muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

অর্থনীতি

ঋণের টাকা ফেরত না দিলে কেউ ছাড় পাবে না

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, যারা ব্যাংক থেকে অন্যায়ভাবে টাকা নিয়ে তা আর ফেরত দিচ্ছেন না তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

ঋণের অর্থ ফেরত না দেয়ায় আগে ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী দাবি করেন, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় চলতি বছরের জুন পর্যন্ত অধিকাংশ ব্যাংকের খেলাপি ঋণ কমে এসেছে।

সোমবার সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলো ঋণের সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে আনার সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছে। আশা করি বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোও সুদেও হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনবে।

বৈঠকে উপস্থাপিত খেলাপি ঋণের সর্বশেষ অবস্থার পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, সোনালী ব্যাংকের ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণের হার ছিল ৪১ দশমিক ২৩ শতাংশ। ২০১৯ সালে জুনে তা দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ৫ শতাংশে।

জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমান ছিল ১৮ দশমিক ২২ শতাংশ, ২০১৯ সালের জুনে তা দাঁড়িয়েছে ৩৫ শতাংশে। অগ্রণী ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমান ছিল ১৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ, তা গত জুনে দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৫০ শতাংশে। রূপালি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমান ছিল ২২ দশমিক ৯৪ শতাংশ, ২০১৯ সালের জুনে তা দাঁড়িয়েছে ১৭ দশমিক ৭ শতাংশে।

বেসিক ব্যাংকের ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণের পরিমান ছিল ৫৫ দশমিক ২০ শতাংশ, ২০১৯ সালের জুনে তা দাঁড়িয়েছে ৫৮ দশমিক ২৫ শতাংশে। বিডিবিএল’র ২০১৭ সালে খেলাপি ঋণের পরিমান ছিল ৫৭ দশমিক ১৯ শতাংশ, ২০১৯ সালের মার্চ পর্যন্ত ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের পরিমান দাঁড়িয়েছে ৫৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

বিশেষায়িত বিকেবি’র ২০১৭ সালে খেলাপি ঋণের পরিমান ছিল ২৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ, ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত তা দাঁড়িয়েছে ১৭ শতাংশে।

সরকারি ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমান বৃদ্ধি পায়নি বলে দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমি শপথ নেওয়ার প্রথম দিনই বলেছিলাম, আজ থেকে ব্যাংকিংখাতে খেলাপি ঋণ বাড়বে না। আপনারা(সাংবাদিকরা) লিখেছেন খেলাপি ঋণ বেড়েছে। কিন্তু আমার কাছে যে তথ্য আছে তাতে সরকারি ব্যাংকে খেলাপি ঋণ বাড়েনি, বরঞ্চ কমেছে।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘যারা ত্রুটি-বিচ্যুতি স্বীকার করে আমাদের কাছে আসবেন, তাদের বিষয়টি আমরা দেখবো। কিন্তু যারা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বিদেশে নিয়ে গেছেন বা বালিশের নিচে রেখেছেন, তাদের বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এরিমধ্যে তা শুরু হয়ে গেছে। তাদের অনেকে জেলে পর্যন্ত আছে। তাদের পরিবারও জেলে আছে। আমরা তাদের ছাড় দেব না।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ঋণ খেলাপিদের জন্য যে ‘এক্সিট প্ল্যান’ দেওয়া হয়েছে তা যদি পুরো বাস্তবায়িত হয়, তাহলে খেলাপি ঋণের পরিমার আরও অনেক কমে যাবে। সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে না নামিয়ে আনলে খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি পায়। এই সুদের কারণে কেউ ঋণ পরিশোধ করতে পারেননা। তিনি বলেন, সুদের হার যদি ৯ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়, তবুও তা অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি। কিন্তু এখন ১৪-১৫ শতাংশ সুদ দিয়ে কেউ ব্যবসা করতে পারবে না।

ব্যাংকিখাত জোরদার করার জন্য ব্যাংকের গ্রাহকদের সাথে সম্পর্ক ও যোগাযোগ বাড়ানো হবে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, খেলাপিদের ঋণ পরিশোধের সুযোগ-সুবিধা আমরা দেখবো, তবে টাকা পয়সা যা নিয়েছে তা তাদের ফিরিয়ে দিতে হবে। যারা আমাদের ব্যাংকিং সিস্টেম থেকে টাকা বাইরে নিয়ে গেছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা দেশের প্রচলিত নিয়ম ও আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

Tags: