muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

দেশের খবর

বগুড়ায় সাংবাদিকদের ওপর হামলা

মাদক নিরাময় কেন্দ্র নিয়ে অনুসন্ধানী রিপোর্ট করতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন যমুনা টেলিভিশনের ইনভেস্টিগেশন ৩৬০ ডিগ্রি টিমের সদস্যরা। মারপিট করতে করতে সাংবাদিকদের একটি ঘরে আটকে রাখা হয়। মারপিটের একপর্যায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে ধারণ করা কিছু ভিডিওচিত্র ক্যামেরা থেকে মুছে ফেলতেও বাধ্য করে। পরে ক্যামেরা, ভিডিও টেপ ও মাইক্রোফোনসহ অন্যান্য ডিভাইস ছিনিয়ে নেয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় যমুনা টিভির স্টাফ রিপোর্টার এসএম জিয়া এবং ক্যামেরা পারসন তানভির মিজানকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। আহতদের বগুড়ার সরকারী মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের অবস্থা আশংকাজনক। তবে ভিডিও টেপ দুটি উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১৭ জানুয়ারী) দুপুরে বগুড়া শহরে কলোনী স্টাফ কোয়ার্টার এলাকায় রিয়েল লাইফ মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের অনিয়মের ছবি ভিডিও করার সময় এ ঘটনা ঘটে। এঘটনায় বগুড়া সদর থানায় ৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৮-১০জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন হামলার শিকার যমুনা টিভির স্টাফ রিপোর্টার এসএম জিয়া।

এতথ্য নিশ্চিত করে সদর থানার ওসি এমএম বদিউজ্জামান জানান, অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন বগুড়া শহরে দক্ষিণ ঠনঠনিয়ার মৃত বদিউজ্জামানের ছেলে রিয়েল লাইফ মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের পরিচালক নুর মোহাম্মদ (৩৮), প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী শহরের নাটাইপাড়ার মৃত রামচন্দ্র দাসের ছেলে পলাশ কুমার দাস (৩৩) ও অপর কর্মচারী শহরে লতিফপুর কলোনীর আশরাফ আলীর ছেলে আরজু (২৮)।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানান, মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে গোপনে মাদকের ব্যবসা চলে। মাদক সেবীদের কাছে সহজেই মাদক বিক্রয় করে আসছিল। এদের সাথে প্রভাবশালী সিন্ডিকেট থাকায় ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করে না। মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষকে মাদকে আসক্ত করা হয়, চলে মাদক সেবন’-এমন তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ে যমুনা টেলিভিশনের ইনভেস্টিগেশনের একটি অনুসন্ধানি দল সেখানে যায়। ভেতরে ঢুকে তথ্যের সত্যতাও ধরা পড়ে যমুনার ক্যামেরায়।

আহত সাংবাদিক এসএম জিয়া জানান, তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে মাদক নিরাময় কেন্দ্র নিয়ে অনুসন্ধানী রিপোর্ট করছিলেন। এর ধারাবাহিকতায় টিম নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে বগুড়া শহরের কলোনী এলাকায় রিয়েল লাইফ মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে আসেন। পরিচয় পাবার পর প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের ভেতরে ঢুকতে দেন। কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে নিরাময় কেন্দ্রের অনিয়মের ছবি ভিডিও করার সময় হঠাৎ তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে পরিচালক নুর মোহাম্মদের নেতৃত্বে ৮-১০জন তাদের ওপর চড়াও হয়। মারপিট করতে করতে তাদের একটি ঘরে আটকে রাখা হয়। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ তাদের উদ্ধার করে।

যমুনা টিভির বগুড়া ব্যুরো মেহেরুল সুজন মুঠোফোনে জানান, আহত দুই সাংবাদিকের অবস্থা আশংকাজনক। মারপিটের সময় অস্ত্র ঠেকিয়ে ধারণ করা কিছু ভিডিওচিত্র ক্যামেরা থেকে মুছে ফেলতেও বাধ্য করে। পরে ক্যামেরা, ভিডিও টেপ ও মাইক্রোফোনসহ অন্যানৗ ডিভাইস ছিনিয়ে নিয়েছে।

এপ্রসঙ্গে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী জানান, এঘটনায় সদর থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। সাংবাদিকদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়া ভিডিও টেপ উদ্ধার ও বাকী আসামীদের গ্রেফতার করতে শহরজুড়ে অভিযান চলছে।

Tags: