muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

রাজনীতি

সরকার কি খালেদা জিয়াকে হত্যা করতে চায় : মির্জা ফখরুল

সরকার কি খালেদা জিয়াকে হত্যা করতে চায় কিনা সেই প্রশ্ন রেখেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে এমনটাই মনে হয়েছে। কিন্তু এটা বিশ্বাস করতে চাই না। তারা কি খালেদা জিয়াকে এইভাবে বিনা চিকিৎসায় কারাগারের মধ্যে মেরে ফেলতে চায়? তাকে কি তারা হত্যা করতে চায়? এতো দুর্বলতা কেন? নিজের প্রতি আস্থার অভাব কিসের জন্য? কারণ তারা নির্বাচনের আগের রাতে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। তাদের সঙ্গে জনগণের কোনও সম্পর্ক নেই। এই কারণে খালেদা জিয়াকে বিনা চিকিৎসায় ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।’ 

শুক্রবার (২৪ মে) দুপুরে গুলশান বিএনপির চেয়ারপারসেন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল দাবি করেন, ‘খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থা এতোই খারাপ হয়েছে যে তিনি এখন বিছানা থেকে উঠতে পারছেন না। কারও সাহায্য ছাড়া বাথরুমেও যেতে পারছেন না। জনগণের জানা উচিত তাদের নেত্রী কেমন আছেন।’

খালেদা জিয়া রাজনীতিতে উড়ে এসে জুড়ে বসেননি দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তিনি রাজপথে সংগ্রাম করেছেন। স্বৈরাচার সরকারের সঙ্গে আপস করেন নাই। এই কারণে ৯১ সালে জনগণই তাকে ক্ষমতায় এনেছে। বর্তমানে দেশে যেসব জাতীয় নেতা রয়েছেন তাদের মধ্যে খালেদা জিয়া সব থেকে বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছেন।’

খালেদা জিয়া অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসে ভুগছেন উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘তিনি ইনসুলিন নেওয়ার পরও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসছে না। এখনও তার সুগার ১৫-১৬ থাকে। কারাবন্দি একজন নেত্রীর অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের পরিণত কী হতে পারে তা আমরা সবাই জানি। খালেদা জিয়ার দুই কাঁধে ব্যাথা বেড়েছে।  তিনি পা সোজা করে রাখলে বাঁকা করতে পারছেন না। তার মাসলগুলো অকেজো হয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় আমরা বারবার বলেছি তাকে উন্নত চিকিৎসা দিতে। কিন্তু সরকার কোনও কর্ণপাত করছে না।’

খালেদা জিয়াকে যেসব মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে তা জামিনযোগ্য উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তিনি জামিন পেতে পারেন এবং সবাই পেয়েছেন। তার ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম কেন? তার আইনগত যে প্রাপ্য, সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তা বিলম্ব করছে এবং আদালতের ওপর হস্তক্ষেপ করছে, যেটা সাংবিধানের লঙ্ঘন। খালেদা জিয়ার চিকিৎসার সব খরচ বিএনপি বহন করতে রাজি আছে। কিন্তু এরপরও সরকারের পক্ষে থেকে কোনও উদ্যোগ নিতে দেখছি না।’

খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে আপডেট জানানো সরকারের দায়িত্ব বলে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া সরকারের দায়িত্বে রয়েছেন। আত্মীয় স্বজনদের দেখা করতেও দেওয়া হচ্ছে না। আমরা আগে ২-১ বার দেখা করেছি। এখন আর দেখা করতে দিচ্ছে না। তাকে মুক্তি দিতে হবেই। তিনি মুক্তি পেলেই সুচিকিৎসা করা সম্ভব। খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের কিছু হলে সরকারকেই দায়দায়িত্ব বহন করতে হবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপির সংসদে যাওয়ার সঙ্গে খালেদা জিয়ার মুক্তির কোনও সম্পর্ক ছিল না। রাজনৈতিক পরিস্থিতি, গণতন্ত্র ও দলের স্বার্থে সংসদে গিয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা উচ্চ আদালতের কাছে প্রত্যাশা করি খালেদা জিয়ার জামিন হবে। কালও তার জামিন নিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে। দুটি মামলায় সঙ্গে সঙ্গে তার জামিন হওয়ার কথা। কিন্তু অ্যাটর্নি জেনারেল বললেন তিনি অসুস্থ, আবার বললেন তিনি অন্য কাজে ব্যস্ত আছেন। সরকারকে বলবো, রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করেন। প্রতিপক্ষকে জেলে আটকে রেখে রাজনীতি করছেন কেন। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করেন, তারপর রাজনীতি করেন।’

সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ।

Tags: