muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

জাতীয়

মধ্য নভেম্বরে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু

মিয়ানমার থেকে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি নাগাদ শুরু হবে।

মঙ্গলবার ঢাকায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে।

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত ‘জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ’ এর সভা শেষে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক বলেন, ‘নভেম্বরের মাঝামাঝি নাগাদ প্রত্যাবাসন শুরুর ব্যাপারে আমরা কাজ করছি।’

পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের তৃতীয় বৈঠকে যৌথভাবে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক এবং মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব মিন্ট থোয়ে।

সভা শেষে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মো. শহীদুল হক বলেন, ‘ফেরত পাঠানো সব সময়ই একটি জটিল ও কঠিন প্রক্রিয়া। কিন্তু রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে একটি ফলপ্রসূ সমাধান সম্ভব। আজ আমরা অনুধাবন করতে পেরেছি যে, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য আমাদের উভয় পক্ষেই দৃঢ় রাজনৈতিক সদিচ্ছা রয়েছে।’

তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুসারে, শান্তিপূর্ণ উপায়ে সংলাপের মাধ্যমে তারা এই সংকটের একটি সমাধান খোঁজার চেষ্টা করছেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে একটি বড় সাফল্য অর্জন করেছি (রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে)।

মিয়ানমারের স্থায়ী পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থোয়ে বলেন, ‘প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে আমরা খুবই বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি। আমরা সম্ভাব্য স্বল্পতম সময়ের মধ্যে প্রত্যাবাসন সম্পন্ন করার লক্ষ্যে আমাদের রাজনৈতিক সদিচ্ছা, নমনীয়তা ও সমঝোতার মনোভাব প্রদর্শন করেছি।’

মিয়ানমারের এই কর্মকর্তা জানান, প্রত্যবাসন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তাদের সরকার অনেকগুলো স্থানীয় নির্দেশনা জারি এবং রাখাইন প্রদেশে শৃঙ্খলা বজায় রাখার লক্ষ্যে পুলিশ সদস্যসহ স্থানীয় জনগোষ্ঠিকে সম্পৃক্ত করে গৃহিত ‘জননীতি’কে উৎসাহিত করা হয়েছে।

তিনি জানান, ফেরত যাওয়া ব্যক্তিরা (রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠি) যাতে তাদের প্রত্যাবর্তনের পরিবেশকে নিরাপদ রাখে তা নিশ্চিত করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

মিন্ট থোয়ে বলেন, মিয়ানমার সরকার রাখাইন প্রদেশে ন্যায়বিচারপ্রাপ্তির মৌলিক নীতিমালা সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করছে, যাতে রোহিঙ্গারা তাদের জীবন-জীবিকাকে বিপন্ন করে, এমন যেকোনো ইস্যুতে অভিযোগ জানাতে পারে।

তিনি আরো বলেন, ‘নিরাপত্তার বিধানে সরকারি কর্মকর্তা তথা পুলিশ সদস্যদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে আমরা অনেকগুলো কর্মশালা পরিচালনা করেছি, যাতে তারা উত্তর রাখাইন প্রদেশে জনগণের মধ্যে বৈষম্য না করে।’

পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক বলেন, কক্সবাজারে অবস্থানরত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠিকে নিরাপদে মিয়ানমারে ফিরে যেতে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের উভয় পক্ষের সদস্যরা বুধবার রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো পরিদর্শন করবেন।

তবে কোনো কর্মকর্তাই আগামী মাসে শুরু হতে যাওয়া প্রত্যাবাসনের প্রথম পর্যায়ে ঠিক কত সংখ্যক রোহিঙ্গা নিজ দেশে ফেরত যাবেন তা নির্দিষ্ট করে বলেননি।

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ (জেডব্লিউজি) গঠন করে।

Tags: