চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে জামাতার উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে স্ত্রী তানজিনা আক্তার রিতুর মৃত্যুর পর এবার শাশুড়ি পারভীন আক্তারও মারা গেছেন। গত বুধবার এই ঘটনা ঘটে।
ওই ঘটনায় তাৎক্ষণিক রিতুর মৃত্যু হলেও শাশুড়ি পারভীন দুইদিন পর আজ শুক্রবার ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজে নেওয়ার পথে মারা যান। ঘটনার পর আল মামুন মোহনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এদিকে খুনের ঘটনায় রিতুর স্বামী মোহনসহ তার ভাই এবং বোনকে আসামি করে নিহতের চাচা লিয়াকত খান বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পরে আল মামুন মোহনকে বৃহস্পতিবার বিকেলে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি শেষে আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আড়াই বছর আগে লক্ষীপুর জেলার রায়পুরের শায়েস্তানগর গ্রামের মনতাজ মাস্টারের ছেলে আল মামুন মোহনের সঙ্গে ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের গৃদকালিন্দিয়া গ্রামের সেলিম খানের মেয়ে তানজিনা আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর মোহন সৌদি আরবে গেলেও গত দেড় বছর আগে দেশে ফিরে আসে।
ঘটনার দিন গত বুধবার বিকেলে মোহন তার শ্বশুরবাড়িতে আসেন। কিন্তু ইফতারের আগে স্ত্রী তানজিনা আক্তার রিতুর সঙ্গে মোহনের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রিতুকে মোহন উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। এমন অবস্থায় মেয়ের চিৎকারে মা পারভীন আক্তার বাঁচাতে এগিয়ে আসলে মোহন তাকেও ছুরিকাঘাত করে মারাত্মক জখম করেন। এরপর আশপাশের লোকজন এসে আল মামুনকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
এদিকে রিতু ও তার মা পারভীন আক্তারকে ফরিদগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রিতুকে মৃত বলে জানায়। আর পারভীন আক্তারকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে এনে ভর্তি করায়। দুদিন চিকিৎসার পর আজ শুক্রবার ভোরে তিনিও মারা যান।
নিহত রিতুর মামী তাছলিমা বেগম জানায়, সৌদি আরব থেকে মোহন চলে আসার পর বেকার ছিল। তাই বিয়ের সময় রিতুকে দেওয়া স্বর্ণালঙ্কার সে বিক্রি করে ফেলে। তাই রিতু বাপের বাড়ি থেকেই পড়ালেখা করত। অপরদিকে স্ত্রী পরকিয়ায় আসক্ত বলে সন্দেহ করত মোহন। আর এ নিয়েই ঝগড়া হয়।
এ বিষয়ে ঘাতক মোহন জানায়, তার স্ত্রী পরকিয়ায় লিপ্ত। তার প্রবাস থেকে পাঠানো সব অর্থ তারা আত্মসাৎ করেছে। তাকে পাত্তা দিতো না। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সে ছুরিকাঘাত করেছে।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রকিব বলেন, ‘আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর মা-মেয়ের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’