muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

দেশের খবর

সৈয়দ আশরাফের কন্যা রিমাকে লন্ডন থেকে দেশে ফেরার আহ্বান


মুনজের আহমদ চৌধুরী : আওয়ামী লীগের প্রয়াত সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ও এক সময়ের যুক্তরাজ্য প্রবাসী কমিউনিটি নেতা সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম স্মরণে লন্ডনে নাগরিক স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (২১ শে জানুয়ারি) পূর্ব লন্ডনের ব্রাডি আর্টস সেন্টারে আলতাব আলী ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সৈয়দ আশরাফ স্মরণসভায় সৈয়দ আশরাফের একমাত্র কন্যা রিমাসহ প্রয়াত এ নেতার একসময়ের সহযোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সৈয়দ আশরাফের শূন্যস্থান পূরণে স্থায়ীভাবে বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার জন্য সদ্য প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মেয়ে সৈয়দা রিমা ইসলামের প্রতি আহ্বান জানান ব্রিটেনে বাংলাদেশের হাই কমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম।

আলতাব আলী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান নুরউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আনসার আহমেদ উল্লার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত এই নাগরিক স্মরণ সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন হাউস অব লর্ডসের বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সদস্য পলা মনজিলা উদ্দিন, টাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাহী মেয়র জন বিগস, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান শরীফ, লন্ডনের কমিউনিটি আন্দোলনে সৈয়দ আশরাফের ঘনিষ্ঠ সহযোদ্ধা, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের সাবেক ডেপুটি লিডার রাজন উদ্দিন জালাল, গ্রেটার লন্ডন অ্যাসেম্বলির সদস্য কাউন্সিলার উমেশ দেশাই, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের সাবেক লিডার হেলাল আব্বাস, সৈয়দ আশরাফের ভাই সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম, মেয়ে রিমা ইসলাম, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিষ্ট রাজু নাথন, লয়েড ঘি, আজাদ বখত চৌধুরী, রুহুল আমীন, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ নেতা নঈমুদ্দিন রিয়াজ, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক জামাল খান, বঙ্গবন্ধু স্কুলের শিক্ষক আয়েলা উইলসন, রোজি ওয়াকার প্রমুখ।

ব্যাংককে রাষ্ট্রদূত থাকাকালীন বিভিন্ন সময় সৈয়দ আশরাফের সান্নিধ্যে আসার স্মৃতিচারণ করে বক্তৃতায় আবেগ প্রবণ হয়ে পড়েন হাই কমিশনার। তিনি বলেন, বর্তমান সময়ের প্রচলিত রাজনৈতিক ডামাডোলে সৈয়দ আশরাফ ছিলেন এমন একজন ব্যতিক্রমী রাজনীতিক, যিনি যা বিশ্বাস করতেন তা বলতেন অকপটে। রাজনীতি মানে মানুষের সেবা, আত্মসেবা নয়, নিজের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সেটিই প্রমাণ করে গেছেন তিনি।  
সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম যে স্থানে বসবাস করতেন টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের প্রতি সেই সড়কের নাম সৈয়দ আশরাফের নামে নামকরণের দাবি জানিয়ে হাই কমিশনার বলেন, লেবার পার্টির এক সময়ের সক্রিয় অ্যাক্টিভিস্ট সৈয়দ আশরাফের মৃত্যুতে পার্টি আনুষ্ঠানিকভাবে একটি শোক প্রস্তাব গ্রহণ করবে এমন প্রত্যাশা টাওয়ার হ্যামলেটসের বাসিন্দাসহ  সকলের।

স্মরণসভায় সৈয়দ আশরাফকে একজন প্রকৃত মানব প্রেমিক রাজনীতিক হিসেবে আখ্যায়িত করে ব্যারোনেস পলা মনজিলা উদ্দিন বলেন, একটি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হিসেবে মানুষের প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতার কথা কখনও ভুলতে পারতেন না আশরাফ। আর তাই শুধু কোনও একটি ভূখণ্ড নয়, মানব জাতির সুবিধা বঞ্চিত অংশের পক্ষেই তাঁর কণ্ঠ সব সময় উচ্চকিত ছিল প্রতিটি ফোরামে। ব্যারোনেস উদ্দিন সৈয়দ আশরাফের পাশাপাশি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন আশরাফ পত্নি শিলা ইসলামের কথাও। বলেন, মানবপ্রেমিক এই দম্পতি টাওয়ার হ্যামলেটসের কমিউনিটি ইতিহাসের এক স্বর্ণালী অংশ হয়েই থাকবেন, এটি আমার বিশ্বাস।

টাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাহী মেয়র জন বিগস বলেন, সমাজে সাম্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আশরাফ ছিলেন সামনের কাতারের একজন যোদ্ধা। তাঁর এই যুদ্ধ নির্দিষ্ট কোনও ভূখণ্ডে সীমাবদ্ধ ছিল না, লন্ডনে বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনে তিনি যেমন ছিলেন তাঁর কমিউনিটির পাশে, ঠিক নিজের জন্ম মাটি বাংলাদেশের সুবিধা বঞ্চিত মানুষের পাশেও ছিল তাঁর সরব উপস্থিতি। মেয়র বলেন, এত সাদামাটা, জৌলুসহীন ও আত্মপ্রচার বিমুখ জীবন ছিল তাঁর যে, কমিউনিটি আন্দোলনে তাঁর সহযোদ্ধা হওয়ার পরও ১৯৯৪ সালের আগ পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্মলগ্ন ও রাজনীতিতে সৈয়দ আশরাফের গৌরবোজ্জ্বল পারিবারিক অবস্থান আমি জানতাম না।

টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের সাবেক ডেপুটি লিডার রাজন উদ্দিন জালাল বলেন, বর্তমান ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাউস অফ কমন্সে প্রতিনিধি হিসেবে রয়েছেন তিন বাঙালি নারী। এই যাত্রা শুরু হয়েছিল সেই বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের পথ ধরেই। আর এই যাত্রায় আশরাফ ভাই আমাদের অন্যতম সংগঠক ও নেতা ছিলেন। অনেক বাঙালি কাউন্সিলার তৈরি করতেও তিনি প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখেন। সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন।

Tags: