muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

জাতীয়

সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় অত্যাধুনিক গাড়ি পাচ্ছে পুলিশ

সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় বাংলাদেশ পুলিশের সক্ষমতা বাড়াতে কেনা হচ্ছে অত্যাধুনিক গাড়ি। ১০টি আর্মার্ড পারসোনেল ক্যারিয়ার (এপিসি), ২০টি এসকর্ট ভেহিকেল এবং পাঁচটি ফ্লাড লাইট ভেহিকেলসহ মোট ৩৫টি গাড়ি কেনা হবে।

জানা গেছে, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঠেকাতে গোয়েন্দা তথ্য থাকা সত্ত্বেও রাতে অভিযান পরিচালনা করতে অসুবিধা হতো পুলিশের। এজন্য অপেক্ষা করতে হতো দিনের আলো ফোটা পর্যন্ত। এ সমস্যা সমাধানের জন্যই ফ্লাড লাইট ভেহিকেল কেনা হচ্ছে। এতে পুলিশের সক্ষমতা বাড়ার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ও সেবার মানও বৃদ্ধি পাবে।

সম্প্রতি একনেকে পাস হয়েছে ‘সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা ও জননিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক প্রকল্প। এ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৭৯ কোটি ৬৬ লাখ ১৮ হাজার টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার ব্যয় করবে ৪০ কোটি ৮ লাখ টাকা এবং জাপান সরকার অনুদান দেবে ৩৯ কোটি ৫৮ লাখ ১৮ হাজার টাকা। প্রকল্পের কাজ শুরু হবে ২০১৯ সালে জুলাইয়ে। শেষ হবে ২০২১ সালে জুনে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের উদ্যোগে বাংলাদেশ পুলিশ এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

প্রকল্পের উদ্দেশ্য:

আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা ও জননিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশ পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য। বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম মোকাবিলা এবং মামলা তদন্ত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।

পটভূমি ও প্রকল্প গ্রহণের যৌক্তিকতায় বলা হয়েছে, সরকার সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে। সীমিত জনবল এবং যন্ত্রপাতি নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশ বিগত কয়েক বছরে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রায় প্রতিটি অভিযানে সফলতা অর্জন করেছে, যা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে প্রসংশিত হয়েছে।

পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ মুসলিম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ তার মধ্যপন্থী ইসলামিক সংস্কৃতির জন্য বিশ্বব্যাপী সুনাম অর্জন করেছে। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ লালনের পাশাপাশি সহনশীলতা এবং বহুত্ববাদ হচ্ছে বাংলাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট, যা এ অঞ্চলের জন্য একটি মডেল। কিন্তু সম্প্রতি কিছু আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী কারণে বাংলাদেশ এ অর্জন হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। যা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। নিরাপত্তা, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর অর্থায়নের উৎস এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সদস্যদের অনুপ্রেরণা ইত্যাদি বিশ্লষণ করে দেখা যায় যে, বর্তমানে সন্ত্রাসের ধরন পরিবর্তন হয়েছে, যা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বিপজ্জনক।

বাংলাদেশ পুলিশ, বিশেষ করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সাম্প্রতিক  সময়ে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কিছু নাশকতার পরিকল্পনা নস্যাৎ করতে সক্ষম হয়েছে। এর ফলে জীবন ও সম্পদ রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে।

বর্তমানে রাজধানীতে প্রতিনিয়ত সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালিত হয়। প্রয়োজনীয় যানবাহন ও সরঞ্জামের অভাবে অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পুলিশকে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। আর্মার্ড পারসোনেল ক্যারিয়ার গাড়ির মতো সুজজ্জিত যানবাহনের অভাবে অনেক সময় সন্ত্রাসী কার্যক্রম দমনে অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হয় না। এছাড়া, নিকট অতীতে দেখা গেছে, সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য রাতের বেলা সংঘবদ্ধ হয়। কিন্তু ডিএমপির ফ্লাড লাইট ভেহিকেলের মতো বিশেষ ধরনের যানবাহন না থাকায় তথ্য থাকা সত্ত্বেও রাতের বেলা অভিযান পরিচালনা না করে দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। এর ফলে সন্ত্রাসীরা তাদের কার্যক্রম পরিচালনায় পর্যাপ্ত সময় পায়। সার্বিকভাবে প্রয়োজনের তুলনায় বাংলাদেশ পুলিশের যানবাহনের সংখ্যা অপ্রতুল। এজন্য যানবাহন সরবরাহের মাধ্যমে পুলিশের সক্ষমতা বৃ্দ্ধির লক্ষ্যে  প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে। 

জানা গেছে, গুলশানের হলি আর্টিজানে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার পর থেকেই এ দেশে যেসব প্রকল্পে বিদেশিরা কর্মরত, বিশেষ করে জাইকার প্রকল্পগুলোর সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে সরকার।

সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার ও জননিরাপত্তা নিশ্চতকল্পে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকল্প নিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন,  ‘একনেকে প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের দেশে বিদেশিরা যেসব জায়গায় কাজ করে তাদের নিরাপত্তার দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।’

প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম:

১০টি আর্মার্ড পারসোনেল ক্যারিয়ার, ২০টি এসকর্ট ভেহিকেল এবং পাঁচটি ফ্লাড লাইট ভেহিকেল কেনা  প্রকল্পের এলাকা ধরা হয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এসব গাড়ি ব্যবহার করবে, তাই প্রকল্প এলাকা হিসেবে ঢাকা উল্লেখ করা হয়েছে।

Tags: