বিবাদমান পক্ষগুলোর মধ্যে সমঝোতা হলেই কেবল উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচি যাচাই করা হবে বলে জানিয়েছে ‘আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা’। একইসঙ্গে, এক্ষেত্রে তাদের সবধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলেও জানান সংস্থাটির উপ-মহাপরিচালক মাসিমো আপারাও। সোমবার দক্ষিণ কোরিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাং জেয়ং সিকের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি। কোরীয় সঙ্কট সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে রাশিয়া আগ্রহী বলে জানিয়েছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ।
সোমবার উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাং জেয়ং সিকের সঙ্গে বৈঠক করেন আন্তর্জাতিক পরমাণুশক্তি সংস্থার উপ-মহাপরিচালক মাসিমো আপারাও। বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচি যাচাইয়ে আন্তর্জাতিক পরমাণু সংস্থার সক্ষমতার পাশাপাশি পরমাণু নিরন্ত্রীকরণ প্রস্তুতির সবশেষ তথ্য তুলে ধরে হয়।
মাসিমো আপরাও, উপ-মহাপরিচালক, আইএইএ বলেন, উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচি পর্যবেক্ষণে সক্ষমতা অর্জনে গেল বছর থেকে কাজ করছি আমরা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পরমাণু কর্মসূচি পর্যক্ষেণের অভিজ্ঞতার আলোকে এ মুহূর্তে পিয়ংইয়ংয়ের পরমাণু কর্মসূচি যাচাইয়ে আমরা সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত আছি। রাজনৈতিকভাবে সংশ্লিষ্ট সবপক্ষের মধ্যে চুক্তি সম্পাদিত হলেই কেবল আমরা আমাদের কাজ শুরু করতে পারি।
কাং জেয়ং সিক, উপ-মহাপরিচালক, দক্ষিণ কোরিয়া বলেন, উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করার বিষয়ে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ জটিল একটি প্রক্রিয়া। আন্তর্জাতিক পরমাণুশক্তি সংস্থাসহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞ দলের সঙ্গে এ বিষয়ে আমরা আলোচনা করছি।
এদিকে, আন্তঃকোরীয় সম্মেলনের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দুই কোরিয়ার মধ্যে ট্রেন যোগাযোগ প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে পিয়ংইয়ং ও সিউল। যৌথ ট্রেন চলাচল প্রকল্প বাস্তবায়নে সম্প্রতি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদও উত্তর কোরিয়ার উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেছে। চলতি সপ্তাহ থেকেই প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া।
বাইক তায়ে হুয়ান (পুনরেকত্রীকরণমন্ত্রী, দক্ষিণ কোরিয়া) বলেন, উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে যুগান্তকারী সম্মেলন অনুষ্ঠানের ঘোষণা অনুযায়ী আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তারই অংশ আন্তঃকোরীয় রেল প্রকল্প। উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে, নিজেদের প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া, উত্তর কোরিয়ার সঙ্কটসহ বিশ্বের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে যৌথভাবে অবদান রাখতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। রুশ গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাতকারে, স্বল্প মেয়াদে রাজনৈতিক ফায়দার চিন্তা বাদ দিয়ে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করার আহ্বান জানান।
সের্গেই ল্যাভরভ রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রভাবকে ভালো কিছু করার জন্য ব্যবহার করা পারি। বহু অমীংসিত বিষয় রয়েছে। যেগুলোর কারণে দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বব্যাপী উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় সমাধানের জন্য আমাদের যৌথভাবে পদক্ষেপ নেয়া উচিৎ।
উত্তর কোরিয়ার সম্পর্ক উন্নয়নে আবারও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে ইন। সোমবার টুইটার বার্তায় তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।