muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

প্রচ্ছদ

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যেসব দাবি নিয়ে গণভবনে যাবে

সংসদ বাতিল ও সরকারকে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ নির্বাচন দেওয়াসহ যে সাত দফা দাবিতে আন্দোলন করছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, সেসব দাবি নিয়েই গণভবনে যাবেন জোটটির নেতারা।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মতিঝিলে ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে জোটটির শীর্ষ নেতাদের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, ওই দিন জোটের পক্ষ থেকে যে ধরনের বক্তব্য তুলে ধরা হবে, সে বিষয়ে লিখিত একটি বক্তব্য প্রস্তুত করা হয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছাতে প্রয়োজনে কিছুটা ছাড় দিতেও প্রস্তুত জোটটি। তবে সবকিছুই নির্ভর করবে আলোচনার গতি-প্রকৃতির ওপর।

জাতীয় ঐক্যফ্যন্টের পক্ষ থেকে যেসব দাবিগুলো তুলে ধরা হবে সেগুলো হচ্ছে- অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বাতিল, আলোচনা করে নিরপেক্ষ সরকার গঠন, খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ও নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার নিশ্চয়তা দেওয়া; বাক, ব্যক্তি, সংবাদপত্র, টেলিভিশন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সব রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা; কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন, সামাজিক গণমাধ্যমে মতপ্রকাশের অভিযোগে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি; ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করা, নির্বাচনের ১০ দিন আগে থেকে নির্বাচনের পর সরকার গঠন পর্যন্ত বিচারিক ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োগ ও নিয়ন্ত্রণের পূর্ণ ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া, নির্বাচনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা নিশ্চিত ও সম্পূর্ণ নির্বাচন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণে তাদের ওপর কোনো ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ না করা, গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ না করা, তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত চলমান সব রাজনৈতিক মামলা স্থগিত রাখা এবং নতুন কোনো মামলা না দেওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়া।

বৈঠকের পর গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, ‘জাতি আশা করে, এই সংলাপের মাধ্যমে আগামী দিনে একটা সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে। কোনো সংলাপ ব্যর্থ হয় নাই। এই সংলাপে ৭ দফাসহ সবকিছু নিয়ে আলোচনা হবে।’

‘আমরা মনে করি, দেশে ক্রান্তিলগ্নে যে স্ট্যাগনেন্ট অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, কথা বলব কি বলব না… আজকে প্রধানমন্ত্রীর এই সংলাপের মধ্য দিয়ে দরজা খোলা হলো, আলাপ-আলোচনা হচ্ছে, হবে এবং চলবে’, বলেন আ স ম আবদুর রব।

আগামী একাদশতম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করতে চায়, জানিয়ে আ স ম আবদুর রব বলেন, ‘নির্বাচন হতে পারে, সব দল যেন অংশগ্রহণ করতে পারে, ভোটাররা যেন সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারে এসব বিষয়ে নিয়ে আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করব। একই সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা দাবি নিয়েও আলোচনা করব। ’

প্রধানমন্ত্রীর চিঠিতে সংবিধানসম্মত বিষয়ে আলোচনার কথা বলা হয়েছে, জানিয়ে জেএসডির সভাপতি বলেন, ‘সংবিধানের জন্য জনগণ নাকি জনগণের জন্য সংবিধান? দেশের জন্য জনগণ নাকি জনগণের জন্য দেশ? সুতরাং জনগণ, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে সব বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে কথা বলতে হবে।’

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারাদণ্ডের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে আবদুর রব বলেন, ‘আমরা মনে করি, তার (খালেদা জিয়া) এই মামলা রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ২, ৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ করতে পারেন, এটা মানুষ বিশ্বাস করে না। আমরা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’

জোট নেতাদের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ।

Tags: