বরগুনার তালতলী নিশান বাড়ীয়া বন্যা নিয়ন্ত্রন বাধের তীরে ঘরতুলে বসবাস করছিল ৯৭টি। পরিবার তারা এখন নিজস্ব জমিতে ঘর তুলে স্থায়ী ভাবে বসবাস করার সুযোগ পেয়ে আনন্দিত।বাঁধের পাশে ঘর
তুলে বসবাস করা তাদের ছিল প্রতিনিয়ত জলোস্বাস ও দুর্যোগের সাথে লড়াই করে বেচে থাকা। পরিবারগুলো অসহায় ভাবে জীবন যাপন করতো। এখন তাদের সেই দু:স্বপ্ন দুর হয়ে গেছে। তাদের পরিবার পরিজনদের মাঝে বইছে আনন্দ ও খুশির মহোৎসব।
বরগুনার তালতলী উপজেলার নিশানবাড়ীয়ায় এলাকায় আইসোটেকের নির্মানাধীন ৩০৭ মেগাওয়াট বিদ্যুত কেন্দ্র এলাকায় বসবাসকারীদের সাথে কথা বললে তারা এ রকমই জানান। তালতলী নিশাণবাড়ীয়া সলগ্ন পায়রা নদীর মোহনায় বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মানের যায়গায় ব্যক্তিমালিকানাধীন স্থায়ী কোনো ঘর চিল না। নির্মানাধীন বিদ্যুত কেন্দ্রের কাছেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়ি বাধেঁর পাশেই ঘর
তুলে বসবাস করতো ৯৭ পরিবার।
তাদের কারোইছিলনা জমির কোনো মালিকানা। তাদের ই একজন জামাল বলেন আমাগো ওয়াপদা অফিস যায়গা ছেড়ে দেওয়ার নোটিশ দিয়েছে। মোগো তো এমনিতেই চইল্যা যাইতে হতো তারপরেও বিদ্যুত কেন্দ্র স্যারেরা মোগো দেড় লাখ কইর্যা টাহা দেছে। হেই টাকা দিয়া জমি কিন্যা এহন মোরা ঘর বানাই ছি। এহন আর মোগো ডর ও ভয় নাই। মোদের কেউ আর চিন্তায় থাকবেনা যে নোটিশ পাইছো। সরেজমিনে দেখা যায় বিদ্যুত কেন্দ্র এলাকা থেকে চলে যাওয়া ভূমিহীনদের ৬০ জন একত্রে মিলে ৪০ বিঘা জমি ক্রয় করে তাদের বসবার জন্য বিদ্যুত কেন্দ্রের পূর্বদিকে একটি গ্রাম গড়ে তুলেছেন। নাম দিয়েছেন নতুন গ্রাম।
আরো ৪০ জন একত্রে মিলে নতুন গ্রামের পাশেই আরেকটি গ্রাম করার কাজ শুরু করেছেন। তবে এখনও কয়েকটি পরিবার রয়ে গেছে। ঘরে থেকেই দরাদরি করে যাচ্ছে। তারা চান তাদের টাকার পরিমাণটা একটু বাড়িয়ে আদায় করতে। আবার আরেক শ্রেণি রয়েছে যারা তাদের উসকানি দিয়ে যাচ্ছে। এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা।
বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মানকারী প্রতিষ্ঠান আইসোটেক গ্রুপের মিডিয়া এ্যাডভাইজার ফিরোজ চৌধুরী জানান, আমরা সম্পূর্ণ মানবিক কারণে কোম্পানির পক্ষ থেকে তাদের পুর্নবাসনের উদ্যোগনেই। তাদের জন্য বাড়ি করে দেওয়া প্রস্তাব দেওয়া হয়। তখন ভূমিহীন এই জেলে পরিবারগুলো ঘরের পরিবর্তে টাকা দেওয়ার প্রস্তাব করে। যাতে তারা নিজের সুবিধামতো জায়গায় বসতি গড়তে পারে। তাদের সঙ্গে
আলোচনার ভিত্তিতে টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু অন্যান্য জায়গার মতো একটি মহল এখানেও রাতারাতি কিছু ঘর তুলে বসেন ক্ষতিপূরণ পাওয়ার আশায়।প্রথম সার্ভেতে দেখা যায় সেখানে ৯৭ পরিবার ছিলো। গত ডিসেম্বরে এসে দেখা যায় ১৩৯ পরিবার। জেলা প্রশাসকের সহায়তায় টাকা দিতে গিয়ে দেখা যায় আরেক ঘটনা। একই ঘরের মধ্যে বাবা ও ছেলেরা আলাদা বাড়ির টাকা দাবি করে বসেছেন। একটি ঘরের জন্য তিন জনকে টাকা দিতে হয়েছে বলে ও জানান প্রতিষ্ঠানটির
নির্বাহী পরিচালক শরীফ হোসেন।
শরীফ হোসেন বলেন, আমরা চাই না কোনো লোক কষ্ট পাক। তাদের কাগজ আছে না নাই সেটাআমাদের কাছে বড় বিষয় না। আমাদের কাছে বড় বিষয় তাদের মানবিকতা। আমরা আশা করছি খুব শিগগিরই
বাকিরা টাকা নিয়ে চলে যাবেন। আমাদের এখান থেকে যারা চলে গেছে তাদের বাড়ি যাতায়াতের রাস্তাও আমরা করে দিয়েছি। বরিশাল পাওয়ার কোম্পানি একটি মানবিক কোম্পানি হিসেবে মানুষের মনে ঠাঁই করে নিতে চায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন গ্রাম বাসী জানান, একটি প্রভাবশালী মহল বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মান প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে অবৈধ সুবিদা না পেয়ে বিভিন্ন ভাবে বিদ্যুত কেন্দ্রের কাজে বিঘœ ঘটাবার চেষ্টা করছেন। এলাকাবাসী দ্রুতগতিতে বিদ্যুক কেন্দ্র টি নির্মানে জন্য প্রশাসনেরসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
আইসোটেক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মঈনুল আলম বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণ এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য বিদ্যুৎ একটি প্রধান উপাদান। তিনি আরো জানান দ্রুত গতিতে বিদ্যুত কেন্দ্রে কাজ এগিয়ে চলছে।