muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

জাতীয়

‘নির্বাচনী সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্পূর্ণ এখতিয়ার ইসিকে দেওয়া হোক’

দেশে নির্বাচন কখন হবে কিভাবে হবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্পুর্ণ এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) হাতে দেওয়ার জন্য অভিমত দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।

তিনি বলেছেন, নির্বাচনকে অর্থবহ করার জন্য ও গণতন্ত্রকে অবারিত করার স্বার্থে নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার প্রয়োজন। তবে নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার নির্বাচন কমিশনের কাজ নয়, রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়। স্থানীয় নির্বাচন কি পদ্ধতিতে কতখানি উন্মুক্ত হবে সেটা বর্তমান সরকার ঠিক করে দেয়। ভবিষ্যতে অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য বিশ্বাসযোগ্য আইনানুগ ও উন্মুক্ত নির্বাচন হলে এবং সকল প্রার্থীর সমান সুযোগ নিশ্চিত হলে সকল দল তাতে অংশগ্রহণ করবে বলে আশা করা যায়। নির্বাচন ব্যবস্থার পদ্ধতি পরিবর্তন করে নির্বাচন কখন হবে কিভাবে হবে এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের কাছে হলে ভোটার উপস্থিতির জন্য আর হা-হুতাশ করতে হবে না। বিষয়টি ভেবে দেখা প্রয়োজন।

সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে তার নিজ কার্জালয়ে লিখিত বক্তব্যে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘বিগত কয়েকদিন যাবত কয়েকজন সাংবাদিক জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন সম্পর্কে আমার কাছে প্রশ্ন রেখেছেন। জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আমার নতুন কোন কিছু বলার নেই। একাদশ জাতীয় নির্বাচন কেমন হয়েছে, প্রতিটি বিবেকবান মানুষের কাছে এ প্রশ্নের উত্তর আছে। জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে যাদের স্বার্থ জড়িত তারা কখনো এর সঠিক উত্তর দিতে পারবেন না বা দেবেন না। জাতীয় নির্বাচন রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতার বদল নয়, এতে গণতন্ত্র কতটা সমুন্নত হলো তাও বিবেচনাযোগ্য।’

তিনি বলেন, ‘এবারের উপজেলা নির্বাচনকে আমি অপরূপ নির্বাচন বলতে চাই। এর মাথাটা নির্বাচিত হচ্ছে দলীয় প্রতীকে এবং দেহটুকু নির্বাচিত হচ্ছে নির্দলীয়ভাবে। এই নির্বাচনের স্বরূপটি তাহলে কেমন দাঁড়ায়? অন্যদিকে এই নির্বাচনে অধিকাংশ বিরোধী রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করেনি। এজন্য উপজেলা নির্বাচনের জৌলুস নেই। একতরফা নির্বাচনের কারণে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার বিষয়ে আগ্রহী নয়। এহেন নির্বাচনবিমুখতা গণতন্ত্রবিমুখতায় পর্যবসিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ অবস্থা গণতন্ত্রের জন্য অশনি সংকেত।’

মাহবু্ব তালুকদার বলেন, ‘আজকাল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত কথাটা বেশ চালু হয়েছে। আমি এর অর্থ বুঝি না। আমার মতে নির্বাচন মানেই হচ্ছে একাধিক এর মধ্যে বাছাই। তাই যা প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয় তা নির্বাচন হয় কি করে। ইংরেজিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীনদের ইলেকটেড না বলে সিলেক্টেড বলা যেতে পারে কী? এবারের উপজেলা নির্বাচনের চারটি ধাপে শতাধিক ব্যক্তি চেয়ারম্যান পদে আসীন হয়েছেন। পরবর্তী সময়ে আরো ৫০ জন সম্ভবত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পদে আসীন হবেন। প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীনভাবে জনপ্রতিনিধির পদে আসীন হওয়ার রেওয়াজ গণতন্ত্রের জন্য সুসংবাদ নয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘কিছুদিন পূর্বে একজন মাননীয় সংসদ সদস্য- যিনি প্রাক্তন একজন মন্ত্রী, সংসদে বলেছেন, ‘নির্বাচনকে যথাযথ মর্যাদায় ফিরিয়ে আনতে হবে।’ তার ভাষ্যমতে প্রশ্ন থেকে যায় এই নির্বাচন মর্যাদা হারালো কবে? জাতীয় নির্বাচনের সময় না উপজেলা নির্বাচনের সময়? এ জন্য কে বা কারা দায়ী তা সুনির্দিষ্টভাবে বলেননি। তবে তার এই বোধোদয় নিশ্চয়ই নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুপ্রাণিত করবে। মর্যাদাহীন নির্বাচন করে কেউ খুশি হতে পারে না।’

Tags: