muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

দেশের খবর

আসছে না ভারতীয় গরু, দেশিয় গরুর দাম চড়া

কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে এবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরু আসেনি।

তাই চাঁপাইনবাবগঞ্জের কোরবানির পশুর হাটগুলো এখন দেশিয় গরুর দখলে। ভারতীয় গরু না আসায় এবার গরুর দাম গতবারের চেয়ে বেশি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তের গরু আসার রুটগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শিবগঞ্জ উপজেলার মাসুদপুর সীমান্তের নদী পথ। প্রমত্তা পদ্মা নদীর এপার বাংলাদেশ, ওপার ভারত। এই নদী ধরে গরু আসার সহজ পথে এবার তেমন গরু আসেনি।

সূত্র জানিয়েছে, মাসুদপুর সীমান্তে গরু আসে নদীতে ভেসে। এপার ওপারের গরু ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় ভারতীয় গরু কলা গাছে বেধে পদ্মা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। সেই গরু ভেসে চলে আসে বাংলাদেশে। বেশ কিছু দিন আগে এই সীমান্ত দিয়ে নদী পথে বেশ কিছু গরু আসলেও ঈদের আগমূর্হুতে গরু আসা বন্ধ রয়েছে।

সীমান্তের গরুর ব্যবসায়ীরা জানালেন, ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও পুলিশের অতিরিক্ত নজরদারির কারণে গরু আসা বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলে সীমান্তের বিট খাটালগুলো এখন খা খা করছে আর গরু ব্যবসায়ীরা অলস সময় কাটছেন।

মাসুদপুর সীমান্তের বিট খাটালের গরু ব্যবসায়ী রহমত আলী বলেন, ‘যতদূর জানি ভারতীয় পুলিশ নদীকে ঘিরে রাখছে। তারা কোনো মুহূর্তে গরু পানিতে পড়তে দিচ্ছে না। শুনছি কথা বার্তা চলছে। নদীতে গরু পড়ার কথা আছে কিন্তু শেষ পর্যন্ত গরু আসবে কিনা বলতে পারছি না।’

মাসুদপুর সীমান্তে গরু কিনতে আসা ব্যবসায়ী চরবাগডাঙ্গার আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘গরু কিনতে এসেছিলাম রাজশাহীর সিটি হাটে বিক্রি করার জন্য। কিন্তু এখানে গরু আসছে না। কালকে এসেছি। যদি গরু আসে, এখান থেকে কিনে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করবো। এই আশা করে বসে আছি। কিন্তু গরু আসার লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি না’।

এদিকে সীমান্তে ভারতীয় গরু আসা বন্ধ থাকলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জের কোরবানি পশু হাটগুলোয় ব্যাপক পরিমাণ দেশি গরু নেমেছে। খামারে উৎপাদিত এবং বাড়িতে পোষা গরুই দখলে রেখেছে হাটগুলো।

গরু ব্যবসায়ী সফিকুল ইসলাম বলেন, প্রায় প্রত্যেক গৃহস্থের গরু রয়েছে। বলদ না থাকলেও আইড়্যার অভাব নাই। এবার আইড়্যার পরিমাণ বেশি।

ব্যবসায়ীরা জানান, ভারতীয় গরু না আসায় এবার এর প্রভাব পড়েছে দামে। গত বছরের চেয়ে একেকটি গরু এবার বিক্রি হচ্ছে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা বেশি দরে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রধান ১১ টি গরু হাটে এবার ৬০ থেকে ১ লাখ টাকা দামের গরু বেশি বিক্রি হচ্ছে। বড় গরু গুলো গত বছর যেখানে দাম ছিল ১ লাখ টাকা সেখানে এবছর বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ ২৫ হাজার থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা মূল্যে।

গরু খামারী ও ব্যবসায়ীরা জানান, ভারতীয় গরু না আসা এবং গোখাদ্য গুঁড়া, ভুসি খড়ের দাম বেশি হওয়ায় এবার গরুর দামও বেশি। দাম বেশি হওয়ায় এবছর খামারীরা ন্যায্যমূল্যে পাবেন, লাভেরও মুখ দেখবেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জে গত কোরবানির ঈদের গরু ছাগল জবেহ হয়েছিল ১ লাখ ৫৮ হাজার। এবার খামারগুলোতে প্রস্তুত আছে ১ লাখ ৬৭ হাজার গরু ছাগল। এর বাইরেও পারিবারিকভাবে পালন হওয়া প্রচুর গরু ছাগল থাকায় ভারতীয় গরুর প্রয়োজন নেই বলে মনে করছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আনন্দ কুমার অধিকারী।

তিনি বলেন, ‘দেশে যে গরু আছে তা দিয়েই হয়ে যাবে। বরং ১০ থেকে ২০ ভাগ গরু থেকে যাবে। কাজে ভারতীয় গরু আসার প্রয়োজন নেই। ভারতীয় গরু আসলে খামারীরা ক্ষতিগ্রস্থ হবে এবং আগামীতে গরু পালনে নিরুৎসাহিত হবেন’।

Tags: