muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

আন্তর্জাতিক

মর্যাদাহানির ভয়ে নিহত সেনাদের সংখ্যা প্রকাশ করে না মিয়ানমার : আরাকান আর্মি

মিয়ানমারের রাখাইনের স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে সশস্ত্র লড়াইরত বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি উপ-প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নিয়ো তুন অং বলেছেন, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে তাদের সঙ্গে যুদ্ধে কয়েকশ সরকারি সেনা নিহত হয়েছে। কিন্তু কর্মকর্তাদের মনোবল ভেঙে পড়া ঠেকাতে সংঘর্ষে প্রকৃত নিহতের সংখ্যা কখনোই প্রকাশ করে না মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। রাখাইনের স্থানীয় আরাকানিদের উদ্দেশ করে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় তিনি এই দাবি করেছেন।

ভিডিও বার্তায় বিদ্রোহী গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, চলমান যুদ্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অনেক সেনা নিহত হয়েছে। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে কয়েকশ সরকারি সেনা নিহত হয়েছে।  

ভিডিও বার্তা আরাকান আর্মির উপ-প্রধান বলেছেন, তাদের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী (তাতমাদাও) শত শত সেনা সদস্য হারিয়েছে। বাহিনীর কর্মকর্তাদের মনোবল ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় তারা হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা প্রকাশ করে না। আরাকান আর্মির সঙ্গে যুদ্ধে সেনাবাহিনী ব্যাপকভাবে পরাজিত হয়েছে। যুদ্ধে ব্যর্থ হয়ে এখন তারা আরাকানের বেসামরিক নাগরিকদের ওপর চড়াও হচ্ছে।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশঙ্কা প্রকাশ করে জানান, মিয়ানমার সেনাবাহিনী দমন-পীড়ন বাড়িয়ে দেবে। তারা রাখাইনে সেনাবল বৃদ্ধি করেছে। ফলে সংঘাত উত্তর রাখাইন পেরিয়ে আরও বেশি এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়বে। তবে মিয়ানমার সেনাবাহিনী আরাকানিদের ক্ষতি করলে আরাকান আর্মি ‘চোখের দলে চোখ’ নীতি অনুসরণ করবে।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ নতুন ঘটনা নয়। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সন্ত্রাসবিরোধী শুদ্ধি অভিযানের নামে শুরু হয় নিধনযজ্ঞ। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হতে থাকে ধারাবাহিকভাবে। এমন বাস্তবতায় নিধনযজ্ঞের বলি হয়ে রাখাইন ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয় প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা। আগে থেকে উপস্থিত রোহিঙ্গাদের নিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় দশ লাখে। এসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশের বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরে বসবাস করছে।

উত্তর রাখাইনে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী একাধিক পদক্ষেপ নেওয়ার পর আরাকান আর্মির এই বক্তব্য প্রচার করা হলো। সম্প্রতি কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি) মনোনীত রাখাইনের মুখ্যমন্ত্রী সেনাবাহিনীকে সাতটি এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশির অনুমতি দিয়েছেন যাতে করে আরাকান আর্মির সদস্যদের গ্রেফতার করা যায়।

আরাকান আর্মির উপ-প্রধান বলেন, সরকারি সেনা ও পুলিশ সদস্যরা কোনও পূর্ব নোটিশ ছাড়াই জোরপূর্বক মধ্যরাতে সন্দেহভাজনদের বাড়িঘরে তল্লাশি চালাচ্ছে। ভিডিও বার্তায় কিয়াউকতাউ এলাকায় একটি গ্রামে ৪০ সেনা ও পুলিশ সদস্যের একটি অভিযানের কথা উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।

ভবিষ্যতেও আরাকান আর্মির পক্ষ থেকে সাধারণ নাগরিকদের প্রতি বার্তা পাঠানো হবে উল্লেখ করে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নি তুন অং বলেছেন, আরাকানিদের মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অপপ্রচারমূলক বার্তার বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। সেনাবাহিনী ষড়যন্ত্র করে বিভ্রান্তিকর অনেক গুজব ছড়ায়।

Tags: