বরগুনায় রিফাত হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি।
শুক্রবার (১৯ জুলাই) বিকাল ৩টার দিকে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মাদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর কাছে মিন্নি এই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন বলে জানান বরগুনা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডে মিন্নির সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় তাকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। রিমান্ডের দ্বিতীয় দিনে তিনি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকারে করে আদালতে জবানবন্দি দিতে চায়। আমি তাকে শুক্রবার বিকাল ৩টায় বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিয়ে আসি। সেখানে তিনি বিচারকের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।’ তবে স্বীকারোক্তিতে মিন্নি কী বলেছেন তা তিনি বলতে রাজি হননি।
১৬ জুলাই মিন্নিকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। এর আগে ১৩ জুলাই রিফাতের বাবা ও হত্যা মামলাটির বাদী আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বরগুনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেন, তার ছেলে হত্যার ঘটনায় পুত্রবধূ মিন্নিও জড়িত বলে সন্দেহ করছেন তিনি। সেদিন মিন্নি হত্যাকাণ্ডে জড়িত এমন সন্দেহের পেছনে ১০টি কারণও বলেন তিনি। এরপর তার সন্দেহের বিষয়টি আমলে নেয় পুলিশ।
রিফাত হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত মিন্নিসহ ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ২ জুলাই মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। এখন পর্যন্ত ১৩ আসামি আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রিফাত শরীফকে। তখন তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি হামলাকারীদের থামানোর চেষ্টা করেও সফল হননি। গুরুতর আহত রিফাতকে ওইদিন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৫ থেকে ৬ জনকে আসামি করে বরগুনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলার এজাহারে উল্লেখ থাকা ৭ আসামিসহ সন্দেহভাজন আরও ৭ জনকে পুলিশ এর আগে গ্রেফতার করে। এরমধ্যে মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়। বাকিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়ে বিভিন্ন মেয়াদে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।