muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

দেশের খবর

ডিমলায় সীমান্তে চোরাচালানী চক্রের দৌরাত্ব বাড়ছে, আটক ১

নীলফামারীর ডিমলা সীমান্ত এলাকায় চোরাচালান চক্রের দৌরাত্ব বাড়ছে। অবৈধভাবে গরু ও মাদক পাচারে তারা যেন দিন দিন সক্রিয় হয়ে উঠছে। ঘটছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীদের গুলি বর্ষন। এতে নিহত হচ্ছে চক্রের সদস্য। এতে করে বাড়ছে সীমান্তে উত্তেজনা। তবে ধরা ছোয়ার বাহিরে থাকছে সিন্ডিকেটের মূল হোতারা। ইতোমধ্যে ওই সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে একজন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া শুক্রবার গভীর রাতে বিজিবির টহলদল একজনকে আটক করেছে।

জানা যায় শুক্রবার গভীর রাতে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা কালীগঞ্জ সীমান্তে চোরাচালান সিন্ডিকেটের একটি দল অবৈধভাবে ওপারে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করলে টহলরত ৫১ বিজিবির কালিগঞ্জ ক্যাম্পের জোয়ানদের ধাওয়ায় একজন আটক হলেও পালিয়ে যায় ২২/২৫ জন। এ ঘটনায় শনিবার সকালে কালীগঞ্জ বিজিবি সীমান্ত ক্যাম্পের হাবিলদার মজনু মিয়া বাদী হয়ে ডিমলা থানায় ২৩ জনকের বিরুদ্ধে ভারতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের চেষ্টায় মামলা দায়ের করেছে। সেই সঙ্গে বিজিবির হাতে আটক পশ্চিম ছাতনাই কালিগঞ্জ গ্রামের মোহম্মদ আলীর ছেলে আমজাদ হোসেনকে (৫০) পুলিশের হাতে তুলে দেয় এবং তার বিরুদ্ধে ডিমলা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যাহার মামলা নং-০১, তারিখ ০২/০২/১৯। গ্রেফতারকৃতকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে প্রেরন করা হয়।

ডিমলা থানার ওসি মফিজ উদ্দিন শেখ জানায়, এ বছরের ১৬ জানুয়ারী ডিমলা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীর গুলিতে একজন নিহত হবার পর বিজিবি ও পুলিশ সীমান্ত এলাকায় নজরদারি সহ কড়া পাহাড়ায় রয়েছে। তিনি বলেন সীমান্তে চোরাকারবারিদের কোনভাবে ছাড় দেয়া হবে না।

এলাকাবাসীর অভিযোগ নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ঠাকুরগঞ্জ ও লালমনিরহাট সীমান্তে চোরাচালানি সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে রয়েছে বেশ কিছু প্রভাবশালী। ওপার হতে রাতের আধারে তারা গোপন পথ তৈরী করে চোরাইগরু ও ফেন্সিডিলের চালান নিয়ে আসে। এ কাজে ওই প্রভাবশালীদের হুমকীর মুখে বাধ্য হয়ে ঝুঁকি কাজে জড়িয়ে পড়ছে নিরিহ কিছু মানুষজন। এলাকাবাসীর অভিযোগ সীমান্ত রক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রতিদিন রাতে কোন না কোন ভাবে ওপার হতে গভীর রাতে পার করে আনা হচ্ছে গরু ও ফেন্সিডিল। এমন কাজ করতে গিয়ে উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নের পশ্চিম ছাতনাই গ্রামের খালপাড়া গ্রামের মকছেদ আলীর ছেলে খলিল-উর রহমান খলিল (৩২) এ বছরের গত ১৬ জানুয়ারী ভোরে বিএসএফের গুলিতে প্রাণ হারায়। এ ঘটনায় ভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে পালিয়ে আসে আরো ১৫ জন। নিহত খলিলের স্ত্রী শেফালী বেগম, অষ্টম শ্রেনী পড়–য়া ছেলে শাহিন (১২) ও তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্রী আইভি (১০) নামের মেয়ে রয়েছে। প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের খপ্পরে পড়ে শেফালী তার স্বামীকে চিরদিনের জন্য হারিয়েছে বলে অভিযোগ উঠে।

সুত্র মতে পুলিশ সপ্তাহ ঘিরে বুধবার সন্ধ্যায় ঠাকুরগঞ্জ বাজারে ডিমলা থানা ওসি মফিজ উদ্দিন শেখ একটি সমাবেশ করে। ওই সমাবেশে তিনি চোরাচালান মাদক ব্যবসায়ীদের বেশ কিছু নাম উল্লেখ করে বক্তব্য রাখেন। পাশাপাশি ওই সিন্ডিকেটের হোতা ও সদস্যদের আটকে এলাকাবাসীর সহযোগীতায় কামনা করেন।

অভিযোগ উঠেছে ঠাকুরগঞ্জ ও বালাপাড়া সীমান্তে চোরকারবারীদের নেতৃত্ব দেন ময়েজউদ্দিন। এ সীমান্তে তাইজুল ইসলাম, মোজাম্মেল, মন্ডল, ফরিদুল ইসলাম, খায়রুল ইসলাম, শফিকুল, আনোয়র, মজিদুল আবুল কালাম, তফিরুল লোকমান দীর্ঘদিন থেকে সীমান্তে গরু ও মাদক নিয়ে আসছে। প্রতিটি গরুতে ময়েজউদ্দিনকে খরচ বাবদ ৮ হাজার ১শ টাকা প্রদান করতে হয় মর্মে একাধিক গরু চোরাকারবারী অভিযোগ করেন। ময়েজউদ্দিন স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাসহ বিভিন্ন দপ্তরে এ টাকার ভাগবাটোয়ারার অভিযোগও পাওয়া যায়।

ময়েজউদ্দিন বলেন, স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করার লক্ষে তিনি কাজ করে থাকনে। তবে কত টাকা নেয় বিষয়টি বলতে রাজী হয়নি।

Tags: