muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

দেশের খবর

বরগুনায় বিদ্যুৎ সংকট দুর করতে নির্মিত হচ্ছে ৩০৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র

দক্ষিণবঙ্গের বিদ্যুৎ সংকট মোকাবেলায় বরগুনায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৩০৭ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ কাজ চলছে। ২০২২ সালের শুরুতেই এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি উৎপাদনে যাবে। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য কেন্দ্রটির উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান আইসোটেক ইলেকট্রিফিকেশন কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে চলতি বছর ১২ এপ্রিল বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

ইতিমধ্যেই এ প্রকল্পের ভূমি উন্নয়নের কাজ শেষ পর্যায়ে। প্রকল্পটি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে চীনের পাওয়ার চায়না রিসোর্স লিমিটেড ও বাংলাদেশের আইসোটেক গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান আইসোটেক ইলেট্রিফিকেশন কোম্পানি লিমিটেড। বরগুনার তালতলী উপজেলার ছোট নিশানবাড়িয়া গ্রামটিই এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কেন্দ্রস্থল। প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা বা ৫৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ২৫ বছর এ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে।

কিন্তু একটি মহল অসৎ উদ্দেশে নিশানবাড়ীয়া শুভ সন্ধ্যা বীচের পাশ্ববর্তী পায়রা নদীর মোহনা থেকে থেকে বালু ডেজিং করে প্রকল্পর জমি ভরাট কাজের বিরোধীতায় নেমেছে। তারা প্রচার করছে ডেজিং এর কারনে শুভ সন্ধ্যা বীচ ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে যাবে। এ বিষয় আইসোটেক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মঈনুল আলম জানান ,“ জেলা প্রশাসন. পানি উন্নয়ন বোর্ড , বিশেষজ্ঞসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে পরামর্শ করে শুভ সন্দ্যা সি বিচে পার্শ্ববর্তী পায়রা নদীর মোহনা থেকে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়েছেন, বীচের এক কিলোমিটারের মধ্যে বালি উত্তোলন করা যাবেনা। আমরা নিরাপত্তার স্বার্থে ন্যুনতম এক দশমিক ২ কিলোমিটার দুরবর্তী এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করছি। ফলে শুভ সন্ধ্যা সি বিচের কোনো ক্ষতি হবার সম্ভাবনা নাই। তার পরও আমরা বিষয়টি নজরদারীর মধ্যে রেখেছি । যাতে করে শুভ সন্ধ্যা বীচ এলাকার কোন প্রকার ক্ষতি না হয়। নিয়মের ব্যত্যয় ঘটানোর আমাদের কোনো সুযোগ নেই।”

এ ব্যাপারে তালতলী সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ এম এ জব্বার জানান, জননেত্রী শেখ হাসিনা এই অ লের উন্নয়নের বিষয়ে যেসকল প্রকল্প হাতে নিয়েছেন, তার মধ্যে তাপ বিদ্যূত উৎপাদন কেন্দ্র অন্যতম প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে তালতলীসহ উপকূলীয় এলাকার উন্নয়নের শহরে পরিনত হবে । জীবন যাত্রার মান হবে অনেকটাই চোখে পড়ার মত।

আইসোটেক ইলেট্রিফিকেশন কোম্পানি লিমিটেড এর মিডিয়া এ্যাডভাইজার ফিরোজ চৌধুরী জানান ,‘ওই এলাকায় শুধু বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট নয়, সেখানে কর্মরতদের ও স্থানীয়দের জন্য ৫০ শয্যার হাসপাতাল হবে। স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা ও মন্দির করা হবে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে সাড়ে তিন হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। তিনি আরো জানান, বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্র সংলগ্ন পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমিতে ১২০ টি ভূমিহীন পরিবার রয়েছে তাদের পুর্নবাসনের জন্য আইসোটেক গ্রুপ ব্যবস্থা নিয়েছে ।

আইসোটেক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মঈনুল আলম বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণ এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য বিদ্যুৎ একটি প্রধান উপাদান। পরিবেশের যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সেদিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। বৈদেশিক অর্থায়নে নির্মিত হওয়ায় নিয়মনীতির ব্যত্যয় ঘটানোর সুযোগ নেই। প্রকল্পটি বাংলাদেশ সরকারের অগ্রাধিকারভিত্তিক প্রকল্পের অংশ হিসেবে নির্মিত হচ্ছে। পাওয়ার চায়না রিসোর্স লিমিটেড কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান। তারা অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়াসহ বিশ্বের বেশ কিছু দেশে দক্ষতার সঙ্গে কয়লা দিয়ে ৩০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে।

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মশিউর রহমান বলেন , বিদ্যুত কেন্দ্র এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের যে জমি আছে কিছু আইসোটেক ইলেট্রিফিকেশন কোম্পানি লিমিটেড কে লিজ দেয়া হয়েছে আর প্রকল্পের মধ্যে যে জমি পরেছে তাও লিজ দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এবং উক্ত প্রকল্পের মধ্যে যারা অবৈধ ভাবে পাউবোর জমি দখল করে আছে তাদের কে জমি ছেড়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

বরগুনা জেলা প্রশাসক কবির মাহমুদ বলেন , দেশের দক্ষিনাঞ্চলের সাগরতীরবর্তী এলাকায় এ রকম একটি বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে এ কেন্দ্রটি উৎপাদনে গেলে দেশের বিদ্যুত সংকট দুর করতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। এ কেন্দ্রটি নির্মানে তিনি সকলের সহযোগিতা করা উচিৎ বলে জানান।

বরগুনা- ১ আসনের সাংসদ এ্যাডঃ ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বলেন, তালতলীতে আইসোটে গ্রুপ ৩০৭ মেগোয়াট বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্র নির্মান করছেন। এটি দক্ষিনা লসহ দেশের উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। এটি বাস্তবয়ন হলে এ অঞ্চলে আর্থসামাজিক অবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটবে। বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মান বর্তমান সরকারের উন্নয়নের একটি অংশ। কেন্দ্রটি বাস্তবায়নে প্রশসানের পক্ষ থেকে সকল প্রকার সহযোগিতা করা হচ্ছে। আমি মনে করি দলমত নির্বিশেষে সকলের এ প্রকল্প বাস্তবায়নে সহযোগিতা করা উচিৎ।

Tags: