muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

দেশের খবর

চৌহালীর যমুনা নদীতে প্রকাশ্যে মা ইলিশ নিধন

সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার যমুনা নদীতে যত্রতত্র মা ইলিশ ধরা হচ্ছে। মৎস্য অফিস থেকে অভিযান চালানো হলেও তা  অতোটা কার্যকরী কোনও প্রভাব ফেলতে পারছে না। অভিযানে নামার আগেই খবর চলে যাচ্ছে জেলেদের কাছে।

জাতীয় সম্পদ ইলিশ রক্ষায় প্রয়োজনে কোষ্ট গার্ড মোতায়েনের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এদিকে ইলিশ মাছ ধরার পর স্থানীয় হাট-বাজারে কিছুটা গোপনে বিক্রি হলেও নদী তীরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে প্রকাশ্যে ইলিশ বিক্রি করা হচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। এছাড়া চরাঞ্চলে বসানো হয়েছে ইলিশের অস্থায়ী হাট-বাজার।
উমারপুর, শৌলজানা, বাঘুটিয়া, মিনাদিয়া, বোয়ালকান্দি ও পাথরাইলের অন্তত ১৫ জন জেলের সাথে কথা হলে তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মৎস্য অফিসের অভিযানের খবর আগে থেকে তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য লোক আছে। জেলেদের প্রতিটি নৌকা থেকে ৫ হাজার টাকা থেকে ৮ হাজার টাকে  করে তুলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালীদের দিয়ে থানা পুলিশ ও মৎস্য অফিসকে ম্যানেজ করা হয়েছে। তাদের নিযুক্ত সোর্সের নিকট থেকে আমরা খবর পেয়ে সর্তক হয়ে যাই। এরপরও হাতে নাতে ধরা পরলে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তাৎক্ষনিক জাল ছাড়িয়ে নেয়া সম্ভব হয়। জব্দকৃত অনেক জাল টাকা দিয়েও ছাড়িয়ে নেয়া হয়েছে বলে জানান তারা।  ঘশুরিয়ার কয়েকজন জেলে জানায় আমরা এক রাতে থানায় ৩০০ টাকা দেই প্রতি নৌকা থেকে বড় কন অফিসার আসলে আমাদের ফোনে জানিয়ে দেয় আমরা নদী থেকে চলে যাই।  কিন্তু অভিযানে ইউএনও থাকলে আমাদের রক্ষা নাই। সে জাল পুড়িয়ে দেয়, মাছ জব্দ করে নিয়ে যায়।

তারা আরো জানান, যমুনার চরে ঘোরজান ইউনিয়নের কড়িতলায় ও বাঘুটিয়া র ভূতের মোড়ে বড়  অস্থায়ী ইলিশের হাট লাগানো হয়েছে। সেখানে প্রতিদিন ভোরে প্রায় এক লক্ষাধিক টাকার মাছ কেনা বেচা হয়। এছাড়া যমুনা তীরের মিটুয়ানী, দত্তকান্দি, দক্ষিন খাষকাউলিয়া (জনতা স্কুল সংলগ্ন), বিনানুই বাজার, আজিমুদ্দির মোড়, খগেন ঘাট ও চরছলিমাবাদ বাজারসহ অন্তত ৩০টি পয়েন্টে চলে বেচা বিক্রি। এজন্য আগে থেকে মোবাইল ফোনে দুরদুরান্তের ব্যাপারীদের সাথে যোগাযোগ করা হয়। তারা অটো ভ্যান যোগে টাঙ্গাইলের নাগরপুর হয়ে ট্রাক যোগে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া শৌখিন ও চাকুরিজীবি অনেক পরিবারের লোকজন মোটর সাইকেল নিয়ে এসে তাদের আত্নীয় স্বজনের বাড়িতে স্বল্প মূল্যের ইলিশ কিনে পাঠাচ্ছে। দুইশত  থেকে চারশ টাকা পর্যন্ত চলছে প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি। এ সুযোগে সু-স্বাদু ইলিশ অনেকেই ফ্রিজে ও বরফ মিলে নিয়ে মজুদ করে রাখছে বলেও জানান তারা।

সোমবার  দুপুরে   এক ব্রাকের  মাঠকর্মী জানান, কিস্তি আদায় করতে চরাঞ্চলের প্রায় প্রতিটি মহল্লায় গিয়ে ইলিশ বিক্রি করতে দেখা যায়। প্রশাসনের করা নজর দারি থাকলে জেলেদের পক্ষে যমুনা নদীতে ইলিশ শিকারতো দুরের কথা নৌকা নামানোর সাহস পেত না। কিন্তু তাদের অবহেলায় ও হীন স্বার্থে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে দেশের জাতীয় সম্পদ ইলিশ অভিযানে গিয়ে কয়েকটি নৌকার লোক ধরে জেল জরিমানা করছেন আর যারা  আগেই টাকা দিয়ে রাখছে তাদের কিছুই বলছে না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ০৭অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত  নদীতে ইলিশ শিকার, মজুদ, পরিবহন ও বেচা-কেনায় সরকারিভাবে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও চৌহালী অঞ্চলের জেলেরা যমুনা নদীতে মা ইলিশ শিকার অব্যাহত রেখেছে। উপজেলা সদরের হোটেল গুলোতে অবাধে চলছে ইলিশ মাছ বিক্রি। স্থানীয়রা জাতীয় সম্পদ ইলিশ রক্ষায় প্রশাসন ও মৎস্য অফিসের নজর দারি বৃদ্ধির দাবি এবং প্রয়োজনে কোষ্ট গার্ড মোতায়েনের জোড় দাবি জানিয়েছেন।

Tags: