাহী জুটমিল সংস্কার, কৃষিভিত্তিক শিল্প স্থাপন এবং কুটিরশিল্পের সম্প্রসারণের মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। নগরবাসী আশা করছেন এক এক করে মেয়র লিটন তার প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়ন করবেন।

মেয়র লিটনের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছেন রাজশাহী নগরীর উন্নয়ন। নগরীর চারদিকে রিংরোড ও লেক নির্মাণ, নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোয় ফ্লাইওভার ও ওভারপাস নির্মাণ, পর্যটনবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপনের প্রতিশ্রুতি রয়েছে লিটনের। এছাড়া নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে খেলার মাঠ, স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং মাতৃসদন স্থাপনেও তার অঙ্গীকার রয়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষের বসবাসের জন্য বহুতল ফ্ল্যাট নির্মাণ করে সহজ কিস্তিতে মালিকানা দেয়ারও তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘রাজশাহীর উন্নয়নই আমার স্বপ্ন ও সাধনা। নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী কাজ শুরু করব। আশা করছি, সেবা ও মানে রাজশাহী সিটি করপোরেশন এশিয়ার সেরা জনসেবামূলক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। মেয়র লিটন বলেন, ‘বর্তমানে রাসিকে দেনা ১০১ কোটি টাকা। কিন্তু পাঁচ বছর আগে আমি ক্ষমতা ছাড়ার সময় ২১ কোটি টাকা উদ্বিত্ব রেখে এসেছিলাম। বিএনপির সাবেক মেয়র গত বছরে রাজশাহী নগরকে ১৫ বছর পিছিয়ে দিয়ে গেছে। আমি মেয়র থাকাকালে যে প্রকল্পগুলো হাতে নিয়েছিল সেগুলো বাস্তাবায়ন না করে নষ্ট করে দিয়েছে। এবার আমার রেখা আসা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করবো। যার মাধ্যমে রাজশাহী মডেল নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে এক ধাপ এগুবে।’

Tags: