muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

প্রচ্ছদ

জামায়াতের সাথে আইভীর কানেকশন রয়েছে : শামীম ওসমান

জামায়তের সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ সিটি মেয়র সেলিনা হায়াত আইভীর কানেকশন রয়েছে দাবি করে নারায়নগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, নারায়ণগঞ্জে একটা অডিও আপলোড হয়েছে। সেই অডিওতে জানা গেলো নারায়ণগঞ্জে নাশকতা চালাবে। তল্লার দিকে গোপন মিটিং করা হচ্ছিল। সেদিন জমায়েতের জেলা আমীর মাইনুদ্দিনসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।

শনিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ নাসিম ওসমান মেমোরিয়াল পার্কে ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা জানান।

তিনি বলেন, ওই অডিও থেকে জানলাম বুঝলাম কীভাবে জামায়াতের সাথে তারা আঁতাত করছিল। জামায়াতের আমির মাওলানা মাইনুদ্দীন আহমেদ রিমান্ডে পুলিশের কাছে নিজে স্বীকারোক্তি দিয়ে বলেছিলেন, মেয়র আইভী আমাদেরই লোক। তাই তাকে ভোট দিয়েছিলাম মেয়র হিসেবে। তিনি বলেছিলেন, শামীম ওসমান থাকলে আমরা সুবিধা করতে পারবো না। তাই আইভীকে দিয়েছিলাম। তিনি আরও বলেছিলেন, যুদ্ধাপরাধী মুজাহিদের ছেলেরা যখন কোথাও জন্ম নিববন্ধন পাচ্ছিলেন না, তখন এই তিনিই তাদের দিয়েছিলেন জন্মনিবন্ধন। এমন স্বীকারোক্তির অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, শুধু মেয়র আইভী নয়, তার প্রয়াত পিতা আলী আহম্মদ চুনকার সঙ্গে জামাতের কানেকশন ছিল দাবি ওই সম্মেলনে শামীম ওসমান একটি দলিল দেখিয়ে বলেন, ১৯৭৬ সালের ২১ অক্টোবর তারিখে এই দলিলটি করা হয়। এটা চুনকা সাহেব আদমজী এলাকায় বিশাল জমি লিখে জামাতের কাছে তুলে দিয়েছিলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর হত্যার রক্তের দাগও তখনও শুকায়নি।

এর আগে শামীম ওসমান মেয়র আইভীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনার নাম আমি মুখে আনতে চাই না। সামনে সময় আসছে, দেখা হবে।

২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভীর ওপর হামলা করে হত্যা চেষ্টার মামলা প্রসঙ্গ টেনে শামীম ওসমান বলেন, ওইদিন মেয়র আইভী বিএনপি জামাতের চিহ্নিত ক্যাডারদের নিয়ে যুবলীগ নেতা নিয়াজুল ইসলামের ওপর হামলা করে হত্যা চেষ্টা চালিয়েছিল।

একই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, ওইদিন বিএনপি জামাতের চিহ্নিত ক্যাডারও আইভীকে ঘিরে রেখেছিল।

তিনি বলেন, ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় নিয়াজুল ইসলামের ওপর হামলা করে হত্যা চেষ্টা করেছিল। তাহলে কি নিয়াজুলের মামলা হবে না? মামলায় আওয়ামীলীগের ৯ জন নেতা-কর্মীকে আসামি করায় তিনি বলেছেন- মামলা একটা নয়,  নয় জন নেতাকর্মী বাদী হয়ে মামলা করবেন।

শামীম ওসমান আরও বলেন, ওইদিন বিএনপি জামাতের চিহ্নিত ক্যাডারদের নিয়ে নিরীহ হকারদের মারধর করা হচ্ছিল। তখন নিয়াজুল নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় হকারদের মারধর করায় বলেছিল, মারছেন কেন? তখন তার ওপর তিন দফা হামলা করা হলো। যখন তাকে হত্যা চেষ্টা করা হলো তখন নিয়াজুল তার লাইসেন্স করা পিস্তল বের করেছিল আত্ম রক্ষার্থে। কিন্তু নিয়াজুল গুলি বর্ষণ করেনি। তার অস্ত্রটি ছিনতাই করে নেওয়া হলো।

মেয়র আইভীকে মোস্তাকের বংশধর হিসেবে আখ্যায়িত করে শামীম ওসমান বলেন, আপনি আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে মেয়র হলেন। যেসব নেতাকর্মীরা নিজের পকেটের টাকা খরচ করে দিন রাত পরিশ্রম করে আপনাকে মেয়র বানালো, আর আপনি তাদের নামেই মামলা করে দিলেন।

মামলায় শামীম ওসমানকে ইন্ধনদাতা হিসেবে অভিযুক্ত করায় ঘটনার দিন শামীম ওসমান নেতা-কর্মীদের শান্ত করতে গিয়েছিলেন দাবি করে বলেন, আমি নেতা-কর্মীদের থামাতে গিয়েছিলাম। নেতা-কর্মীদের শান্ত করতে গিয়েছিলাম। আমার কারণে নাকি হামলা হয়েছে অভিযোগ করা হলো। আমি তো ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে নেতা-কর্মীদের শান্ত করতে গিয়েছিলাম। ভাগ্যিস ওবায়দুল কাদেরকে হুকুমের আসামি করেননি।

শামীম ওসমান আরও বলেন, মেয়র কোন খেলায় নেমেছেন সেটা বুঝে গেছি। আপনি বিদেশকে বোঝাতে চান আওয়ামীলীগের মেয়রকে হত্যা চেষ্টা করা হলো, অথচ তার মামলা পুলিশ নিলো না, তার মামলার জন্য হাইকোর্টে যেতে হলো, তাহলে বেগম খালেদা জিয়া তো বিচার পাচ্ছে না, বিদেশকে এটা বোঝাতে চান। আপনিও বিশ্বাস করেন শেখ হাসিনার সরকারের পতন হয়ে যাচ্ছে, আল্লাহর রহমতে শেখ হাসিনার সরকারকে পতন ঘটানোর ক্ষমতা কারো নাই।

তিনি বলেন, খেলা যদি দ্রুত গতিতে চলে তাহলে আমরাও খেলায় নামব। তখন নারায়ণগঞ্জের মাটিতে আর মাটি দেখা যাবে না, শুধু মাথা আর মাথা দেখা যাবে। চুপ করেই ছিলাম। এখন আর চুপ থাকবো না।

ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফউল্লাহ বাদলের সভাপতিত্বে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই, প্রধান বক্তা হিসেবে ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি চন্দন শীল, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল আলী, জেলা কৃষক লীগের সভাপতি নাজিম উদ্দিন, ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা মনির, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াছিন মিয়া, বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ রশীদ, সাধারণ সম্পাদক কাজিম উদ্দিন প্রধান, শহর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সাজনু প্রমুখ।

Tags: